প্রথম পাতা

চ্যারিটেবল মামলায় রায় ২৯শে অক্টোবর

স্টাফ রিপোর্টার

১৭ অক্টোবর ২০১৮, বুধবার, ১০:১৬ পূর্বাহ্ন

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার রায় ঘোষণার জন্য আগামী  ২৯শে অক্টোবর দিন ধার্য করেছেন আদালত। ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. আখতারুজ্জামান গতকাল এ মামলার বিচারিক কার্যক্রমের সমাপ্তি ঘোষণা করে রায়ের জন্য এদিন ধার্য করেন। মামলাটি যুক্তিতর্কের পর্যায়ে ছিল। তবে, আসামিপক্ষের আইনজীবীরা যুক্তিতর্কের শুনানিতে অংশ নিচ্ছেন না উল্লেখ করে রায়ের দিন ধার্যের আবেদন জানিয়েছিল প্রসিকিউশন পক্ষ। বিচারক গতকাল আদেশে উল্লেখ করেন, ন্যায়  বিচারের স্বার্থে আসামিপক্ষকে যুক্তিতর্কের শুনানির সুযোগ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু আসামিপক্ষ যুক্তিতর্কের শুনানি না করে নানা কারণ দেখিয়ে কালক্ষেপণ করছে। সেজন্য প্রসিকিউশন যে আবেদন করেছে সেই আবেদন মঞ্জুর করা হলো। আগামী ২৯শে  অক্টোবর এ মামলা রায়ের জন্য থাকবে। আর বেগম খালেদা জিয়া ওইদিন পর্যন্ত জামিনে থাকবেন বলে আদালতের আদেশে বলা হয়। এদিকে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার রায়ের দিন ধার্যের আদেশকে বেআইনি উল্লেখ করে এর বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আবেদন করা হবে বলে জানান তার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া। অন্যদিকে দুদকের কৌঁসুলি মোশাররফ হোসেন কাজল বলেছেন, আসামিপক্ষ যুক্তিতর্কের শুনানি করছেন না বলেই আইন অনুযায়ী আদালত রায়ের দিন ধার্য করেছেন।

২০১০ সালের ৮ই আগস্ট রাজধানীর তেজগাঁও থানায় খালেদা জিয়সহ চারজনের নামে এ মামলা দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলার অন্য আসামিরা হলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, বিআইডব্লিউটি’র নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত পরিচালক  জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার সাবেক একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায়ে ৫ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত খালেদা জিয়া কারাগারে রয়েছেন। অসুস্থতার দরুন বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন তিনি। আর জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও মনিরুল ইসলামের জামিন বাতিল হওয়ার পর কারাগারে রয়েছেন। অন্য আসামি হারিছ চৌধুরী মামলার শুরু থেকেই পলাতক।  

এ মামলার বিচারকাজ পরিচালনার জন্য আইন মন্ত্রণালয় গত ৪ঠা সেপ্টেম্বর নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের একটি ভবনে বিশেষ অস্থায়ী আদালত স্থাপনের প্রজ্ঞাপন জারি করে। পরদিন ৫ই সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়া ওই আদালতে হাজির হয়ে জানান, তিনি অসুস্থ। এ অবস্থায় বার বার আদালতে আসতে পারবেন না। এরপর একাধিক ধার্য তারিখে প্রসিকিউশন পক্ষ থেকে  আদালতে জানানো হয়, খালেদা জিয়া আদালতে আসতে অনিচ্ছুক। এমন পরিস্থিতিতে তার অনুপস্থিতিতেই বিচারকাজ চালিয়ে যাওয়ার আবেদন করে প্রসিকিউশন। তবে, বিএনপি চেয়ারপারসনের আইনজীবীরা তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে জানান, তিনি আদালতে আসতে ইচ্ছুক। তবে, তিনি অসুস্থ। আগে তার চিকিৎসা প্রয়োজন। সুস্থ হলেই তিনি আদালতের কার্যক্রমে অংশ নেবেন। শুনানি নিয়ে গত ২০শে সেপ্টেম্বর এক আদেশে খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতেই এই মামলার বিচারকাজ চলবে বলে আদেশ দেন আদালত। পরে বিচারিক আদালতের এ আদেশ চ্যালেঞ্জ ও মামলার কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন খালেদার আইনজীবীরা। শুনানি নিয়ে গত ১৪ই অক্টোবর হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ এক আদেশে খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের আবেদন খারিজ করে দেন।  

গতকাল নাজিম উদ্দিন রোডের পরিত্যক্ত কারাগারের ওই আদালতে খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া বিচারককে জানান, হাইকোর্টের ওই আদেশের বিরুদ্ধে তারা সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করবেন। এজন্য শুনানি মুলতবির আবেদন জানান। পাশাপাশি খালেদা জিয়ার জামিন বর্ধিতের আবেদন জানান আইনজীবী। অন্যদিকে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল এক আবেদনে মামলার বিচারিক কার্যক্রম সমাপ্ত ঘোষণা করে রায়ের তারিখ ধার্যের আবেদন জানান। শুনানি নিয়ে আদালত এই মামলার রায়ের জন্য ২৯শে অক্টোবর দিন ধার্য করে ওইদিন পর্যন্ত জামিন বর্ধিত করেন।

গতকাল আদেশ শেষে সানাউল্লাহ মিয়া মানবজমিনকে বলেন, খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে বিচার চলার আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে করা আমাদের আবেদনটি নামঞ্জুর হয়েছিল। সেই আদেশের বিরুদ্ধে আমরা সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করবো জানিয়ে সময়ের আবেদন করেছিলাম। আদালত আমাদের আবেদন না-মঞ্জুর করে ২৯শে অক্টোবর রায়ের তারিখ ধার্য করেছেন। তিনি বলেন, আমরা মনে করি সরকারের হস্তক্ষেপে রায়ের তারিখ ধার্যের এ  আদেশ দেয়া হয়েছে। আমরা এ আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাব। দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল সাংবাদিকদের বলেন, ‘আসামিপক্ষ এই মামলার বিচারিক কার্যক্রম বিঘ্নিত করেছে। আমাদের যে আবেদন তাতে আদালত মনে করেছেন যে এটি গ্রহণযোগ্য। এজন্য আগামী ২৯শে অক্টোবর রায়ের তারিখ ধার্য করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা খালেদা জিয়ার জামিন বাতিলের আবেদন করেছিলাম। আদালত আমাদের আবেদন নামঞ্জুর করে রায়ের দিন পর্যন্ত তার জামিন বর্ধিত করেছেন।’  

ওদিকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, রায়ের যে তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে, এটা একেবারেই সরকারের নির্দেশে করা হয়েছে। প্রথম থেকেই সে চেষ্টা করা হচ্ছে। বিনা বিচার, ন্যায় বিচার ছাড়াই দেশনেত্রীকে সাজা দেয়ার সিদ্ধান্ত সরকার নিয়েছে।
জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রবের বাসায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status