প্রথম পাতা

রাতে থমথমে নয়াপল্টন

আব্দুল আলীম

১৫ নভেম্বর ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ১:৫৪ পূর্বাহ্ন

রাত ৯টা। নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়। প্রবেশ পথের কলাপসিবল গেট টেনে দিয়ে মাথা বের করে দাঁড়িয়ে রয়েছেন একজন প্রহরী। প্রবেশ করতে চাইলে পরিচয় জিজ্ঞেস করে অনুমতি দেন। ভেতরে গেলে দেখা যায় বিএনপি কার্যালয়ের ভেতরে বসবাসকারী কিছু নেতাকর্মী ও অফিসের কর্মচারি ছাড়া কেউ নেই। রাস্তায় দুই একটা গাড়ি। রিকশার সংখ্যাও কম। দুই চারজন সংবাদ কর্মী রাস্তার উপর চেয়ার পেতে বসে আছেন। আশপাশের প্রায় সব দোকানই বন্ধ। দুই একটি দোকান খোলা থাকলেও ক্রেতা নেই। রাজপথে মানুষের উপস্থিতিও নেই বললেই চলে। নয়াপল্টন বিএনপি কার্যালয়ের এক কর্মচারি মানবজমিনকে বলেন, প্রতিদিনের মতো উৎসবের আমেজেই চলছিল বিএনপির দলীয় মনোনয়ন বিক্রির কার্যক্রম। সকাল থেকে নেতাকর্মী বিশাল বিশাল মিছিল নিয়ে দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনতে আসছিলেন। তারা অনেকে মিছিল নিয়ে শো-ডাউনও করছিল। দুপুর পৌনে একটা পর্যন্ত সব কিছু ঠিকঠাকই চলছিল। তবে দুপুর ১টার সময় হঠাৎ করেই দৃশ্যপট পরির্বতন হয়ে যায়। পুলিশের অতর্কিত হামলা, লাঠিচার্র্জ, গুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপে মুহুর্তের মধ্যে এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
পল্টন থানা ছাত্রদলের এক নেতা ঘটনার সময় দাঁড়িয়েছিলেন কার্যালয়ের তিনতলার ব্যালকনিতে।

তিনি বলেন, পুলিশের লাঠিচার্জ, টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার পর পরিস্থিতি তখন অনেকটাই শান্ত হয়ে এসেছিল। এ সময় হঠাৎ করেই কার্যালয়ের উল্টোদিক থেকে ১০/১২জন হেলমেটধারী রাস্তার ডিভাইডার টপকে দক্ষিণপাশে আসে। তারপর তারা সোজা পুলিশের গাড়ির দিকে এগিয়ে যায়। পুলিশের গাড়ি ভাংচুর ও গাড়ির ওপর উঠে তারা নৃত্য শুরু করে। পরক্ষণেই তারা পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়ে সরে যায়। তিনি বলেন, হেলমেটধারীরা কার্যালয়ের সামনে থাকা বিএনপি বা অঙ্গদলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঘটনার আগে-পরে কোন কথা পর্যন্ত বলেনি। দলের লোক হলে তারা নিশ্চয় কার্যালয়ের সামনে দাঁড়াতো, সহকর্মীদের সঙ্গে গল্প করতো বা কেউ না কেউ তাদের চিনতে পারতো। এছাড়া তখন কার্যালয়ের মাইক থেকে সবাইকে শান্ত থাকার অনুরোধ জানানো হচ্ছিল। দলের কর্মী-সমর্থক হলে তারা সে আহ্বান শুনে শান্ত থাকতো। বিএনপি কার্যালয়ের সামনের এক মোবাইল রিচার্জের দোকানি মানবজমিনকে বলেন, ঘটনার সময় এখানে অনেক মানুষ ছিল। অতর্কিত চারিদিক থেকে গুলির শব্দ শুনে আমি দোকানে টাকা পয়সা ও মোবাইল ফেলে রেখে দৌঁড়ে পালিয়ে যাই। গন্ডগোল থেমে এলাকার পরিবেশ শান্ত হলে আবার ফিরে আসি।

বিএনপি কার্যালয়ে কাদের সিদ্দিকী: এদিকে রাতে বিএনপির নয়াপল্টনের কার্যালয় পরিদর্শনে যান কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম। বিএনপির কার্যালয়ে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সঙ্গে দিনের ঘটনাবলী নিয়ে তিনি কথা বলেন। কার্যালয় ত্যাগের আগে কাদের সিদ্দিকী সাংবাদিকদের বলেন, মিডিয়াতে সারাদিন পল্টনে ঘটে যাওয়া সংঘর্ষের ভিডিও দেখে যা বুঝেছি তা হচ্ছে, যারা এ হামলা করেছে তারা নির্দ্বিধায় করেছে। এটা সাধারণ মানুষের কাজ নয়। নিশ্চয়ই পুলিশের সঙ্গে সম্পর্ক আছে হামলাকারীদের। তা না হলে নির্দ্বিধায় গাড়িতে এমন হামলা, আগুন লাগাতে পারতো না। তার হয়তো পুলিশের সঙ্গেই এসেছে। এরা বিএনপির নেতাকর্মী হলে তাদের গ্রেপ্তার করতো। পালিয়ে যেতে পারতো না সবাই।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status