এক্সক্লুসিভ

সংকট মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকা দরকার: এমাজউদ্দীন

স্টাফ রিপোর্টার

২৪ অক্টোবর ২০১৮, বুধবার, ৮:৪৮ পূর্বাহ্ন

বর্তমান সংকট মোকাবিলায় নিজেদের ওপর আত্মবিশ্বাস নিয়ে প্রস্তুত থাকার তাগিদ দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. এমাজউদ্দীন আহমদ। তিনি বলেছেন, ন্যায় ও সত্যের পক্ষে সর্বাত্মকভাবে প্রস্তুত হওয়া দরকার। এই মুহূর্তে এটিই সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। গতকাল দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মরহুম এমকে আনোয়ারের ১ম স্মরণসভায় তিনি একথা বলেন। এমাজউদ্দীন বলেন, বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কারণে বাংলাদেশে এখন রাজনৈতিক সংকট চলছে। এই সংকট তৈরি হলো কীভাবে? কারণ গত ৮/৯ বছরের মধ্যে সরকারি চাকরিতে কোনো ব্যক্তি মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ পায়নি। প্রশাসন, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন সেক্টরে মেধার ভিত্তিতে কোনো কর্মকর্তা নিয়োগ হয়নি।

যেকোনো বিভাগে তাকিয়ে দেখেন। কোনো বিভাগেই কোনো ব্যক্তি মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ লাভ করেনি। ফলে সরকারি কর্মকর্তারা ভুলেই গেছেন যে তারা কোনো দলের কর্মকর্তা না। এমনকি কোনো নির্দিষ্ট সরকারের কর্মকর্তাও তারা না। তারা যে জনগণের কর্মকর্তা এই কথাটাই সরকারি কর্মকর্তারা ভুলে গেছেন। রাষ্ট্রের জনগণের কষ্টে অর্জিত অর্থ দিয়েই কর্মকর্তাদের মাইনে দেয়া হয়- এই জন্য জনকল্যাণে তাদের সংশ্লিষ্ট থাকার কথা। কিন্তু এটা তারা ভুলে গেছেন। সরকারের সমালোচনা করে প্রবীণ এ শিক্ষাবিদ বলেন, এই সরকার সব জায়গায় ষড়যন্ত্রের কথা বলেন। এমনকি জাতীয় ঐক্যকে ষড়যন্ত্র বলা হচ্ছে। কিন্তু ষড়যন্ত্র এটা না। বরং রাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের দলীয় কাজে ব্যবহার করাটাই ষড়যন্ত্র। এমাজউদ্দীন বলেন, সরকারের এই ষড়যন্ত্রকে মুছে ফেলার জন্য জাতীয়পর্যায়ে একটি ঐক্য দরকার। এই ঐক্য ইতিমধ্যে হয়ে গেছে।

জাতীয় ঐক্য বর্তমান সংকট মোকাবিলায় কি অবদান রাখতে পেরেছে বা পারবে সেই সমালোচনা না করে এখন ভাবা দরকার এই জাতীয় ঐক্যে আমার আপনার অবদান কতটুকু। একই সঙ্গে আমাদের প্রস্তুত হওয়া দরকার। তিনি বলেন, রাষ্ট্র ও সরকারকে একাকার করে ফেলা হয়েছে। রাষ্ট্র ও সরকারের মধ্যে যে পার্থক্য রয়েছে এটা ভুলে গেছে সবাই। এখন রাষ্ট্রের সমালোচনা করা যায় না, সরকারেরও সমালোচনা করা যায় না। বিএনপি নেতাকর্মীদের মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গত কয়েকদিন আগে বিএনপির যে মিটিং হলো। এরপর থেকে ভৌতিক মামলায় বিএনপি নেতাদের আসামি করা হলো। গায়েবি মামলা দিয়ে তাদের হয়রানি করা হচ্ছে। এমকে আনোয়ারের স্মৃতিচারণ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই ভিসি বলেন, আমরা এক সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেছি। তখন আমরা খুব ভালো সময় কাটিয়েছি।

আমাদের সময়ে অসৎ হওয়ার সুযোগ ছিল না। এমকে আনোয়ার রাজনীতিতে খুবই জনপ্রিয় নেতা ছিলেন। দেশের আজকের এই রাজনৈতিক সংকটে তার মতো ব্যক্তির খুব বেশি প্রয়োজন ছিল। কিন্তু যে মুহূর্তে তাকে খুব বেশি দরকার ছিল ঠিক তখন তাকে হারালাম। আগামী নির্বাচনের বিষয়ে এমাজউদ্দীন বলেন, দেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ নির্বাচন হওয়া দরকার। আমরা গণতন্ত্র প্রেমী দেশবাসী এ দাবিয়ে জানিয়ে আসছি অনেকদিন ধরে। এখন বিদেশিরাও আমাদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে একই কথা বলতে শুরু করেছে। তিনি বলেন, দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে হবে।

তার আগে যে পার্লামেন্টের নির্বাচন সেই পার্লামেন্ট ভেঙে দিতে হবে। পার্শ্ববর্তী দেশগুলোসহ বিভিন্ন উন্নত দেশে পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে নির্বাচন হয়। প্রত্যেক দেশে নির্বাচনকালীন সরকার ভিন্ন রকম হয়। নির্বাচনের সময় কোনো দেশে প্রধানমন্ত্রী তার পদে বহাল থাকে। আবার কোনো দেশে প্রধানমন্ত্রী সরে যান। সেটা দেশের মানুষের চাওয়ার উপর নির্ভর করে। বাংলাদেশের মানুষ চায় সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচন দিতে হবে। নির্বাচন কমিশনের বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের দেশে নির্বাচন পরিচালনার জন্য একটা কমিশন আছে। কিন্তু এটা বিভক্ত। তারা কোনো কাজের সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে নিজেদের মধ্যেই ভিন্নমত পোষণ করে। নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরামের উপদেষ্টা সাঈদ আহম্মদ আসলামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এম জাহাঙ্গীর আলমের সঞ্চালনায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমাতুল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status