এক্সক্লুসিভ

নি র্বা চ নী হা ল চা ল (শরীয়তপুর ২)

দু’দলেই প্রার্থীর ছড়াছড়ি

শেখ খলিলুর রহমান, শরীয়তপুর থেকে

১৫ নভেম্বর ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ৯:০৭ পূর্বাহ্ন

নড়িয়া উপজেলা ও ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর থানার ৯টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত শরীয়তপুর-২ আসন। এ আসনে দীর্ঘদিন ধরেই আওয়ামী লীগে চলছে রাজনৈতিক অন্তর্দ্বন্দ্ব। আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নের প্রশ্নে নেতাকর্মীরা দুই ভাগে বিভক্ত। আর এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের দখলে থাকা আসনটি বিএনপির দখলে নেয়ার চেষ্টা চলছে।

এ আসনটি আওয়ামী লীগের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। একাদশ নির্বাচনকে ঘিরে এখানে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিতে একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী মাঠে। আওয়ামী লীগে মনোনয়ন দৌড়ে রয়েছেন ৬ জন। এদের মধ্যে রয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য কর্নেল (অব.) শওকত আলী, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীম, আন্তর্জাতিক মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালের অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সুলতান মাহমুদ সীমন, কর্নেল (অব.) শওকত আলীর ছেলে ৭১ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ডা. খালিদ শওকত আলী, সাবেক এমপি নুরুল হক হাওলাদারের মেয়ে, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য নুরুল হক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান জোবায়দা হক অজন্তা। এ ছাড়া শেষ মুহূর্তে নির্বাচনী এলাকায় ফেস্টুন দিয়ে ছেয়ে ফেলেছেন সাবেক আইজিপি শহিদুল হকের ছোট ভাই, শরীয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও বর্তমান নড়িয়া উপজেলা চেয়ারম্যান একেএম ইসমাইল হক।

এ আসনে বিএনপির মনোয়ন দৌড়ে রয়েছেন ৪ জন। এদের মধ্যে রয়েছেন, জেলা বিএনপির সভাপিত কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শফিকুর রহমান কিরণ, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট জামাল শরিফ হিরু, বিএনপির সাবেক সহ-সভপতি কর্নেল (অব.) এসএম ফয়সাল ও সাবেক এমপি প্রখ্যাত দন্ত চিকিৎসক ডা. কে এ জলিল।
প্রধান এ দু’টি দলের পাশাপাশি জাতীয় পার্টি, জাসদের আরো কয়েকজনের নাম শোনা গেলেও ভোটের মাঠে জাতীয় পার্টি ছাড়া অন্য কোনো পার্টির নেতাকর্মীরা সক্রিয় নেই। জাতীয় পার্টির মনোনয়ন প্রত্যাশী ম.ম.ওয়াসিম খোকন। ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৯৩ হাজার ৪৭৭ জন। ১৯৯১ সালে ভোটার ছিল ১ লাখ ৬৪ হাজার ৭৮০ জন। সে নির্বাচনে কর্নেল শওকত আলী নৌকা নিয়ে ৪৪ হাজার ৩২৭ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির হারুন অর রশিদ পান ২২ হাজার ৪০৮ ভোট। এ সময় ইসলামী ঐক্যজোট, জাকের পার্টি ও বিএনপির স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নেয়। ১৯৯১ সাল থেকে এখন পর্যন্ত এ আসনটি আওয়ামী লীগের দখলে রয়েছে।

আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতাকর্মীর সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামূল হক শামীম ও বর্তমান সংসদ সদস্য কর্নেল (অব.) শওকত আলীর ছেলে ৭১ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ডা. খালিদ শওকত আলীর মধ্যে মনোনয়ন লড়াই হবে। যেহেতু বর্তমান সংসদ সদস্য কর্নেল (অব.) শওকত আলী বয়সের ভারে ন্যুব্জ। এ কারণে নবীনদের মধ্যে মনোনয়ন দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে কর্নেল শওকত আলীর বিকল্প হিসেবে তার ছেলে ডা. খালিদ শওকত আলীকে প্রস্তাব করতে চাইছেন। বিএনপির শফিকুর রহমান কিরণ এর আগেও এ আসন থেকে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করলেও জয়ের মুখ দেখেননি। এ আসন নড়িয়া উপজেলায় আওয়ামী লীগের ভোটব্যাংক। আবার সখিপুর থানায় বিএনপির ভোটব্যাংক রয়েছে। তবে আওয়ামী লীগের মধ্যে চলমান বিভক্তিকে কাজে লাগিয়ে এবারের নির্বাচনে ধানের শীষের বিজয় আনতে আশাবাদী বিএনপি।

ডা. খালিদ শওকত আলী বলেন, আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে বিশ্বাস করি, বিশ্বাস করি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারণ করে বাঙালি জাতিকে নিয়ে ভাবি। আমরা মানুষকে ভালোবাসি, মানুষকে ভালোবেসে, মানুষের জন্য কাজ করে মানুষের ভালোবাসা অর্জন করতে চাই। বিশ্বাস করি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরেই বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত মুক্তি সংগ্রাম সমাপ্ত করা সম্ভব। আমি মনোনয়ন প্রত্যাশা করছি।
এনামুল হক শামীম বলেন, আমি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। সফলতার সঙ্গে ছাত্র রাজনীতি থেকে সুরু করে আন্দোলন সংগ্রাম ও নড়িয়া নদী ভাঙন এবং বিভিন্ন দুর্যোগে দলের পক্ষে বিপদগামী মানুষের পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছি। সবকিছু মিলিয়ে আমি আশা করি মনোনয়ন পাবো ইন্‌শাআল্লাহ।

আন্তর্জাতিক মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালের অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সুলতান মাহমুদ সীমন বলেন, আমি ছাত্রজীবন থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। শরীয়তপুর-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাই। শতভাগ নিশ্চিত আমিই মনোনয়ন পাবো।

জেলা বিএনপির সভাপতি শফিকুর রহমান কিরণ বলেন, বিএনপির মনোনয়ন পাবার ক্ষেত্রে আমি আশাবাদী। দলের ভিতরে পদপদবি নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বা প্রতিযোগিতা থাকতে পারে। এটা কোনো কোন্দল নয়।

বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট জামাল শরীফ হিরু বলেন, আমি ছাত্রজীবন থেকে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। আন্দোলন সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছি। এ পর্যন্ত বিএনপি যাদের মনোনয়ন দিয়েছে তারা কেউ পাস করেনি। দলের অবস্থান ভালো করার জন্য এবার আমি শতভাগ আশাবাদী দল আমাকে মনোনয়ন দিবে। তাছাড়া দলের সিদ্ধান্ত মতে আমি কাজ করবো।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status