খেলা
যে ৫ কারণে খারাপ সময় পার করছে রিয়াল
স্পোর্টস ডেস্ক
১৭ অক্টোবর ২০১৮, বুধবার, ৯:২৫ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ ৪ ম্যাচের ৩টিতে হার ও ১টি ড্র। গোল করতে ব্যর্থ ৪ ম্যাচেই। এমন পরিসংখ্যান অনেকাটই মানায় না বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম সেরা ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদের নামের পাশে। পরিসংখ্যান মতে নিজেদের ইতিহাসের সবচেয়ে বাজে সময় পার করছে দলটি। এর আগে ১৯৮৫ সালে সর্বশেষ টানা ৪ ম্যাচ গোল করতে ব্যর্থ হয় রিয়াল মাদ্রিদ। মৌসুমের শুরুতেই জিনেদিন জিদানের বিদায়ে দলের দায়িত্ব নেন স্প্যানিশ কোচ হুলেন লোপেতেগি। গত জুলাইতে বিদায় নেন ক্লাবটির ইতিহাসের সর্বাধিক গোলদাতা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। জিদানের বিদায়ের পর নতুন কোচ নিলেও দলটি ভেড়ায়নি কোনো তারকা ফুটবলার। সবমিলিয়ে রিয়াল মাদ্রিদের ফুটবল কৌশলসহ প্রায় সবকিছুই পাল্টে যায়। ১৫ই আগস্ট ইউরোপিয়ান সুপার কাপের ফাইনালে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের মুখোমুখি হয় রিয়াল। দীর্ঘ ২ যুগ পর ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতার ফাইনালে অ্যাটলেটিকোর কাছ হারে। তাও ৪-২ গোলে। স্প্যানিশ লা লিগায় প্রথম কয়েক ম্যাচ টানা জেতার পর সেভিয়ার মাঠে ৩-০ গোলে হার দেখে রিয়াল। এরপর মস্কোতে ইউয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ম্যাচে ১-০ গোলে ও সর্বশেষ আলাভেসের বিপক্ষে ১-০ গোলে হার। রিয়াল মাদ্রিদের এমন অবস্থার জন্য নিচে ৫টি কারণ তুলে ধরা হলো।
রক্ষণভাগে বাজে পারফরম্যান্স
রিয়ালের সর্বশেষ ২ ম্যাচ হারের পেছনে রক্ষণভাগের খেলোয়াড়দের অনেকটাই ব্যর্থতা রয়েছে। লীগের ম্যাচগুলোতে প্রায় সময় অধিনায়ক সার্জিও রামোসকে প্রতিপক্ষের গোলপোস্টের সামনে দেখা যায়। বর্তমান সময়ে তার গোল দেয়ার এই তীব্র প্রচেষ্টা দলের পরাজয়ের অন্যতম কারণ হিসেবেও উল্লেখ করা যায়। আলাভেসের বিপক্ষে সর্বশেষ লীগ ম্যাচে ৯৫ মিনিটের সময় গোল হজম করে রিয়াল। দানি কারভাহালের অনুপস্থিতিতে গত গ্রীষ্মকালীন দলবদলে রিয়ালে আসা স্প্যানিয়ার্ড রাইট ব্যাক আদ্রিওজোলা পুরো সময়টাই মাঠে ছিলেন। মূলত তার ক্লিয়ারেন্স থেকেই কর্নার পায় আলাভেস। কর্নার নেয়ার সময় রামোস ও অদ্রিওজোলার ম্যান মার্কিংয়ের ভুলের সুযোগে হেডে বল জালে জড়ান আলাভেস মিডফিল্ডার মনু গার্সিয়া। অন্যদিকে মৌসুমের প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ম্যাচেও টনি ক্রুস ও রাফায়েল ভারানের ভুলের কারণে খেলা শুরুর ২ মিনিটের মধ্যেই গোল হজম করে রিয়াল মাদ্রিদ। ওই ম্যাচে সিএসকে মস্কোর বিপক্ষে ১-০ গোলে হার দেখে তারা।
খেলোয়াড়দের ইনজুরি
মাদ্রিদের দুরবস্থার জন্য দলটির তারকা খেলোয়াড়দের ইনজুরি অনেকাংশে দায়ী। গত মৌসুমে অসাধারণ পারফরম্যান্স করা রাইট ব্যাক দানি কানভাহাল ও লেফট ব্যাক মার্সেলো মৌসুমের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত দুবার ইনজুরিতে আক্রান্ত হন। দলের সেরা দুই তারকা ইস্কো ও গ্যারেথ বেলও একবার করে পড়েছেন ইনজুরিতে। চোট কাটিয়ে বেল ফিরলেও দুই সপ্তাহ আগে এপেনডিক্স অপারেশনের কারণে ২ মাসের জন্য বিশ্রামে রয়েছেন ইস্কো।
বিশ্বকাপ পরবর্তী বিশ্রাম স্বল্পতা
রিয়ালের প্রায় প্রতিটি খেলোয়াড়ই নিজ নিজ দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন রাশিয়া বিশ্বকাপে। তাদের মধ্যে একাধিক খেলোয়াড় খেলেছেন বিশ্বকাপ ফাইনালেও। এদের মধ্যে রক্ষণভাগের প্রধান তারকা রাফায়েল ভারান ও ফিফার বর্ষসেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার পাওয়া লুকা মদরিচ। এছাড়াও রিয়ালের খেলোয়াড়দের মধ্যে স্পেনের হয়ে ৭ জন ও ব্রাজিলের হয়ে ২ জন বিশ্বকাপের নক আউট পর্বে খেলেন। যার ফলে অন্য খেলোয়াড়দের তুলনায় এরা কম বিশ্রাম পেয়েছেন। বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করা বেশিরভাগ খেলোয়াড়ই পর্যাপ্ত বিশ্রামের অভাবে এ মৌসুমের শুরুতে ইনজুরিতে আক্রান্ত হন। তাই বলা যায়, পর্যাপ্ত বিশ্রামের অভাবটাও দলের বর্তমান দুরবস্থার অন্যতম কারণ।
রোনালদোর অনুপস্থিতি
দীর্ঘ ৯ বছর ধরে মৌসুম প্রতি গড়ে ৩০ গোল করা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো মাদ্রিদ ছেড়ে পাড়ি জমিয়েছেন ইতালিয়ান ক্লাব জুভেন্টাসে। তার অভাব খুব ভালোভাবেই টের পাচ্ছে রিয়াল। সেভিয়ার বিপক্ষে রিয়াল মাদ্রিদ ৩-০ গোলে হেরেছে এবারের মৌসুমে। অথচ গত মৌসুমে এ সেভিয়াকেই ৪ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল দলটি। ওই হ্যাটট্রিকসহ জোড়া অ্যাসিস্ট করেছিলেন রোনালদো। আলাভেসের বিপক্ষেও গত মৌসুমে হ্যাটট্রিক করেন সিআর সেভেন। অথচ সর্বশেষ লীগ ম্যাচে আলাভেসের বিপক্ষে কোনো গোলই করতে পারেনি রিয়াল। মাদ্রিদ ডার্বিতেও কোনো গোল করতে পারেনি দলটি। যেখানে গত দুই মৌসুমে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে ৬ গোলে করেন রোনালদো।
জিদান ও লোপেতেগির কৌশলগত পার্থক্য
রিয়াল মাদ্রিদে মাত্র আড়াই বছর কাটান জিনেদিন জিদান। আর এই সময় টানা ৩টি চ্যাম্পিয়ন্স লীগ শিরোপাসহ জিদান রিয়ালকে জেতান ৯টি শিরোপা, যার মধ্যে ৭টিই ছিল ইউরোপীয় শিরোপা। জিদানের অধীনে ইউরোপীয় ফুটবলে একক আধিপত্য কায়েম করেছিল রিয়াল। এরপর জিদানের বিদায়ে স্প্যানিশ টিকিটাকায় পারদর্শী হুলেন লোপেতেগি দায়িত্ব নিলেন। পাল্টে গেল রিয়ালের ঐতিহ্যবাহী আক্রমণাত্মক ফুটবল কৌশল। লোপেতেগির কৌশলে বল দখলে এগিয়ে থাকাটাই মুখ্য। বেল, বেনজামা, ইস্কোদের নিয়েই দল সাজালেন তিনি। মধ্য মাঠে ক্রুস, ক্যাসেমিরো, মদরিচরা রয়েছেন আগের মতোই। দীর্ঘদিন আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলা দলকে হঠাৎ পাসিং ফুটবলে খেলানোও গোল না পাওয়ার অন্যতম কারণ বলা যায়। যেহেতু এ কৌশলে গোল করার সুযোগ কম, সেহেতু দলে থাকতে হবে বিশ্বমানের ফরোয়ার্ড। অথচ ইনজুরি আক্রান্ত বেল ও বেনজামাই এক্ষেত্রে লোপেতেগির শেষ ভরসা।
রক্ষণভাগে বাজে পারফরম্যান্স
রিয়ালের সর্বশেষ ২ ম্যাচ হারের পেছনে রক্ষণভাগের খেলোয়াড়দের অনেকটাই ব্যর্থতা রয়েছে। লীগের ম্যাচগুলোতে প্রায় সময় অধিনায়ক সার্জিও রামোসকে প্রতিপক্ষের গোলপোস্টের সামনে দেখা যায়। বর্তমান সময়ে তার গোল দেয়ার এই তীব্র প্রচেষ্টা দলের পরাজয়ের অন্যতম কারণ হিসেবেও উল্লেখ করা যায়। আলাভেসের বিপক্ষে সর্বশেষ লীগ ম্যাচে ৯৫ মিনিটের সময় গোল হজম করে রিয়াল। দানি কারভাহালের অনুপস্থিতিতে গত গ্রীষ্মকালীন দলবদলে রিয়ালে আসা স্প্যানিয়ার্ড রাইট ব্যাক আদ্রিওজোলা পুরো সময়টাই মাঠে ছিলেন। মূলত তার ক্লিয়ারেন্স থেকেই কর্নার পায় আলাভেস। কর্নার নেয়ার সময় রামোস ও অদ্রিওজোলার ম্যান মার্কিংয়ের ভুলের সুযোগে হেডে বল জালে জড়ান আলাভেস মিডফিল্ডার মনু গার্সিয়া। অন্যদিকে মৌসুমের প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ম্যাচেও টনি ক্রুস ও রাফায়েল ভারানের ভুলের কারণে খেলা শুরুর ২ মিনিটের মধ্যেই গোল হজম করে রিয়াল মাদ্রিদ। ওই ম্যাচে সিএসকে মস্কোর বিপক্ষে ১-০ গোলে হার দেখে তারা।
খেলোয়াড়দের ইনজুরি
মাদ্রিদের দুরবস্থার জন্য দলটির তারকা খেলোয়াড়দের ইনজুরি অনেকাংশে দায়ী। গত মৌসুমে অসাধারণ পারফরম্যান্স করা রাইট ব্যাক দানি কানভাহাল ও লেফট ব্যাক মার্সেলো মৌসুমের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত দুবার ইনজুরিতে আক্রান্ত হন। দলের সেরা দুই তারকা ইস্কো ও গ্যারেথ বেলও একবার করে পড়েছেন ইনজুরিতে। চোট কাটিয়ে বেল ফিরলেও দুই সপ্তাহ আগে এপেনডিক্স অপারেশনের কারণে ২ মাসের জন্য বিশ্রামে রয়েছেন ইস্কো।
বিশ্বকাপ পরবর্তী বিশ্রাম স্বল্পতা
রিয়ালের প্রায় প্রতিটি খেলোয়াড়ই নিজ নিজ দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন রাশিয়া বিশ্বকাপে। তাদের মধ্যে একাধিক খেলোয়াড় খেলেছেন বিশ্বকাপ ফাইনালেও। এদের মধ্যে রক্ষণভাগের প্রধান তারকা রাফায়েল ভারান ও ফিফার বর্ষসেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার পাওয়া লুকা মদরিচ। এছাড়াও রিয়ালের খেলোয়াড়দের মধ্যে স্পেনের হয়ে ৭ জন ও ব্রাজিলের হয়ে ২ জন বিশ্বকাপের নক আউট পর্বে খেলেন। যার ফলে অন্য খেলোয়াড়দের তুলনায় এরা কম বিশ্রাম পেয়েছেন। বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করা বেশিরভাগ খেলোয়াড়ই পর্যাপ্ত বিশ্রামের অভাবে এ মৌসুমের শুরুতে ইনজুরিতে আক্রান্ত হন। তাই বলা যায়, পর্যাপ্ত বিশ্রামের অভাবটাও দলের বর্তমান দুরবস্থার অন্যতম কারণ।
রোনালদোর অনুপস্থিতি
দীর্ঘ ৯ বছর ধরে মৌসুম প্রতি গড়ে ৩০ গোল করা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো মাদ্রিদ ছেড়ে পাড়ি জমিয়েছেন ইতালিয়ান ক্লাব জুভেন্টাসে। তার অভাব খুব ভালোভাবেই টের পাচ্ছে রিয়াল। সেভিয়ার বিপক্ষে রিয়াল মাদ্রিদ ৩-০ গোলে হেরেছে এবারের মৌসুমে। অথচ গত মৌসুমে এ সেভিয়াকেই ৪ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল দলটি। ওই হ্যাটট্রিকসহ জোড়া অ্যাসিস্ট করেছিলেন রোনালদো। আলাভেসের বিপক্ষেও গত মৌসুমে হ্যাটট্রিক করেন সিআর সেভেন। অথচ সর্বশেষ লীগ ম্যাচে আলাভেসের বিপক্ষে কোনো গোলই করতে পারেনি রিয়াল। মাদ্রিদ ডার্বিতেও কোনো গোল করতে পারেনি দলটি। যেখানে গত দুই মৌসুমে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে ৬ গোলে করেন রোনালদো।
জিদান ও লোপেতেগির কৌশলগত পার্থক্য
রিয়াল মাদ্রিদে মাত্র আড়াই বছর কাটান জিনেদিন জিদান। আর এই সময় টানা ৩টি চ্যাম্পিয়ন্স লীগ শিরোপাসহ জিদান রিয়ালকে জেতান ৯টি শিরোপা, যার মধ্যে ৭টিই ছিল ইউরোপীয় শিরোপা। জিদানের অধীনে ইউরোপীয় ফুটবলে একক আধিপত্য কায়েম করেছিল রিয়াল। এরপর জিদানের বিদায়ে স্প্যানিশ টিকিটাকায় পারদর্শী হুলেন লোপেতেগি দায়িত্ব নিলেন। পাল্টে গেল রিয়ালের ঐতিহ্যবাহী আক্রমণাত্মক ফুটবল কৌশল। লোপেতেগির কৌশলে বল দখলে এগিয়ে থাকাটাই মুখ্য। বেল, বেনজামা, ইস্কোদের নিয়েই দল সাজালেন তিনি। মধ্য মাঠে ক্রুস, ক্যাসেমিরো, মদরিচরা রয়েছেন আগের মতোই। দীর্ঘদিন আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলা দলকে হঠাৎ পাসিং ফুটবলে খেলানোও গোল না পাওয়ার অন্যতম কারণ বলা যায়। যেহেতু এ কৌশলে গোল করার সুযোগ কম, সেহেতু দলে থাকতে হবে বিশ্বমানের ফরোয়ার্ড। অথচ ইনজুরি আক্রান্ত বেল ও বেনজামাই এক্ষেত্রে লোপেতেগির শেষ ভরসা।