শরীর ও মন

মানুষ কেন প্রেমে পড়ে?

বিবাদ কিংবা ভিত্তিহীন প্রচার থেকেও হতে পারে প্রেম

অনলাইন ডেস্ক

৩ ডিসেম্বর ২০১৮, সোমবার, ২:০৬ পূর্বাহ্ন

এক জন মানুষ অপর এক জনের প্রতি আকর্ষণ বোধ করেন। আকর্ষণ করবার নিয়ামক হিসেবে কাজ করে কথাবার্তা, গুণ, রুচি ও চরিত্রের দৃঢ়তা ইত্যাদি। এ যদি বন্ধুত্ব বা প্রেমের স্বাভাবিক রসায়ন ভাবেন, তবে আপনি ভুল ভাবছেন!

মানুষে-মানুষে আকর্ষণের নেপথ্যে কাজ করে এর বাইরে অনেক মনস্তাতিক কারণ। দেশ-বিদেশের নানা মনোবিদ ও ব্যবহার বিশেষজ্ঞদের মতে, হরমোনের নানা কারিকুরি, চার পাশের অবস্থান, পরিস্থিতি এ সবের ভূমিকা ওই রূপ-গুণ-রূচি-মতের মিলের চেয়েও বেশি।

দু’জনকে ঘিরে তৈরি হওয়া কোনও প্রত্যাশা বা ভিত্তিহীন কোনও প্রচারও ওই দুই মানুষের মনে এক অদ্ভুত প্রভাব ফেলে। দু’জন সহপাঠীকে নিয়ে তৈরি হওয়া কোনও গুজব তাঁদের সত্যিই কোনও সম্পর্কে বেঁধে দিয়েছে এমন নজির বিরল নয়। আবার তারকাদের ক্ষেত্রে সেরা জুটিরা রিয়েল লাইফেও প্রেমে পড়েন।
 
দু’জনকে নিয়ে ক্রমাগত চর্চার মানুষের হাইপোথ্যালামাসকে প্রভাবিত করে। প্রথম প্রথম উড়িয়ে দিলেও অবিরাম চর্চা চলতে থাকলে, তা নিয়ে উত্তেজিত হলে শরীরে যে হরমোনঘটিত আবেগ তৈরি হয়, তার মধ্যেই লুকিয়ে থাকে ভালবাসার বীজ! বিজ্ঞানীদের মতে, চর্চা ও তাঁদের জুটি নিয়ে মানুষের নানা মন্তব্য প্রভাবিত করে মানুষকে।

নৈকট্য বা কাছাকাছি অবস্থানকেও এই আকর্ষণের পিছনে কলকাঠি নাড়ার অন্যতম বিষয় হিসাবে ভাবছেন বিজ্ঞানীরা। কোনও পরিস্থিতিতে একই সঙ্গে থাকতে শুরু করা বা জীবনের একই পরিস্থিতির মোকাবিলা করাও একজনকে অন্যের প্রতি সহানুভূতিশীল করে তোলে। সুস্থ-স্বাভাবিক মনের মানুষের ক্ষেত্রে প্রেমে পড়ার অন্যতম কারণ এই সহানুভূতি।

ক্লেটন স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষকদের মতে, প্রেম বা সম্পর্কে এগোনোর ক্ষেত্রে শারীরিক চাহিদা ও মিলন অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। পরিস্থিতিগত কারণে দু’জন মানুষ যদি দু’জনের প্রতি সম্মান-সহ শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হন, তবে তা পিটুইটারি গ্রন্থিকে উদ্দীপ্ত করে মানসিক আকর্ষণেরও জন্ম দেয়। জৈবিক যে সব কারণে কোনও মানুষের প্রতি আকর্ষণ তীব্র হতে পারে, তার অন্যতম চেহারা। সাধারণত, রূপের চেয়েও শরীরের গঠন, উচ্চতা, পেশীবহুল চেহারা এ সব মানুষের হাইপোথ্যালামাসে ভাল লাগার বার্তা পৌঁছয়। তখনই ডোপামিন হরমোন মস্তিষ্কে প্রেমের বার্তা পৌঁছয়।

কোনও মানুষের সঙ্গে তীব্র বিবাদ বা লাগাতার ছোটখাটো বিষয়ে সমস্যা লেগেই থাকে? সাবধান! এখান থেকেও প্রেমে পড়া অস্বাভাবিক নয় মোটেই। বরং এই সব খিটিমিটি উল্টে কখনও ডোপামিনকে উত্তেজিত করে। তাই ঝগড়ার মানুষটার প্রতিও কোথাও মায়া কাজ করে কোনও কোনও মানুষের মনে। বহু সিনেমাও এমন গল্পের সাক্ষী। প্রেমে পড়ার বেশির ভাগ কাজটাই হরমোনের খেলা। তাঁদের মতে, আধুনিক জীবনযাত্রা, কর্মব্যস্ত সময়ে মানুষ খুব সংঘাতে যেতে রাজি নন। তাই অনেক সময় মতান্তরে ডোপামিন ক্ষরণ হয় না। বরং মতামতে মিলে এমন মানুষকেই সে বেছে নিতে চায়।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status