প্রথম পাতা
বিএনপির সিরিজ বৈঠক
আন্দোলনের পাশাপাশি নির্বাচনের প্রস্তুতির পরামর্শ
কাফি কামাল
৮ নভেম্বর ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ১:৩৮ পূর্বাহ্ন
সরকারের সঙ্গে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সংলাপে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হওয়ার প্রেক্ষিতে দলের নীতিনির্ধারকদের আন্দোলনমুখী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা। দ্বিতীয় দফা সংলাপ শেষে বিকাল থেকে দলের ভাইস চেয়ারম্যান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সম্পাদকম-লীর সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করেছে বিএনপির নীতিনির্ধারক ফোরাম। বিকেল ৩টা থেকে পর্যায়ক্রমে সম্পাদকমন্ডলী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও দলের ভাইস চেয়ারম্যানদের সঙ্গে এই বৈঠক হয়।
সেখানে সংলাপের অগ্রগতি, আগামী জাতীয় নির্বাচন, দলের সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে খোলামেলাভাবে নিজেদের মতামত তুলে ধরেন নেতারা। বিশেষ করে আগামী জাতীয় নির্বাচন ইস্যুতে দলের অবস্থান ও করণীয় সম্পর্কে চুলচেরা বিশ্লেষণ করেছেন। সেখানে বেশিরভাগ নেতা তাদের মতামতে বলেছেন, তাদের কাছে সংলাপের অগ্রগতি দৃশ্যমান নয় এবং সে লক্ষণও দেখছেন না। এমন পরিস্থিতিতে আন্দোলনের বিকল্প নেই। কিন্তু সেটা কোনভাবেই আলোচনার পথকে রুদ্ধ করে দিয়ে নয়।
আলোচনা ও আন্দোলন দুটোই একসঙ্গে চালিয়ে যেতে হবে। আলোচনার পথ খোলা রেখেই আন্দোলনের মাধ্যমে জনমতের চাপ সৃষ্টি করতে হবে। আন্দোলন ও আলোচনার ভেতর দিয়েই সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাতে হবে সাত দফা দাবি আদায়ের। আন্দোলনের মধ্যেদিয়েই নির্বাচনের দিকে যেতে হবে এবং আন্দোলনের মধ্যদিয়েই যতটুকু সম্ভব দাবি আদায় করতে হবে। গুরুত্ব দিতে হবে চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কারামুক্তির বিষয়ে। একই সঙ্গে প্রস্তুতি নিতে হবে নির্বাচনের। দাবিগুলোর ব্যাপারে সন্তোষজনক একটি অবস্থানে পৌঁছানো গেলে নির্বাচনে অংশ নিতে হবে। আর এ প্রক্রিয়ায় সতর্কতার সঙ্গেই নিতে হবে প্রতিটি পদক্ষেপ।
বৈঠকে অংশ নেয়া একাধিক নেতা এমন তথ্য জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, দেশের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে তাদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত রয়েছে। জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে চায়। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের পর দেশের মানুষের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। সেটার একটি লক্ষণ দৃশ্যমান হয়েছে মঙ্গলবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসভায়। সেখানে রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের পাশাপাশি অংশ নিয়েছেন বিপুল সংখ্যক সাধারণ মানুষ। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের রাজনীতিতে ঐক্য ধরে রেখে সঠিক কর্মসূচির মাধ্যমে এগিয়ে যেতে পারলে সাধারণ মানুষ রাস্তায় নামবে। এছাড়া বিএনপি একটি নির্বাচনমুখী রাজনৈতিক দল।
অন্যদিকে ভোটাধিকার হরণসহ নানা পদক্ষেপের মাধ্যমে জনগণের মুখোমুখি দাঁড়িয়েছে সরকার। বিএনপি নির্বাচন অংশগ্রহণ না করলে, জনগণকে ভোটের মাধ্যমে তাদের প্রতিবাদ প্রকাশের সুযোগ পাবে না। ফলে এখনই নির্বাচন বর্জনের পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত হবে অদূরদর্শীতা। বাস্তব পরিস্থিতি বাধ্য করলে চূড়ান্ত মুহূর্তে সে সিদ্ধান্তও নেয়া যাবে। অবশ্যই নেতারা প্রত্যেকেই দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বের প্রতি চূড়ান্ত আস্থা প্রকাশ করেছেন। তারা একটি বিষয়ে একমত যে, নির্বাচনে অংশগ্রহণ বা বর্জনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার এখতিয়ার দলের চেয়ারম্যান খালেদা জিয়ার।
বৈঠক সূত্র জানায়, বর্তমান পরিস্থিতি ও পদ্ধতিতে নির্বাচনে গেলে কি হবে, না গেলে কি হবে তা নিয়ে খোলামেলাভাবেই তাদের মতামত তুলে ধরেন। সেখানে আন্দোলনের পাশাপাশি নির্বাচনে প্রস্তুতির পক্ষে যেমন নেতারা বক্তব্য দেন তেমনি উঠে আসে ভিন্নমতও। নেতাদের অনেকেই বলেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের নিশ্চয়তা ছাড়া একাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়া ঠিক হবে না। মামলার-হামলার কারণে নেতারা নিজ এলাকায় যেতে পারছেন না, কার্যালয়ে বসতে পারছেন না। অথচ ক্ষমতাসীন দলের নেতারা প্রচারণায় নেমে পড়েছেন। এ অবস্থায় নির্বাচনে যাওয়া হবে আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত। এছাড়াও খালেদা জিয়ার মুক্তি ছাড়া নির্বাচনে গেলে তৃণমূল সেটা গ্রহণ করবে না বলেও দলের নীতিনির্ধারকদের আশঙ্কার কথা জানান কেন্দ্রীয় নেতারা। বৈঠক সূত্র জানায়, খালেদা জিয়ার জামিনে মুক্তি পেলে তার নেতৃত্বে এবং সাত দাবির সন্তোষজনক পরিণতির ভেতর দিয়ে নির্বাচনে যাওয়ার ব্যাপারে নেতাদের বেশিরভাগই ইতিবাচক মনোভাব ব্যক্ত করেছেন।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের ধারাবাহিক বৈঠকের আগে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিতীয় দফা সংলাপের পর সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেনসহ সিনিয়র নেতারা দাবি আদায়ে তাদের আন্দোলনমুখী অবস্থানের ইঙ্গিত দেন।
নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে প্রথম বৈঠকটি হয় দলের সম্পাদকমন্ডলীর সদস্যদের। এ সময় তারা উপস্থিত সব নেতাদের মতামত নেন। সূত্র জানায়, সম্পাদকদের মধ্যে দু’জন নেতা ছাড়া সবাই বর্তমান অবস্থায় নির্বাচনে না যাওয়ার পক্ষে পরামর্শ দেন। একই সঙ্গে খালেদা জিয়ার মুক্তি ছাড়া কেন্দ্রীয় নেতারা নির্বাচনে না যাওয়ার ব্যাপারে মত দেন। বৈঠকে একজন সম্পাদক বলেন, নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার, মামলা-হামলা অব্যাহত রয়েছে। এ অবস্থায় খালেদা জিয়ার মুক্তি ছাড়া নির্বাচনে গেলেও এলাকায় প্রচারণা করতে পারবো না। কারণ তৃণমূল নির্বাচনে যাওয়ার পক্ষে নয়। তাদের কাছ থেকেও আমরা বাধার সম্মুখীন হতে পারি।
বিএনপির সাংগঠিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার বলেন, নাটোরে নেতাকর্মীরা এলাকা ছাড়া। তাদের বিরুদ্ধে শত শত মামলা। জেলখানায় জায়গা খালি নেই। দলের কার্যালয়ে কেউ বসতে পারেন না। যেখানে ক্ষমতাসীন দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতারা এলাকায় প্রচারণা চালাচ্ছেন, সেখানে বিএনপি নেতারা তাদের কার্যালয়েই বসতে পারছেন না। আমাদের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া জেলখানায়। এ অবস্থায় নির্বাচনে যাওয়া হবে বর্তমান সরকারের বৈধতা দেয়া। তাদের বৈধতা দিতে নির্বাচনে যাওয়ার ব্যাপারে যদি দল সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে আমাদের কথা নেই। তবে খালেদা জিয়ার মুক্তি ছাড়া নির্বাচনের পক্ষে আমি নই। তবে বৈঠকে একজন যুগ্ম মহাসচিব ও একজন সম্পাদক নির্বাচনের যাওয়ার পক্ষে মত দেন। তারা যুক্তি দিয়ে বলেন, নির্বাচনের আমেজ শুরু হয়েছে। এ কারনেই মঙ্গলবারের সমাবেশে এত সংখ্যক নেতাকর্মীর সমাগম হয়েছিলো। নির্বাচনে না গেলে এ আমেজ থাকবে না।
সম্পাদকমন্ডলীর বৈঠক শেষে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও দলের ভাইস চেয়ারম্যানদের সঙ্গে বৈঠক করে দলের নীতিনির্ধারক ফোরাম। বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়াও স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান অংশ নেন। ওই বৈঠকে নির্বাচন ও আন্দোলন নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের মতামত সার সংক্ষেপ করা হয়। সূত্র জানায়, দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে বিএনপি মহাসচিবসহ স্থায়ী কমিটির আট সদস্য সাক্ষাত চেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে গত ৮ই অক্টোবর চিঠি দিয়েছেন। দু’একদিনের মধ্যে স্থায়ী কমিটির সদস্যরা খালেদা জিয়ার সঙ্গে হাসপাতালে দেখা করার অনুমতি পেতে পারেন। না হলে আন্দোলন ও নির্বাচন নিয়ে করনীয় বিষয়ে নীতিনির্ধারকদের তৈরী করা সারসংক্ষেপ আইনজীবীদের মধ্যেমে খালেদা জিয়ার কাছে পাঠানো হতে পারে।
অন্যদিকে লন্ডনে থাকা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে একই সারসংক্ষেপ পাঠানো হবে। এটি পাঠানোর পর বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহন করবে নাকি আন্দোলনে যাবেÑ এ বিষয়ে এই দুই শীর্ষ নেতা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু বলেন, দলের নীতিনির্ধারকরা সম্পাদকম-লী থেকে ভাইস চেয়ারম্যান ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টাদের সঙ্গে সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। সাংগঠনিক বিষয় হিসেবে নির্বাচনের বিষয়টিও আলোচনায় উঠে এসেছে। সেখানে নেতারা নির্বাচনে গেলে কি হবে, না গেলে কি হবে এ ব্যাপারে নিজেদের মতামত তুলে ধরেন। তবে সবাই একমত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার এখতিয়ার খালেদা জিয়ার।
বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী বলেন, সরকারের কাছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ৭ দফা দাবি জানিয়েছে। নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের রূপরেখা দিয়েছে। কিন্তু সরকারের তরফে এসব দাবি-দাওয়ার ব্যাপারে কোন ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আসেনি, তারা কিছুই তো মানেনি। তিনি বলেন, সংলাপের কোন অগ্রগতি নেই সেটা বলব না। তবে দাবি মানার কোন লক্ষণ দেখি না। এমন পরিস্থিতিতে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিক বা না নিক আন্দোলনের বিকল্প নেই। আন্দোলনের মাধ্যমেই দাবি আদায় করতে হবে।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিতীয় দফা সংলাপের পর এর অগ্রগতি নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। বৈঠকে অংশ নেয়া একাধিক নেতা জানান, দ্বিতীয় দফা সংলাপে নির্বাচনকালীন সরকারের একটি রূপরেখা দিয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। সেখানে দাবিগুলো সুনির্দিষ্ট করে সেগুলোর অনুকূলে যুক্তি তুলে ধরা হয়েছে সংবিধানের বিধি-বিধানের আলোকে। কিন্তু এসব দাবির ব্যাপারে সরকারের তরফে ইতিবাচক কোন আশ্বাস মেলেনি। তবে সংলাপের শেষে ড. কামাল হোসেন ও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে কয়েক মিনিট একান্ত কথা বলেছেন।
এমন পরিস্থিতিতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতারা সংলাপকে ব্যর্থ বলেনি সংবাদ সম্মেলনে। আলোচনার মনোভাব বজায় রেখেই প্রকাশ করেছেন তাদের অসন্তুষ্টির কথা। আন্দোলনের ইঙ্গিতও দিয়েছেন। কিন্তু সংবাদ সম্মেলনের তিন ঘণ্টার মধ্যে স্থগিত করা হয়েছে রাজশাহী অভিমুখে আজকের রোড মার্চ। অন্যদিকে স্থগিত করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন। এই দুইটি ঘটনা তৈরি করেছে কৌতূহল। সংলাপে অংশ নেয়া বিএনপির এক নেতা জানান, আইনগত উপায়ে খালেদা জিয়ার কারামুক্তিতে কোন প্রতিবন্ধকতা তৈরি না করার ব্যাপারে একটি ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। তবে অন্যান্য দাবির ক্ষেত্রে সরকারের এখনও অনঢ় অবস্থানে।
রাজশাহী অভিমুখে ঐক্যফ্রন্টের রোডমার্চ স্থগিত
রাজশাহী অভিমুখে বৃহস্পতিবার পূর্বঘোষিত রোডমার্চ স্থগিত করেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে গতরাতে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তমের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার তফসিল ঘোষণার তারিখ রয়েছে। তফসিলের পরে আমরা আমাদের রোডমার্চের সিদ্ধান্ত নেব। আপাতত এই কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা আলমগীর বলেন, যেসব জেলার উপর দিয়ে রোডমার্চ যাবে, সেখানকার নেতাকর্মীদের মামলা, গ্রেপ্তার হওয়ার বিষয়গুলো সামনে রেখেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে পরের দিন শুক্রবার পূর্বনির্ধারিত জনসভা হবে। ইতোমধ্যে এই জনসভার জন্য রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ অনুমতি দিয়েছে। মির্জা আলমগীর বলেন, দু’দফা সংলাপে হলেও মূল বিষয়গুলোতে আমরা কোনো ফলাফল পাইনি। আবারও আলোচনার কথা বলেছি। দেখা যাক কী হয়? বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবেই সংলাপে অংশ নিয়েছি। আমার বলেছি, আলোচনার কথা, তারা সময় বের করবেন এবং কিছুটা রাজিও হয়েছেন। এ সময় বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, প্রধানমন্ত্রী সংলাপে বলেছেনÑ রাস্তা বন্ধ না করে মাঠে সমাবেশ করুন। কাউকে গ্রেপ্তার করা হবে না। কিন্তু গতকালের (মঙ্গলবার) জনসভা শেষে অসংখ্য নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এক রকম বলেন, আর তার নিচের লোকেরা কাজকর্ম করেন আরেক রকম। গাড়ি চলছে উল্টো পথে, দেশ চলছে উল্টো পথে। এর আগে মঙ্গলবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঐক্যফ্রন্টের জনসভা থেকে নেতারা ঘোষণা দেন দ্বিতীয় দফা সংলাপ ব্যর্থ হলে তারা রাজপথে নামতে বাধ্য হবেন।
সেখানে সংলাপের অগ্রগতি, আগামী জাতীয় নির্বাচন, দলের সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে খোলামেলাভাবে নিজেদের মতামত তুলে ধরেন নেতারা। বিশেষ করে আগামী জাতীয় নির্বাচন ইস্যুতে দলের অবস্থান ও করণীয় সম্পর্কে চুলচেরা বিশ্লেষণ করেছেন। সেখানে বেশিরভাগ নেতা তাদের মতামতে বলেছেন, তাদের কাছে সংলাপের অগ্রগতি দৃশ্যমান নয় এবং সে লক্ষণও দেখছেন না। এমন পরিস্থিতিতে আন্দোলনের বিকল্প নেই। কিন্তু সেটা কোনভাবেই আলোচনার পথকে রুদ্ধ করে দিয়ে নয়।
আলোচনা ও আন্দোলন দুটোই একসঙ্গে চালিয়ে যেতে হবে। আলোচনার পথ খোলা রেখেই আন্দোলনের মাধ্যমে জনমতের চাপ সৃষ্টি করতে হবে। আন্দোলন ও আলোচনার ভেতর দিয়েই সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাতে হবে সাত দফা দাবি আদায়ের। আন্দোলনের মধ্যেদিয়েই নির্বাচনের দিকে যেতে হবে এবং আন্দোলনের মধ্যদিয়েই যতটুকু সম্ভব দাবি আদায় করতে হবে। গুরুত্ব দিতে হবে চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কারামুক্তির বিষয়ে। একই সঙ্গে প্রস্তুতি নিতে হবে নির্বাচনের। দাবিগুলোর ব্যাপারে সন্তোষজনক একটি অবস্থানে পৌঁছানো গেলে নির্বাচনে অংশ নিতে হবে। আর এ প্রক্রিয়ায় সতর্কতার সঙ্গেই নিতে হবে প্রতিটি পদক্ষেপ।
বৈঠকে অংশ নেয়া একাধিক নেতা এমন তথ্য জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, দেশের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে তাদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত রয়েছে। জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে চায়। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের পর দেশের মানুষের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। সেটার একটি লক্ষণ দৃশ্যমান হয়েছে মঙ্গলবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসভায়। সেখানে রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের পাশাপাশি অংশ নিয়েছেন বিপুল সংখ্যক সাধারণ মানুষ। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের রাজনীতিতে ঐক্য ধরে রেখে সঠিক কর্মসূচির মাধ্যমে এগিয়ে যেতে পারলে সাধারণ মানুষ রাস্তায় নামবে। এছাড়া বিএনপি একটি নির্বাচনমুখী রাজনৈতিক দল।
অন্যদিকে ভোটাধিকার হরণসহ নানা পদক্ষেপের মাধ্যমে জনগণের মুখোমুখি দাঁড়িয়েছে সরকার। বিএনপি নির্বাচন অংশগ্রহণ না করলে, জনগণকে ভোটের মাধ্যমে তাদের প্রতিবাদ প্রকাশের সুযোগ পাবে না। ফলে এখনই নির্বাচন বর্জনের পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত হবে অদূরদর্শীতা। বাস্তব পরিস্থিতি বাধ্য করলে চূড়ান্ত মুহূর্তে সে সিদ্ধান্তও নেয়া যাবে। অবশ্যই নেতারা প্রত্যেকেই দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বের প্রতি চূড়ান্ত আস্থা প্রকাশ করেছেন। তারা একটি বিষয়ে একমত যে, নির্বাচনে অংশগ্রহণ বা বর্জনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার এখতিয়ার দলের চেয়ারম্যান খালেদা জিয়ার।
বৈঠক সূত্র জানায়, বর্তমান পরিস্থিতি ও পদ্ধতিতে নির্বাচনে গেলে কি হবে, না গেলে কি হবে তা নিয়ে খোলামেলাভাবেই তাদের মতামত তুলে ধরেন। সেখানে আন্দোলনের পাশাপাশি নির্বাচনে প্রস্তুতির পক্ষে যেমন নেতারা বক্তব্য দেন তেমনি উঠে আসে ভিন্নমতও। নেতাদের অনেকেই বলেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের নিশ্চয়তা ছাড়া একাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়া ঠিক হবে না। মামলার-হামলার কারণে নেতারা নিজ এলাকায় যেতে পারছেন না, কার্যালয়ে বসতে পারছেন না। অথচ ক্ষমতাসীন দলের নেতারা প্রচারণায় নেমে পড়েছেন। এ অবস্থায় নির্বাচনে যাওয়া হবে আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত। এছাড়াও খালেদা জিয়ার মুক্তি ছাড়া নির্বাচনে গেলে তৃণমূল সেটা গ্রহণ করবে না বলেও দলের নীতিনির্ধারকদের আশঙ্কার কথা জানান কেন্দ্রীয় নেতারা। বৈঠক সূত্র জানায়, খালেদা জিয়ার জামিনে মুক্তি পেলে তার নেতৃত্বে এবং সাত দাবির সন্তোষজনক পরিণতির ভেতর দিয়ে নির্বাচনে যাওয়ার ব্যাপারে নেতাদের বেশিরভাগই ইতিবাচক মনোভাব ব্যক্ত করেছেন।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের ধারাবাহিক বৈঠকের আগে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিতীয় দফা সংলাপের পর সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেনসহ সিনিয়র নেতারা দাবি আদায়ে তাদের আন্দোলনমুখী অবস্থানের ইঙ্গিত দেন।
নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে প্রথম বৈঠকটি হয় দলের সম্পাদকমন্ডলীর সদস্যদের। এ সময় তারা উপস্থিত সব নেতাদের মতামত নেন। সূত্র জানায়, সম্পাদকদের মধ্যে দু’জন নেতা ছাড়া সবাই বর্তমান অবস্থায় নির্বাচনে না যাওয়ার পক্ষে পরামর্শ দেন। একই সঙ্গে খালেদা জিয়ার মুক্তি ছাড়া কেন্দ্রীয় নেতারা নির্বাচনে না যাওয়ার ব্যাপারে মত দেন। বৈঠকে একজন সম্পাদক বলেন, নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার, মামলা-হামলা অব্যাহত রয়েছে। এ অবস্থায় খালেদা জিয়ার মুক্তি ছাড়া নির্বাচনে গেলেও এলাকায় প্রচারণা করতে পারবো না। কারণ তৃণমূল নির্বাচনে যাওয়ার পক্ষে নয়। তাদের কাছ থেকেও আমরা বাধার সম্মুখীন হতে পারি।
বিএনপির সাংগঠিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার বলেন, নাটোরে নেতাকর্মীরা এলাকা ছাড়া। তাদের বিরুদ্ধে শত শত মামলা। জেলখানায় জায়গা খালি নেই। দলের কার্যালয়ে কেউ বসতে পারেন না। যেখানে ক্ষমতাসীন দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতারা এলাকায় প্রচারণা চালাচ্ছেন, সেখানে বিএনপি নেতারা তাদের কার্যালয়েই বসতে পারছেন না। আমাদের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া জেলখানায়। এ অবস্থায় নির্বাচনে যাওয়া হবে বর্তমান সরকারের বৈধতা দেয়া। তাদের বৈধতা দিতে নির্বাচনে যাওয়ার ব্যাপারে যদি দল সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে আমাদের কথা নেই। তবে খালেদা জিয়ার মুক্তি ছাড়া নির্বাচনের পক্ষে আমি নই। তবে বৈঠকে একজন যুগ্ম মহাসচিব ও একজন সম্পাদক নির্বাচনের যাওয়ার পক্ষে মত দেন। তারা যুক্তি দিয়ে বলেন, নির্বাচনের আমেজ শুরু হয়েছে। এ কারনেই মঙ্গলবারের সমাবেশে এত সংখ্যক নেতাকর্মীর সমাগম হয়েছিলো। নির্বাচনে না গেলে এ আমেজ থাকবে না।
সম্পাদকমন্ডলীর বৈঠক শেষে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও দলের ভাইস চেয়ারম্যানদের সঙ্গে বৈঠক করে দলের নীতিনির্ধারক ফোরাম। বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়াও স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান অংশ নেন। ওই বৈঠকে নির্বাচন ও আন্দোলন নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের মতামত সার সংক্ষেপ করা হয়। সূত্র জানায়, দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে বিএনপি মহাসচিবসহ স্থায়ী কমিটির আট সদস্য সাক্ষাত চেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে গত ৮ই অক্টোবর চিঠি দিয়েছেন। দু’একদিনের মধ্যে স্থায়ী কমিটির সদস্যরা খালেদা জিয়ার সঙ্গে হাসপাতালে দেখা করার অনুমতি পেতে পারেন। না হলে আন্দোলন ও নির্বাচন নিয়ে করনীয় বিষয়ে নীতিনির্ধারকদের তৈরী করা সারসংক্ষেপ আইনজীবীদের মধ্যেমে খালেদা জিয়ার কাছে পাঠানো হতে পারে।
অন্যদিকে লন্ডনে থাকা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে একই সারসংক্ষেপ পাঠানো হবে। এটি পাঠানোর পর বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহন করবে নাকি আন্দোলনে যাবেÑ এ বিষয়ে এই দুই শীর্ষ নেতা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু বলেন, দলের নীতিনির্ধারকরা সম্পাদকম-লী থেকে ভাইস চেয়ারম্যান ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টাদের সঙ্গে সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। সাংগঠনিক বিষয় হিসেবে নির্বাচনের বিষয়টিও আলোচনায় উঠে এসেছে। সেখানে নেতারা নির্বাচনে গেলে কি হবে, না গেলে কি হবে এ ব্যাপারে নিজেদের মতামত তুলে ধরেন। তবে সবাই একমত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার এখতিয়ার খালেদা জিয়ার।
বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী বলেন, সরকারের কাছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ৭ দফা দাবি জানিয়েছে। নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের রূপরেখা দিয়েছে। কিন্তু সরকারের তরফে এসব দাবি-দাওয়ার ব্যাপারে কোন ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আসেনি, তারা কিছুই তো মানেনি। তিনি বলেন, সংলাপের কোন অগ্রগতি নেই সেটা বলব না। তবে দাবি মানার কোন লক্ষণ দেখি না। এমন পরিস্থিতিতে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিক বা না নিক আন্দোলনের বিকল্প নেই। আন্দোলনের মাধ্যমেই দাবি আদায় করতে হবে।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিতীয় দফা সংলাপের পর এর অগ্রগতি নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। বৈঠকে অংশ নেয়া একাধিক নেতা জানান, দ্বিতীয় দফা সংলাপে নির্বাচনকালীন সরকারের একটি রূপরেখা দিয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। সেখানে দাবিগুলো সুনির্দিষ্ট করে সেগুলোর অনুকূলে যুক্তি তুলে ধরা হয়েছে সংবিধানের বিধি-বিধানের আলোকে। কিন্তু এসব দাবির ব্যাপারে সরকারের তরফে ইতিবাচক কোন আশ্বাস মেলেনি। তবে সংলাপের শেষে ড. কামাল হোসেন ও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে কয়েক মিনিট একান্ত কথা বলেছেন।
এমন পরিস্থিতিতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতারা সংলাপকে ব্যর্থ বলেনি সংবাদ সম্মেলনে। আলোচনার মনোভাব বজায় রেখেই প্রকাশ করেছেন তাদের অসন্তুষ্টির কথা। আন্দোলনের ইঙ্গিতও দিয়েছেন। কিন্তু সংবাদ সম্মেলনের তিন ঘণ্টার মধ্যে স্থগিত করা হয়েছে রাজশাহী অভিমুখে আজকের রোড মার্চ। অন্যদিকে স্থগিত করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন। এই দুইটি ঘটনা তৈরি করেছে কৌতূহল। সংলাপে অংশ নেয়া বিএনপির এক নেতা জানান, আইনগত উপায়ে খালেদা জিয়ার কারামুক্তিতে কোন প্রতিবন্ধকতা তৈরি না করার ব্যাপারে একটি ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। তবে অন্যান্য দাবির ক্ষেত্রে সরকারের এখনও অনঢ় অবস্থানে।
রাজশাহী অভিমুখে ঐক্যফ্রন্টের রোডমার্চ স্থগিত
রাজশাহী অভিমুখে বৃহস্পতিবার পূর্বঘোষিত রোডমার্চ স্থগিত করেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে গতরাতে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তমের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার তফসিল ঘোষণার তারিখ রয়েছে। তফসিলের পরে আমরা আমাদের রোডমার্চের সিদ্ধান্ত নেব। আপাতত এই কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা আলমগীর বলেন, যেসব জেলার উপর দিয়ে রোডমার্চ যাবে, সেখানকার নেতাকর্মীদের মামলা, গ্রেপ্তার হওয়ার বিষয়গুলো সামনে রেখেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে পরের দিন শুক্রবার পূর্বনির্ধারিত জনসভা হবে। ইতোমধ্যে এই জনসভার জন্য রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ অনুমতি দিয়েছে। মির্জা আলমগীর বলেন, দু’দফা সংলাপে হলেও মূল বিষয়গুলোতে আমরা কোনো ফলাফল পাইনি। আবারও আলোচনার কথা বলেছি। দেখা যাক কী হয়? বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবেই সংলাপে অংশ নিয়েছি। আমার বলেছি, আলোচনার কথা, তারা সময় বের করবেন এবং কিছুটা রাজিও হয়েছেন। এ সময় বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, প্রধানমন্ত্রী সংলাপে বলেছেনÑ রাস্তা বন্ধ না করে মাঠে সমাবেশ করুন। কাউকে গ্রেপ্তার করা হবে না। কিন্তু গতকালের (মঙ্গলবার) জনসভা শেষে অসংখ্য নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এক রকম বলেন, আর তার নিচের লোকেরা কাজকর্ম করেন আরেক রকম। গাড়ি চলছে উল্টো পথে, দেশ চলছে উল্টো পথে। এর আগে মঙ্গলবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঐক্যফ্রন্টের জনসভা থেকে নেতারা ঘোষণা দেন দ্বিতীয় দফা সংলাপ ব্যর্থ হলে তারা রাজপথে নামতে বাধ্য হবেন।