খেলা
‘এমন ব্যাটিং’ নিয়ে সাবেকরাও হতবাক
স্পোর্টস রিপোর্টার
৮ নভেম্বর ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ৯:৪৯ পূর্বাহ্ন
শেষ চার টেস্টের ৭ ইনিংসে দেড়শ রান এসেছে মাত্র একটিতে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিলেট টেস্টের প্রথম ইনিংসে ১৪৩ রানে গুটিয়ে যাওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসে ১৬৯ রানে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে দল। অন্যদিকে ওয়ানডেতে ঠিক বিপরীত চিত্র। ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচে জিম্বাবুয়ের ২৮৬ রান সহজেই টপকে জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ দল। একটি দলের দুই ফরমেটের ক্রিকেটে কেন এমন পার্থক্য? বিশেষ করে দেশের মাটিতে টেস্টে টাইগারদের এমন ব্যাটিং বিপর্যয় কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না ভক্ত থেকে শুরু করে ক্রিকেট বোদ্ধারা। টেস্টে দলের ব্যাটিংয়ের এমন করুণ দশা নিয়ে সাবেক ক্রিকেটার ও বিশ্লেষক ইশতিয়াক আহমেদ কোনো ব্যাখ্যাই খুঁজে পান না। জাতীয় দলের সাবেক আরেক ক্রিকেটার জাভেদ ওমর বেলিমও হতবাক। এমন ব্যাটিং নিয়ে দৈনিক মানবজমিনকে দুই ক্রিকেট বিশ্লেষকই জানিয়েছেন- কারণটা মূলত মানসিক।
এ বিষয়ে ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, ‘আমি আসলে এমন ব্যাটিং বিপর্যয়ের তেমন কোনো ব্যাখ্যা খুঁজে পাচ্ছি না। ইমরুল বলেন, লিটন কুমার দাস বলেন আর মুশফিকুর রহীম, মাহমুদুল্লাহ। তাদের কারো সামর্থ্য ও সক্ষমতা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই। কিন্তু কেউ আউট হচ্ছেন খোঁচা দিয়ে, কেউ বাজে শটে। সবার মধ্যে যেন একটা তাড়াহুড়া ছিল আসলে এটি কোনোভাবেই টেস্ট খেলার মানসিকতা হতে পারে না। বলতে গেলে টপ-অর্ডার ব্যর্থ ছিল। তারা শুধু মানসিকভাবেই নয়, কৌশলগত দিক থেকেও মাঠে পরিকল্পনা প্রয়োগ করতে পারেনি। সবচেয়ে বড় কথা হলো দলটি কিন্তু একেবারে অনভিজ্ঞ ছিল না। তাই আমি কোনো জবাব খুঁজে পাচ্ছি না কেন এমন হলো। এই ধরনের হারের কোনো ব্যাখ্যাই নেই।’
শুধু জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে নয়, এর আগে ৩ টেস্টের ৬ ইনিংসেও একই ব্যাটিং বিপর্যয়। বিশেষ করে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে শেষ টেস্টে সাকিব আল হাসানের দল প্রথম ইনিংসে গুটিয়ে গিয়েছিল মাত্র ৪৩ রানে। ধারাবাহিকভাবে এমন ব্যাটিং বিপর্যয়ের কারণ নিয়ে ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, ‘কারণ আসলে অনেক কিছুই দেয়া যায়। বিদেশের মাটিতে হারলেও আমরা এক ধরনের কারণ দেখাই। এখানে হারছি সেটাও এক ধরনের কারণ দেখাবো। আসলে মূল কারণ- ঘরোয়া যে প্রথম শ্রেণির ম্যাচ সেখানে আমি এখনো ভালোভাবে অভ্যস্ত হইনি। তবে যদি জিম্বাবুয়ের সঙ্গে বলেন বলবো এখানে কন্ডিশন এমন ছিল না যে কঠিন বা প্রতিপক্ষও এমন কিছু ছিল না যে এভাবে হারতে হবে। এটা হলো বড় প্রশ্ন! এমন চাপে নাজমুল হোসেন শান্ত কিংবা আরিফুল হক, মেহিদী হাসান মিরাজ, লিটন দাস বলেন তারা কতটা যোগ্য সেটা কিন্তু বোঝা গেছে। তবে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। বিশ্বাস করি দল ঘুরে দাঁড়াবে।’ এছাড়াও বাংলাদেশের ব্যর্থতার চেয়ে জিম্বাবুয়ের লড়াইকে সম্মান জানাচ্ছেন সাবেক এই ক্রিকেটার। তিনি বলেন, ‘আসলে আমরা কতটা ব্যর্থ সেটাতো আছেই তবে জিম্বাবুয়ে কিন্তু এখানে অসাধারণ খেলেছে। তারা যেভাবে বল করেছে সত্যি করে বললে তাদের কৃতিত্ব দিতে হবেই। তারা যে ভালো দল ও সুযোগ পেলে চেপে ধরতে পারে সেটির কিন্তু প্রমাণ হয়েছে।’
ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করার পর জিম্বাবুয়েকে হালকাভাবে নেয়াটাই কি কাল হলো! ইশতিয়াক বলেন, ‘অবশ্যই, আমরা যেকোনো প্রতিপক্ষকেই হালকাভাবে নিতে পারি না। আমাদের ভাবটা ছিল জিম্বাবুয়েই তো জিতে যাবো। যে কারণে টেস্ট যে কীভাবে খেলতে হয় সেটাই ভুলে গিয়েছিলাম।’ শুরু থেকেই একাদশ ও সিলেটের উইকেট নিয়ে সমালোচনা। বিশেষ করে ম্যাচের আগে নির্বাচক বা প্রধান কোচ যেভাবে বলেছেন সেটির কোনো প্রতিফলন ঘটেনি। তাহলে কি নির্বাচক ও কোচরা স্বাধীন নয়! বিশেষ করে শেষ মুহূর্তে উইকেটের কথা চিন্তা করে তিন স্পিনার নিয়ে খেলেছে বাংলাদেশ দল। এ বিষয়ে ইশতিয়াক বলেন, ‘কোচ বা নির্বাচকরা স্বাধীন কিনা সেটি বলতে পারবো না। তবে হ্যাঁ, অবশ্যই কোচের স্বাধীনতার প্রয়োজন আছে। আমি যতটা শুনেছি স্টিভ রোডসের ইচ্ছা ছিল পেসার বাড়িয়ে খেলা। এই জন্য খালেদকেও দলে নেয়া হয়েছিল। কেন সেটি শেষ পর্যন্ত হলো না বলা মুশকিল। যদি তার ইচ্ছার প্রতিফলন না ঘটে বিপদতো হবেই।’
‘আমরা মানসিকভাবে এখনো দুর্বল’
প্রতিপক্ষ দুর্বল এই মানসিকতাই কি তাহলে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হারের কারণ? জাভেদ ওমর বলেন, ‘দেখেন জিম্বাবুয়েকে যে বাংলাদেশ একেবারেই হালকাভাবে নিয়েছে তা কিন্তু ঠিক নয়। যেটা হয়েছে- আমরা টেস্ট যেভাবে খেলতে হয় সেটি পারিনি। কিন্তু জিম্বাবুয়ে মরিয়া ছিল। তারা এই উইকেটে যেভাবে ব্যাট করা প্রয়োজন এবং যেভাবে বল করা প্রয়োজন সেভাবেই করতে পেরেছে। তাদের গেম প্ল্যানটা মাঠে প্রয়োগ করেছে শতভাগ। আমরা কিন্তু পারিনি। আমরা ওয়ানডেতে যেভাবে ম্যাশের (মাশরাফি) নেতৃত্বে ভালো খেলেছি টেস্টে মাহমুদুল্লাহর নেতৃত্বে সেটি পারিনি। কারণ টেস্ট খেলার মানসিকতার অভাব পরিলক্ষিত। ব্যাটসম্যানদের টিকে থাকার মানসিকতার অভাব ছিল। বলতে পারবেন না যে মুশফিকরা যোগ্য নয়, তারা কিন্তু প্রমাণ করেছে টেস্টে কীভাবে খেলতে হয়। সাকিব, তামিমরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা টেস্টে ব্যাট করেনি? এখন শুধু ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে।’
সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট ঢাকার মিরপুর শেরেবাংলা মাঠে। ১১ই নভেম্বর জিম্বাবুয়ের সামনে হোয়াইটওয়াশ করে সিরিজ জয়ের হাতছানি। টাইগারদের এমন ব্যাটিং ব্যর্থতার পর ঘুরে দাঁড়ানোর উপায় কী! জাভেদ ওমর বলেন, ‘অন্য কোনো দল হলে হয়তো বলতাম ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন। কিন্তু জিম্বাবুয়ে বলেই বলছি যে, নিজেদের সেরাটা দিতে পারলে আর টেস্ট ম্যাচ যেভাবে খেলতে হয় সেভাবে পারলে আমাদের ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব।’
এ বিষয়ে ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, ‘আমি আসলে এমন ব্যাটিং বিপর্যয়ের তেমন কোনো ব্যাখ্যা খুঁজে পাচ্ছি না। ইমরুল বলেন, লিটন কুমার দাস বলেন আর মুশফিকুর রহীম, মাহমুদুল্লাহ। তাদের কারো সামর্থ্য ও সক্ষমতা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই। কিন্তু কেউ আউট হচ্ছেন খোঁচা দিয়ে, কেউ বাজে শটে। সবার মধ্যে যেন একটা তাড়াহুড়া ছিল আসলে এটি কোনোভাবেই টেস্ট খেলার মানসিকতা হতে পারে না। বলতে গেলে টপ-অর্ডার ব্যর্থ ছিল। তারা শুধু মানসিকভাবেই নয়, কৌশলগত দিক থেকেও মাঠে পরিকল্পনা প্রয়োগ করতে পারেনি। সবচেয়ে বড় কথা হলো দলটি কিন্তু একেবারে অনভিজ্ঞ ছিল না। তাই আমি কোনো জবাব খুঁজে পাচ্ছি না কেন এমন হলো। এই ধরনের হারের কোনো ব্যাখ্যাই নেই।’
শুধু জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে নয়, এর আগে ৩ টেস্টের ৬ ইনিংসেও একই ব্যাটিং বিপর্যয়। বিশেষ করে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে শেষ টেস্টে সাকিব আল হাসানের দল প্রথম ইনিংসে গুটিয়ে গিয়েছিল মাত্র ৪৩ রানে। ধারাবাহিকভাবে এমন ব্যাটিং বিপর্যয়ের কারণ নিয়ে ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, ‘কারণ আসলে অনেক কিছুই দেয়া যায়। বিদেশের মাটিতে হারলেও আমরা এক ধরনের কারণ দেখাই। এখানে হারছি সেটাও এক ধরনের কারণ দেখাবো। আসলে মূল কারণ- ঘরোয়া যে প্রথম শ্রেণির ম্যাচ সেখানে আমি এখনো ভালোভাবে অভ্যস্ত হইনি। তবে যদি জিম্বাবুয়ের সঙ্গে বলেন বলবো এখানে কন্ডিশন এমন ছিল না যে কঠিন বা প্রতিপক্ষও এমন কিছু ছিল না যে এভাবে হারতে হবে। এটা হলো বড় প্রশ্ন! এমন চাপে নাজমুল হোসেন শান্ত কিংবা আরিফুল হক, মেহিদী হাসান মিরাজ, লিটন দাস বলেন তারা কতটা যোগ্য সেটা কিন্তু বোঝা গেছে। তবে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। বিশ্বাস করি দল ঘুরে দাঁড়াবে।’ এছাড়াও বাংলাদেশের ব্যর্থতার চেয়ে জিম্বাবুয়ের লড়াইকে সম্মান জানাচ্ছেন সাবেক এই ক্রিকেটার। তিনি বলেন, ‘আসলে আমরা কতটা ব্যর্থ সেটাতো আছেই তবে জিম্বাবুয়ে কিন্তু এখানে অসাধারণ খেলেছে। তারা যেভাবে বল করেছে সত্যি করে বললে তাদের কৃতিত্ব দিতে হবেই। তারা যে ভালো দল ও সুযোগ পেলে চেপে ধরতে পারে সেটির কিন্তু প্রমাণ হয়েছে।’
ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করার পর জিম্বাবুয়েকে হালকাভাবে নেয়াটাই কি কাল হলো! ইশতিয়াক বলেন, ‘অবশ্যই, আমরা যেকোনো প্রতিপক্ষকেই হালকাভাবে নিতে পারি না। আমাদের ভাবটা ছিল জিম্বাবুয়েই তো জিতে যাবো। যে কারণে টেস্ট যে কীভাবে খেলতে হয় সেটাই ভুলে গিয়েছিলাম।’ শুরু থেকেই একাদশ ও সিলেটের উইকেট নিয়ে সমালোচনা। বিশেষ করে ম্যাচের আগে নির্বাচক বা প্রধান কোচ যেভাবে বলেছেন সেটির কোনো প্রতিফলন ঘটেনি। তাহলে কি নির্বাচক ও কোচরা স্বাধীন নয়! বিশেষ করে শেষ মুহূর্তে উইকেটের কথা চিন্তা করে তিন স্পিনার নিয়ে খেলেছে বাংলাদেশ দল। এ বিষয়ে ইশতিয়াক বলেন, ‘কোচ বা নির্বাচকরা স্বাধীন কিনা সেটি বলতে পারবো না। তবে হ্যাঁ, অবশ্যই কোচের স্বাধীনতার প্রয়োজন আছে। আমি যতটা শুনেছি স্টিভ রোডসের ইচ্ছা ছিল পেসার বাড়িয়ে খেলা। এই জন্য খালেদকেও দলে নেয়া হয়েছিল। কেন সেটি শেষ পর্যন্ত হলো না বলা মুশকিল। যদি তার ইচ্ছার প্রতিফলন না ঘটে বিপদতো হবেই।’
‘আমরা মানসিকভাবে এখনো দুর্বল’
প্রতিপক্ষ দুর্বল এই মানসিকতাই কি তাহলে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হারের কারণ? জাভেদ ওমর বলেন, ‘দেখেন জিম্বাবুয়েকে যে বাংলাদেশ একেবারেই হালকাভাবে নিয়েছে তা কিন্তু ঠিক নয়। যেটা হয়েছে- আমরা টেস্ট যেভাবে খেলতে হয় সেটি পারিনি। কিন্তু জিম্বাবুয়ে মরিয়া ছিল। তারা এই উইকেটে যেভাবে ব্যাট করা প্রয়োজন এবং যেভাবে বল করা প্রয়োজন সেভাবেই করতে পেরেছে। তাদের গেম প্ল্যানটা মাঠে প্রয়োগ করেছে শতভাগ। আমরা কিন্তু পারিনি। আমরা ওয়ানডেতে যেভাবে ম্যাশের (মাশরাফি) নেতৃত্বে ভালো খেলেছি টেস্টে মাহমুদুল্লাহর নেতৃত্বে সেটি পারিনি। কারণ টেস্ট খেলার মানসিকতার অভাব পরিলক্ষিত। ব্যাটসম্যানদের টিকে থাকার মানসিকতার অভাব ছিল। বলতে পারবেন না যে মুশফিকরা যোগ্য নয়, তারা কিন্তু প্রমাণ করেছে টেস্টে কীভাবে খেলতে হয়। সাকিব, তামিমরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা টেস্টে ব্যাট করেনি? এখন শুধু ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে।’
সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট ঢাকার মিরপুর শেরেবাংলা মাঠে। ১১ই নভেম্বর জিম্বাবুয়ের সামনে হোয়াইটওয়াশ করে সিরিজ জয়ের হাতছানি। টাইগারদের এমন ব্যাটিং ব্যর্থতার পর ঘুরে দাঁড়ানোর উপায় কী! জাভেদ ওমর বলেন, ‘অন্য কোনো দল হলে হয়তো বলতাম ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন। কিন্তু জিম্বাবুয়ে বলেই বলছি যে, নিজেদের সেরাটা দিতে পারলে আর টেস্ট ম্যাচ যেভাবে খেলতে হয় সেভাবে পারলে আমাদের ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব।’