এক্সক্লুসিভ

নি র্বা চ নী হা ল চা ল রাজশাহী ৫

আসতে পারে চমক

আসলাম-উদ-দৌলা, রাজশাহী থেকে

১৭ নভেম্বর ২০১৮, শনিবার, ৮:২১ পূর্বাহ্ন

রাজশাহী-৫ আসন পুঠিয়া ও দুর্গাপুর দুটি উপজেলা নিয়ে গঠিত। রাজশাহীর ছয়টি আসনের মধ্যে এ আসনটিতে আওয়ামী লীগের শক্ত অবস্থান। বিশেষ করে দুর্গাপুরে আওয়ামী লীগের আধিক্য নৌকা প্রতীকের বিজয়ের জন্য অনুকূল। তবে, বিএনপির সাবেক কেন্দ্রীয় বিশেষ সম্পাদক ও সাবেক জেলা সভাপতি অ্যাডভোকেট নাদিম মোস্তফার একচেটিয়া দাপটের কারণে সুবিধা করতে পারে না আওয়ামী লীগ। বর্তমানে গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে ছিটকে পড়ায় তার বিরুদ্ধে বিএনপির একাধিক প্রার্থী মাঠে নেমেছেন। চ্যালেঞ্জের মুখে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য কাজী আব্দুল ওয়াদুদ দারাও। অভ্যন্তরীণ কোন্দল মেটাতে বাইরে থেকে প্রার্থী দিতে পারে আওয়ামী লীগ।

বর্তমানে রাজশাহী-৫ আসনের সংসদ সদস্য পুঠিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী আব্দুল ওয়াদুদ দারা। স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে আসনটি বিভিন্ন দলের দখলে এসেছে। ১৯৯১ সালে আসনটিতে আওয়ামী লীগের এমপি ছিল। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের এমপি তাজুল ইসলাম ফারুককে পরাজিত করে দখলে নেন বিএনপি নেতা নাদিম মোস্তফা। ২০০১ সালের নির্বাচনেও অবস্থান বজায় থাকে। ২০০৮ সালে তার পরিবর্তে বিএনপির মনোনয়ন পান পুঠিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক নজরুল ইসলাম মণ্ডল। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী কাজী আব্দুল ওয়াদুদ দারার কাছে বিএনপি প্রার্থী পরাজিত হন। ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিনা ভোটে আবারো সংসদ সদস্য হন ওয়াদুদ দারা। তবে, দুই মেয়াদে সংসদ সদস্য থেকে সুবিধাজনক অবস্থানের বিপরীতে নেতাকর্মীদের সঙ্গে বৈরী সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। তাই আসন্ন সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে দলের কোন্দল প্রকট আকার ধারণ করেছে। যে কারণে একাদশ সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নের জন্য মাঠে নেমেছেন আধা ডজন নেতা।

মনোনয়ন প্রত্যাশীদের অনেকেই সংসদ সদস্য আব্দুল ওয়াদুদ দারার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে এলাকায় প্রচার করছেন। মনোনয়ন প্রত্যাশীদের অভিযোগের বিপরীতে সংসদ সদস্য দারা সমর্থকদের দাবি, ‘এমপি দারার উন্নয়নমূলক নানা কর্মকাণ্ড এবং তৃণমূলে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতার কারণে ঈর্ষান্বিত হয়ে তার বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। এলাকায় সাধারণ মানুষ এখনো তাকে চায়। তার কোনো বিকল্প তৈরি হয়নি। সংসদ সদস্য সময় পেলেই এলাকায় ছুটে আসেন। উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড ছাড়াও সামাজিক, সাংস্কৃতিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ সবার নজর কেড়েছে।’

আসনটিতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দৌড়ে রয়েছেন সংসদ সদস্য আব্দুল ওয়াদুদ দারা, সাবেক সংসদ সদস্য তাজুল ইসলাম মোহাম্মদ ফারুক, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগ সহসভাপতি আব্দুল মজিদ, রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও দলের জেলা শাখা স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ডা. মুনসুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহসানুল হক মাসুদ ও জেলা যুবলীগের সহসভাপতি ওবাইদুর রহমান। এ ছাড়া শেষ সময়ে এসে আলোচনার ঝড় তুলেছেন রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের সহধর্মিণী মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি শাহীন আকতার রেনী ও আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় সদস্য রাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল ইসলাম ঠান্ডু। জাতীয় নেতা শহীদ কামারুজ্জামান পরিবারের সদস্যের পাশাপাশি সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ডের জন্য শাহীন আকতার রেনী পরিচিত নাম। নরুল ইসলাম ঠান্ডু পরিচ্ছন্ন ইমেজের নেতা। দলীয় কোন্দল মেটাতে এই দু’প্রার্থীর কারো হাতে নৌকা প্রতীক দেয়া হবে বলে গুঞ্জন উঠেছে।

বিএনপির দলীয় সূত্রে জানা গেছে, নাদিম মোস্তফা যাতে মনোনয়ন না পান সেজন্য বেশ কয়েকজন স্থানীয় নেতা মাঠে নেমেছেন। এই দৌড়ে রয়েছেন- সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মণ্ডল, পুঠিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন জুম্মা, দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা আবু বকর সিদ্দিক, দুর্গাপুরের দেলুয়াবাড়ি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম সাকলাইন এবং দুর্গাপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র সাইদুর রহমান মন্টু। তবে প্রার্থীদের মধ্যে এখনো নাদিম মোস্তফারই অবস্থান শক্ত।

অ্যাডভোকেট নাদিম মোস্তফা বলেন, ‘নেতাকর্মীরা তার সঙ্গেই আছে। দুইবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য হিসেবে এলাকায় যে উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন, তা আওয়ামী লীগ ১০০ বছরেও করতে পারবে না। এলাকার মানুষের ভালোবাসা আছে। এজন্য এলাকায় প্রবেশের ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ এমপি দারা বারংবার প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে। ২০১০ সাল থেকে অদ্যাবধি ২৭ বার জনসংযোগ ঠেকাতে ১৪৪ ধারা জারি করেছে। পুলিশ, যুবলীগ দিয়ে রুখতে চেয়েছে। বানেশ্বর বাজারে বিএনপির মিছিলে পুলিশ গুলি চালিয়ে হত্যা মামলায় তাকেসহ বিএনপির বিভিন্ন স্তরের ১৫৬ জন নেতাকর্মীর নাম দিয়েছে। সেই মামলায় প্রতিনিয়ত হাজিরা দিতে হচ্ছে। নিজ দলের ভেতর বা জেলা কমিটির পক্ষ থেকে কোনো প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়নি।’
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status