শেষের পাতা

রাজীবের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রশ্নে রুলের শুনানি ১৪ই নভেম্বর

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে তদন্ত কমিটির ১৮ সুপারিশ

স্টাফ রিপোর্টার

১৬ অক্টোবর ২০১৮, মঙ্গলবার, ১০:১৮ পূর্বাহ্ন

রাজধানীর কাওরান বাজারে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী রাজীব হোসেনের প্রথমে হাত ও পরে প্রাণ হারানোর ঘটনায় গঠিত অনুসন্ধান কমিটি ১৮টি সুপারিশসহ হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করেছে। গতকাল বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের বেঞ্চে ওই প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। এ ছাড়া এ ঘটনায় রাজীবের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রশ্নে জারি করা রুলের ওপর আগামী ১৪ই নভেম্বর শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত। আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল।

বিআরটিসি’র পক্ষে শুনানি  করেন আইনজীবী মো. মুনিরুজ্জামান। স্বজন পরিবহনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী এসএম শফিকুল ইসলাম বাবুল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু। রাজীবের মৃত্যুর ঘটনায় দুই বাস কর্তৃপক্ষের (বিআরটিসি ও স্বজন পরিবহন) দায় নির্ধারণ ও দায়ীদের ক্ষতিপূরণ নিরূপণ করতে তিন সদস্যের একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করেছিলেন হাইকোর্ট। ওই কমিটির প্রধান হিসেবে ছিলেন বুয়েটের অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এআরআই) অধ্যাপক ও পরিচালক ড. মো. মিজানুর রহমান। এ ছাড়া সদস্য হিসেবে ছিলেন বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. হাদিউজ্জামান এবং নিরাপদ সড়ক চাই-এর চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে বিজ্ঞানভিত্তিক বিশ্লেষণ নেই বললেই চলে। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, বুয়েটের এআরআই বিভাগটি বিজ্ঞানসম্মত গবেষণা, বিশ্লেষণ, অনুসন্ধান, কার্যকরী প্রশিক্ষণ ও এর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাব্যবস্থা সীমিত সহযোগিতার মাধ্যমে এগিয়ে চলছে। সরকারের এই বিভাগটির উন্নয়নে জোর  দেয়া উচিত।

প্রতিবেদনে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে একটি কারিগরি টিম গড়ে তোলা এবং তাদের জন্য পৃথক অর্থ বরাদ্দ রাখা, দুর্ঘটনাপ্রবণ সড়কে সিসিটিভি বসানো, প্রতিটি দুর্ঘটনা ঘটলে তা নথিভুক্ত করা, রাজধানীর বাসগুলোর ফিটনেস সার্টিফিকেট দেয়ার আগে গাড়ি পরীক্ষা নিরীক্ষা করার সুপারিশ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিআরটিসি বাসগুলো দৈনিক লিজ ভিত্তিতে ভাড়ায় চালিত হয়ে থাকে। অন্যান্য বাসের ক্ষেত্রের এমন পদ্ধতি বন্ধ করতে হবে। এ ছাড়া চলন্ত অবস্থায় গাড়ির দরজা বন্ধ রাখা, নির্দিষ্ট বাসস্টপেজ বা বে’তে বাস থামার ব্যবস্থা করার কথা বলা হয়েছে সুপারিশে। এ ছাড়া প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়েছে, বিআরটিএ কর্তৃক বাধ্যতামূলক একটি ড্রাইভিং স্কুল থাকতে হবে, যেখানে ড্রাইভিং লাইসেন্স চাইতে হবে। এই স্কুলের সার্টিফিকেট ছাড়া কাউকেই ড্রাইভিং লাইসেন্স টেস্ট করার জন্য আনা হবে না। এ ছাড়া দুর্ঘটনার পর হাসপাতালগুলোতে দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তিকে দ্রুত চিকিৎসা দেয়ার ব্যবস্থা রাখা এবং বাস্তবসম্মত চিকিৎসা এবং আর্থিক দিকগুলো বিবেচনায় সরকারের পক্ষ থেকে ট্রমা ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি তৈরির কথা বলা হয়েছে সুপারিশে। পাশাপাশি ট্রিপ প্রতি বা দৈনিক ভিত্তিতে ড্রাইভার নিয়োগ পদ্ধতি দ্রুত সময়ের মধ্যে বাতিল এবং ড্রাইভারদের বাস কোম্পানি মালিক কর্তৃক মাসিক বেতন ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়ার কথা বলা হয়েছে। কমিটির সুপারিশে দুর্ঘটনা পুনরাবৃত্তি রোধে ও বেপরোয়া যান চলাচল বন্ধে রাজধানীতে বাস রুটগুলোকে ফ্রাঞ্চাইজি ভিত্তিতে চলার পদ্ধতি চালু করার কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি বৈধ লাইসেন্সের ভিত্তিতে একটি রুটে মাত্র একটি কোম্পানির বাস চলার কথা বলা হয়েছে সুপারিশে।  
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status