বিশ্বজমিন

আফগানিস্তানে বিস্ফোরণ ও নির্বাচনী সহিংসতায় নিহত ২৯

মানবজমিন ডেস্ক

২২ অক্টোবর ২০১৮, সোমবার, ৮:৩৪ পূর্বাহ্ন

আফগানিস্তানে রাস্তার পাশে পুঁতে রাখা বিস্ফোরক বিস্ফোরিত হয়ে অন্তত ১১ জন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ছয়টি শিশু ও একজন নারীও রয়েছেন। গতকাল দেশটির নাঙ্গারহার প্রদেশে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এর আগে শনিবার দেশটিতে নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংসতায় অন্তত ১৮ জন নিহত হয়েছেন। এ খবর দিয়েছে আল জাজিরা।  
নাঙ্গারহার প্রাদেশিক সরকারের মুখপাত্র আত্তাহুল্লাহ খোগানি বলেন, আচিন জেলায় একটি যাত্রীবাহী গাড়ি মহাসড়ক ধরে চলার সময় রাস্তার পাশে পুঁতে রাখা বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। ওই গাড়ির সব আরোহী বেসামরিক নাগরিক ছিলেন। বিস্ফোরণে তাদের অন্তত ১১ জন নিহত হয়েছেন। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত হামলার দায় স্বীকার করে নি কোনো পক্ষ। গতকাল দেশটিতে দ্বিতীয় দিনের মতো ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়। এর মধ্যেই বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটলো। তবে এই হামলার সঙ্গে নির্বাচনের সংশ্লিষ্টতা আছে কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায় নি।
আগের দিন শনিবার জাতীয় নির্বাচনের প্রথমদিনের ভোটগ্রহণ করা হয়। এদিন আত্মঘাতী বোমা হামলায় কমপক্ষে ১৮ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ৫ জন পুলিশ কর্মকর্তাও রয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরো ৬৭ জন। আফগান কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এ খবর দিয়েছে বৃটেনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ইন্ডিপেন্ডেন্ট।
শনিবারের হামলার দায় স্বীকার করেনি কোনো জঙ্গি গোষ্ঠী। নির্বাচনের দিন সমগ্র আফগানিস্তান জুড়েই অনেক হামলা ও সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এতে হতাহত হয়েছেন অন্তত ১৭০ জন। ভোট কেন্দ্রগুলোতে রকেট লঞ্চার ও বন্দুক নিয়ে হামলা হয়। হামলার পাশাপাশি দুর্বল ব্যবস্থাপনা আর কারিগরি সমস্যার কারণেও ভোটগ্রহণ বাধাগ্রস্ত হয়েছে। প্রথম দিনে সব মিলিয়ে দেশটির একুশ হাজার ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ করা হয়েছে। হামলার কারণে কয়েকটি ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ বন্ধ করে দেয়া হয়। কিছুক্ষেত্রে ভোটগ্রহণের সময়সীমা রোববার পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
আল জাজিরার খবরে বলা হয়, সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে এখন পর্যন্ত আফগানিস্তানে কমপক্ষে ১০ জন প্রার্থী বিভিন্ন হামলায় নিহত হয়েছেন। এছাড়া আরো দু’জন প্রার্থী অপহরণের শিকার হয়েছেন, যাদের সম্পর্কে এখনো কোনো খবর পাওয়া যায়নি। আফগানিস্তানে কর্তব্যরত আল-জাজিরার সাংবাদিক হামজা মোহাম্মদ জানিয়েছেন, নির্বাচনে এখন পর্যন্ত সব থেকে বড় সমস্যা নিরাপত্তা। হামলা আতঙ্কে ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে আসলেন না। তালেবানের হুমকি মোকাবিলায় দেশজুড়ে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
শনিবার, বায়োমেট্রিক সিস্টেম ঠিকভাবে কাজ না করায় ও সময়মতো ভোটার তালিকা না পৌঁছানোয় বেশ কয়েকটি ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ সম্ভব হয়নি। কিছু ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ দেরিতে শুরু হওয়ায় সারা দেশে ভোট দানের সময় স্থানীয় সময় রাত আটটা পর্যন্ত বাড়িয়ে দেয়া হয়। যেসব ভোটকেন্দ্রে প্রথম দিন ভোটগ্রহণ সম্ভব হয়নি, সেসব কেন্দ্রে রোববার ভোটগ্রহণ হয়েছে। গজনি এবং কান্দাহারে বৃহস্পতিবার তালেবানের ভয়াবহ হামলার কারণে সেখানে ভোট গ্রহণ এক সপ্তাহ পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। শনিবার ভোট গ্রহণের সময় বিভিন্ন স্থানে বিশৃঙ্খলার অভিযোগ এনেছেন নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা। পর্যবেক্ষকরা জানিয়েছেন, এখানে সবকিছুই বিশৃঙ্খলায় পূর্ণ, কিছুই ঠিকভাবে কাজ করছে না। দেশটির নির্বাচন কমিশন বলেছে, সব অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সত্যতা পাওয়া গেলে প্রয়োজনে সেখানে পুনরায় ভোটগ্রহণ হবে। ট্রান্সপারেন্ট ইলেকশন ফাউন্ডেশন অব আফগানিস্তানের পরিচালক নায়িম আইয়ুবজাদা আল-জাজিরাকে জানিয়েছেন, শতকরা ২৫ ভাগেরও বেশি ভোটকেন্দ্র খোলেনি। ৩২ শতাংশ বায়োমেট্রিক সিস্টেম সমস্যা করেছে ও ২২ শতাংশ কাজই করেনি। এছাড়া ৯ শতাংশ কেন্দ্রে বায়োমেট্রিক সিস্টেম ব্যবহার করা হয়নি।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status