বিশ্বজমিন

খাসোগিকে মারবে ভেবে ‘বডি ডাবল’ নিয়ে আসে সৌদি ঘাতক দল!

মানবজমিন ডেস্ক

২৩ অক্টোবর ২০১৮, মঙ্গলবার, ১০:২৯ পূর্বাহ্ন

তুরস্কে অবস্থিত সৌদি কনস্যুলেটের অভ্যন্তরে মার্কিন প্রভাবশালী পত্রিকা ওয়াশিংটন পত্রিকার কলামিস্ট ও সৌদি ভিন্নমতালম্বী সাংবাদিক জামাল খাসোগির হত্যাকা-ের নতুন বিস্ফোরক তথ্য উন্মোচন করেছে সিএনএন। তুরস্কের তদন্তকারীদের কাছ থেকে পাওয়া সিসিটিভি ফুটেজ দেখিয়ে চ্যানেলটি প্রকাশ করেছে যে, সৌদি যেই ঘাতক দল খাসোগিকে হত্যা করে, তাদের মধ্যে খাসোগির মতো দেখতে একজন ‘বডি ডাবল’ও ছিলেন। খাসোগিকে হত্যার পর এই ‘বডি ডাবল’ তারই জামাকাপড় পরিধান করে ও গালে খাসোগির মতো দাড়ি (আলগা দাড়ি) লাগিয়ে কনস্যুলেট থেকে বের হয়। কিন্তু অন্যান্য সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ওই লোক বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে পরবর্তীতে একটি পার্কের টয়লেটে ঢুকে সব জামাকাপড় পরিবর্তন করে স্বাভাবিক অবস্থায় বের হয়। এরপর আরেকটি জায়গায় গিয়ে খাসোগির জামাকাপড় দ্রুত ডাস্টবিনে ফেলে স্বাভাবিকভাবে হাঁটতে শুরু করে। ওই লোকই সৌদি বিশেষ বিমানে করে তুরস্কে প্রবেশ করা সন্দেহভাজন ১৫ সদস্যবিশিষ্ট ঘাতক দলের একজন। এ থেকে ইঙ্গিত মিলে, খাসোগিকে হত্যা করার প্রস্তুতি নিয়েই তুরস্কে প্রবেশ করে ১৫ সদস্যবিশিষ্ট সৌদি ঘাতকদল।
প্রসঙ্গত, খাসোগি নথিপত্র উত্তোলনের জন্য সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশ করার পর আর না ফিরলে তার নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়। তুরস্ক দ্রুত তদন্ত শুরু করে জানায় তাকে কনস্যুলেটের ভেতরই হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু তখন সৌদি আরব বিষয়টি অস্বীকার করে জানায়, জামাল খাসোগি কনস্যুলেটে প্রবেশের কিছুক্ষণ পরই বের হয়ে গেছেন।
তুরস্কের তদন্তকারীদের ধারণা, জামাল খাসোগির ‘বের হয়ে যাওয়া’র প্রমাণ দেখাতেই ওই বডি ডাবলকে তারই জামাকাপড় পরিয়ে ও আলগা দাড়ি লাগিয়ে কনস্যুলেট থেকে বের করা হয়। কিন্তু পরে ওই ফুটেজ সৌদি কর্তৃপক্ষ আর প্রকাশ করেনি। তদন্তকারীরা ধারণা করছেন, সৌদি ততক্ষণে বুঝে গেছে তুরস্কের কর্তৃপক্ষের কাছে অনেক প্রমাণ হস্তগত হয়ে গেছে। তাই আর মিথ্যা প্রমাণ হাজির করে পরিস্থিতি আরও বৈরি না করার সিদ্ধান্ত নেয় তারা। কিন্তু তুরস্কের কর্তৃপক্ষ নিজেরাই বিভিন্ন সিসিটিভি ফুটেজ মিলিয়ে বিষয়টি পুরোদমে উদঘাটন করে ফেলে।
প্রথমে পুরোপুরি অস্বীকার করলেও, তীব্র আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সৌদি আরব খাসোগিকে হত্যার কথা স্বীকার করে। তবে দেশটির দাবি, জামাল খাসোগিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ফেরত আনতে চাইলে ‘হাতাহাতি’ ঘটে। এক পর্যায়ে তাকে হত্যা করা হয়। দেশটির দাবি, তাকে হত্যা করার কোনো আদেশ শীর্ষ পর্যায় থেকে দেওয়া হয়নি। যেই এজেন্টরা তাকে হত্যা করেছে তাদের ওপর এমন কোনো নির্দেশনাই ছিল না। সৌদি রাজপরিবার ও নেতৃত্ব বিষয়টি সম্পর্কে একেবারেই ওয়াকিবহাল ছিল না বলেই দেশটির।
কিন্তু এখন দৃশ্যত দেখা যাচ্ছে, তাকে হত্যা করার পুরো পরিকল্পনাই আগে থেকে ছিল। এমন নয় যে দুর্ঘটনাবশত ওই ঘটনা ঘটে গেছে। সুতরাং, যে-ই নেতৃত্ব এই অভিযান অনুমোদন দিয়েছিল, তারা নিশ্চয়ই এই পরিকল্পনার সম্পর্কেও অবগত।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status