এক্সক্লুসিভ

নি র্বা চ নী হা ল চা ল, সিরাজগঞ্জ ৫

হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে দুই দলে

চৌহালী (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি

১৩ নভেম্বর ২০১৮, মঙ্গলবার, ৮:৩১ পূর্বাহ্ন

বেলকুচি ও চৌহালী উপজেলা নিয়ে গঠিত সিরাজগঞ্জ-৫ আসনে কে পাচ্ছেন নৌকা এ নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের মাঝে বিরাজ করছে উৎকণ্ঠা। সবার প্রশ্ন একটাই বিশ্বাস না মণ্ডল! বিষয়টি শুধু নৌকার সমর্থকদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বিএনপি-জামায়াত নেতা-কর্মীদের মধ্যে মুখ্য আলোচনার বিষয়। তাদের নেতারা মনে করছেন জনতার গ্রহণযোগ্য সাবেক মন্ত্রী,  জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল লতিফ বিশ্বাস দলের মনোনয়ন বঞ্চিত হলে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা হতাশ হবেন। বর্তমান এমপি মজিদ মণ্ডল পুত্র মোমিন মণ্ডলও আলোচনায়।
দেশের অন্যতম তাঁতশিল্প সমৃদ্ধ ও কৃষি প্রধান যমুনা বিধৌত সিরাজগঞ্জ-৫ আসনে ভোটার সংখ্যা ৩,৩৯৮৬৭। এর মধ্যে চৌহালী উপজেলার ৯৯,৬২৮  ভোট ও বেলকুচি উপজেলার ২,৪০২৩৯ ভোটার। ১৩ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত সংসদীয় এলাকাটি বিএনপি-জামায়াতের ঘাঁটি হিসেবেই পরিচিত ছিল। তবে ২০০৮ সালে চরম প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতা মহাজোট প্রার্থী আবদুল লতিফ বিশ্বাস ১,১৯,৫৮১ ভোট, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি নেতা ৪ দলীয় জোটের প্রার্থী মেজর (অব.) মঞ্জুর কাদের ১,১৯,৩৩০ ভোট পান। এতে মহাজোট প্রার্থী ৪ দলীয় জোট প্রার্থীকে মাত্র ২৫১ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে জয় লাভ করেন। যা তখনকার ৩০০টি আসনের মধ্যে ছিল সবচেয়ে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। এরপর আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
লতিফ বিশ্বাসের প্রতি সন্তুুষ্ট হয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেন। তখন এলাকার উন্নয়ন, অগ্রগতিতে সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনে এলাকা জুড়ে প্রশংসিত হন। তার নেতৃত্বে বিএনপি ও জাপার বলিষ্ঠ নেতারা দল ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। বাড়ে দলের দক্ষতা। তবে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোননয় বঞ্চিত হন এই প্রবীণ নেতা। মনোনয়ন পান গার্মেন্ট ব্যবসায়ী আবদুুল মজিদ মণ্ডল। এ নিয়ে তৃণমূল আওয়ামী লীগে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। তখন জেলার ৬টি আসনের মধ্যে ৫টিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় হলেও এ আসনে শুধু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে মজিদ মণ্ডল বিজয়ী হন। প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী আতাউর রহমান রতন ৪,২৪৮ ভোট, জাপা প্রার্থী আবু বকর সিদ্দিক ২০৪৩ ভোট পান। তবে লতিফ বিশ্বাস জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হওয়ার সুবাদে এলাকার কর্মীদের মূল্যায়ন ও এলাকার সামগ্রিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখায় সুবিধাবঞ্চিত নেতা-কর্মীদের দলের কাণ্ডারী হিসেবে স্থান পান। তাই দল ও কর্মীদের পুনরায় সুসংগঠিত করে জনগণের দাবির প্রেক্ষিতে সাবেক এই ইউপি চেয়ারম্যান, উপজেলা চেয়ারম্যান, এমপি ও মন্ত্রী এবার আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট মনোনয়ন প্রত্যাশী। তার পাশাপাশি বর্তমান সংসদ সদস্য মজিদ মণ্ডলপুত্র মোমিন মণ্ডল, ঢাকার বনানী থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মীর মোশারফ হোসেনসহ আরো ক’জন নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে মাঠে কাজ করছেন। তবে এদিক থেকে লতিফ বিশ্বাস ও মোমিন মণ্ডল এগিয়ে রয়েছেন। কয়েক বছর ধরে তাদের নিয়েই তৃণমূলে চলছে নানা গুঞ্জন।
এদিকে এ আসনে সংসদের বাইরে থাকা বিএনপি’র দুঃসময়ে এলাকার নির্যাতিত নেতা-কর্মীদের পাশে দাঁড়িয়ে বেশ জোরালো ভূমিকা পালন করছে ঢাকার আবাসন খাতের ব্যবসায়ী ও সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপি’র সহ-সভাপতি রাকিবুল করিম খান পাপ্পু। দলের নেতা-কর্মীদের মামলা তদারকি, মূল্যায়ন ও বিএনপি’র রাজনীতি পুনঃজাগরণ তিনিই করেছেন বলে আসন জুড়ে প্রচারণা রয়েছে। তার পাশাপাশি গত ২ দশক ধরে মাঠে কাজ করছেন কেন্দ্রীয় বিএনপি’র সহ প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলীম। এছাড়া সাবেক এমপি মেজর (অব.) মনজুর কাদের, গোলাম মওলা খান বাবলু, চৌহালী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল মামুন মনোনয়ন প্রত্যাশী। এছাড়া জামায়াতের নেতা অধ্যক্ষ আলী আলম প্রার্থী হবেন বলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
তবে দীর্ঘদিনের সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান মিটিয়ে ভোটযুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য সবাই আওয়ামী লীগের  নৌকা কে পায় এ নিয়ে এখন নানা আলোচনা। বিশ্বাস না মণ্ডল পাবেন নৌকা। শেষ মুহূর্তে এ নিয়ে পাড়া-মহল্লা, রাস্তা-ঘাট, চায়ের দোকানগুলো সরগরম। সবার প্রশ্ন- কে পাচ্ছে নৌকা।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status