বিশ্বজমিন

গোয়েন্দাজাল-৬

গুরুত্বপূর্ণ মস্তিষ্ক সরিয়ে দেয়ার প্রশংসা মোসাদের

মোহাম্মদ আবুল হোসেন

৪ নভেম্বর ২০১৮, রবিবার, ১০:০১ পূর্বাহ্ন

১৯৭৮-৭৯ সময়ের ইরান বিপ্লবের আগে ১৯৫৭ সালে অর্গানাইজেশন অব ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যান্ড ইনফরমেশন (সাভাক) নামে ইরানে গোপন পুলিশ ও গোয়েন্দা সার্ভিস সৃষ্টি করা হয় যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের নির্দেশনায়। ১৯৬০ এর দশকের শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যকার সম্পর্কে দূরত্ব বাড়তে থাকে। এই দূরত্বের কারণে ইরান ছাড়তে বাধ্য হয় যুক্তরাষ্টের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ। এ সময়ে ইরানে খুব বেশি সক্রিয় হয়ে ওঠে মোসাদ। তারা সাভাক-এর বিভিন্ন ব্যক্তিকে প্রশিক্ষণ দিতে থাকে। সাভাক-এর সঙ্গে বিভিন্ন যৌথ অপারেশন পরিচালনা চালাতে থাকে।
যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা দ্য ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেছেন যে, ২০০৭ সালের ৭ই ফেব্রুয়ারি স্বপক্ষ ত্যাগ করেন ইরানের জেনারেল আলী রেজা আসকারি। তার এই পক্ষত্যাগে ভূমিকা রেখেছে ইসরাইল। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ইসরাইলের মুখপাত্র মার্ক রেগেভ। দ্য সানডে টাইমস রিপোর্টে বলে যে, ২০০৩ সাল থেকে মোসাদের একজন এজেন্ট ছিলেন আসকারি। যখন এই গোপন কথা প্রকাশ হয়ে যাওয়ার অবস্থা হয় তখনই তিনি মোসাদ ছেড়ে দেন।
ফ্রান্সের লা ফিগারো পত্রিকা রিপোর্ট করে যে, ২০১০ সালের ১২ই অক্টোবরে ইরানিয়ান রেভ্যুলুশনারি গার্ডের ইমাম আলী সামরিক ঘাঁটিতে একটি বিস্ফোরণ ঘটে। এর জন্য দায়ী সম্ভবত মোসাদ। ওই বিস্ফোরণে কমপক্ষে ১৮ জন নিহত ও ১০ জন আহত হন। নিহতদের মধ্যে ছিলেন জেনারেল হাসান তেহরান মোগাদ্দাম। তিনি তখন ইরানের রেভ্যুলুশনারি গার্ডের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির কমান্ডার ছিলেন। এ ছাড়া তিনি ইরানের দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ছিলেন। যে ঘাঁটিতে ওই বিস্ফোরণ ঘটানো হয় তা ব্যবহার করা হতো দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র জমা রাখার জন্য। সেখানে জমা রাখা ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যে ছিল শাবাব-৩। ইরানের সবচেয়ে নিরাপদ সামরিক ঘাঁটিগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম।
২০১০ সালে ইরানের পদার্থবিজ্ঞানীদের হত্যার ষড়যন্ত্র ও তাদেরকে হত্যার জন্য মোসাদকে দায়ী করেন ওই সময় ইরানের গোয়েন্দা বিষয়ক মন্ত্রী হায়দার মোসলেহি। তবে বিভিন্ন রিপোর্টে যা বলা হয়েছে, তাতে এমন দাবির পক্ষে প্রমাণ মেলে নি। ইরানের একজন ইমাম মজিদ জামালি ফাসি এ বিষয়ে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে স্বীকারোক্তি দেন। তিনি বলেন, তিনি ইসরাইল সফরে গিয়েছিলেন। সেখানে তাকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে মোসাদ।
ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির সঙ্গে জড়িত বিজ্ঞানী মাসুদ আলী মোহাম্মদী, আরদেশির হোসেইপুর, মজিদ শাহরিয়ার, দারিশ রেজাইনেজাদ ও মোস্তাফা আহমাদি-রোশানকে হত্যার জন্য দায়ী করা হয় মোসাদকে। ইরানের পারমাণবিক বিজ্ঞানী ফেরেইদুন আব্বাসীকে হত্যা চেষ্টার জন্যও দায়ী করা হয় মোসাদকে। ২০০২ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত মোসাদের পরিচালক ছিলেন মেয়ার দাগান। তিনি ওইসব হত্যাকা-ের কৃতিত্ব দাবি করেন নি। তবে তিনি সাংবাদিকদের কাছে এসব হত্যার প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেছেন, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি থেকে ‘গুরুত্বপূর্ণ মস্তিষ্কগুলো’ সরিয়ে দেয়ার মাধ্যমে অর্জন করা হয়েছে পক্ষত্যাগীদের।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status