বাংলারজমিন

ক্যামেরা নিয়ে আর ছুটবে না সাজ্জাদ!

সাখাওয়াত হোসেন হৃদয়, পাকুন্দিয়া (কিশোরগঞ্জ) থেকে

২৩ অক্টোবর ২০১৮, মঙ্গলবার, ৯:০৭ পূর্বাহ্ন

ফাহিম আরমান সাজ্জাদ। বয়স ১৮। ঢাকা পলিটেকনিক এর দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। বাড়ি পাকুন্দিয়া উপজেলার জাঙালিয়া ইউনিয়নের চরকাওনা বেলতলা গ্রামে। ছোটবেলা থেকেই ফটো তোলা ও ভিডিও করার প্রতি প্রবল শখ ছিল তার। কোথাও বেড়াতে যাওয়ার কথা বললে রাজি হতো না, কিন্তু ছবি তোলার কিংবা ভিডিও করার কথা বললে না করতো না। বেরিয়ে পড়তো। খুবই অমায়িক ব্যবহার ছিল তার। যখনই সময় পেত ক্যামেরা নিয়ে বেরিয়ে পড়তো। ছবি তুলতে, ভিডিও করতো। এভাবেই চিরতরে ওপারে চলে যাওয়া প্রিয় বন্ধু সাজ্জাদ সম্পর্কে বর্ণনা করছিল তার সহপাঠী তরিকুল ইসলাম। ক্যামেরা নিয়ে আর ছুটে বেড়াবে না সাজ্জাদ কথাগুলো বলেই হু হু করে কেঁদে ফেলে তরিকুল ও সাজ্জাদ এর চাচাতো বোন সুমাইয়া আক্তার। সোমবার দুপুরে সাজ্জাদের গ্রামের বাড়ি বেলতলা গ্রামে গিয়ে হৃদয়বিদারক এ দৃশ্য দেখা যায়। সাজ্জাদের মৃত্যুর খবর শুনে আত্মীয়স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী সবাই আহাজারি করছে। বিমর্ষ হয়ে বসে আছে তার সহপাঠীরা। গতকাল ট্রেনে কাটা পড়ে গুরুতর আহত হয়ে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১২টার দিকে মারা যায় সাজ্জাদ। সোমবার জোহর নামাজের পর চরকাওনা ঈদগাহ্‌ মাঠে জানাজা নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাজ্জাদের বয়স যখন সাত তখন তার পিতা আমিনুল হক তপন মারা যান। সাজ্জাদের পিতা পেশায় ঠিকাদার ছিলেন। সাজ্জাদ ও তার ছোট দুই ভাই সাদিক হোসেন রোমান ও সাকিব হোসেন ইমরানকে নিয়ে কিশোরগঞ্জ সদরের হয়বতনগরে একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন তার মা নাসিমা খাতুন। সাজ্জাদ ঢাকা পলিটেকনিকে পড়াশোনা করতো। ছুটি কিংবা বন্ধের সময় মায়ের কাছে চলে আসতো। গত শুক্রবার ঢাকা থেকে কিশোরগঞ্জ আসে সাজ্জাদ। রোববার একটি শর্ট ফিল্মের জন্য ক্যামেরা নিয়ে বাসা থেকে বের হয় সে। পরে বিকালের দিকে কিশোরগঞ্জ রেলস্টেশনে শর্ট ফিল্মের জন্য দৃশ্যদারণকালে ট্রেনে কাটা পড়ে দুই পা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে সাজ্জাদের। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে প্রথমে কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে ও পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে প্রেরণ করে। ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১২টার দিকে মারা যায় সাজ্জাদ। স্বামী হারানোর পর বড় ছেলে সাজ্জাদকে হারিয়ে পাগলপ্রায় তার মা নাসিমা।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status