বাংলারজমিন

দোহাজারী-ঘুমধুম রেলপথ নির্মাণকাজ শুরু

স্টাফ রিপোর্টার, উখিয়া (কক্সবাজার) থেকে

১৬ অক্টোবর ২০১৮, মঙ্গলবার, ৯:২৪ পূর্বাহ্ন

দক্ষিণা পূর্বাঞ্চলের বিশাল জনগোষ্ঠীর বহুল প্রত্যাশিত দোহাজারী কক্সবাজার হয়ে ঘুমধুম রেলপথ প্রথম লটের কাজ শুরুর মধ্যে দিয়ে ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ে করিডরে যুক্ত হওয়ার কাজ শুরু হলো। ২০১১ সালের ৩রা এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওই রেললাইন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। এডিবি ও বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা ব্যয়ে দোহাজারী ভায়া কক্সবাজার হয়ে সীমান্তের ঘুমধুম পর্যন্ত ১২৯ কিলোমিটার ড়ুয়েলগেজ রেলপথ নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়ে প্রথম লটের কাজ শুরু করেছে চীন এবং বাংলাদেশের স্বনামধন্য দুটি প্রতিষ্ঠান। দোহাজারী কক্সবাজার ১০১ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের প্রথম ধাপের কাজ শুরু হয়েছে চলতি বছরের জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে। মার্চের প্রথম সপ্তাহে রামু কক্সবাজার রেলপথ নির্মাণের কাজ শুরু করার মধ্যদিয়ে দুটি ধাপে প্রায় ১৭ শতাংশ কাজ এগিয়ে গেছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ২ হাজার ৬৮৭ কোটি ৯৯ লাখ ৩৪ হাজার টাকা ব্যয়ে প্রথম লটে দোহাজারী-রামু রেলপথ নির্মাণের কাজের চুক্তি হয় চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ এবং দেশের স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাশনের মধ্যে। ২য় লটে ৫০২ কোটি ৫ লাখ ২ হাজার টাকা ব্যয়-বরাদ্দে কক্সবাজার রামু রেলপথ নির্মাণকাজের চুক্তি হয় চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ও দেশের ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার কোম্পানি লিমিটেডের মধ্যে। শর্তানুযায়ী পরবর্তী ৩ বছরের মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়ন শেষ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
প্রকল্প পরিচালক (পিডি) প্রকৌশলী মফিজুর রহমান সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ২য় লটে কক্সবাজার থেকে মিয়ানমার সীমান্তের ঘুমধুম পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণকাজ শুরু করার কথা রয়েছে।
দোহাজারী রামু রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক ও তমা কনস্ট্রাকশন কোম্পানির পরিচালক সুকুমার ভৌমিক স্থানীয় সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, চলতি বছরের জুলাই মাসে রেললাইন প্রকল্পের কাজ শুরু করা হলেও কাজের অগ্রগতি সন্তোষজনক। তিনি বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে যথাসময়ে প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হবে। রামু কক্সবাজার ২য় লটের ঠিকাদারি প্রতিষ্টান ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের উপ-প্রকল্প পরিচালক আনান কুনখানি জানান, চলতি বছরের মার্চ মাসে প্রকল্পের কাজ শুরু করেছি। এ পর্যন্ত ১৭ শতাংশ কাজ এগিয়ে গেছে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চট্‌্রগ্রাম দোহাজারী ভায়া ঘুমধুম রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পে রয়েছে, ৯টি রেলওয়ে স্টেশন, ৪টি বড়, ৪৭টি ছোট ব্রিজ, ১৪৯টি বক্স কালভার্ড, ৫২টি রাউন্ড কালভার্ট। ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার গতি সম্পন্ন রেললাইনে অত্যাধুনিক অপটিক্যাল ফাইভারের মাধ্যমে ট্রাফিক ব্যবস্থা সংযোজন এবং কক্সবাজার সেকতে ঝিনুকের আদলে তৈরি করা হবে অত্যাধুনিক রেল স্টেশন। এ রেললাইনটি তৈরি করতে চট্টগ্রাম কক্সবাজার জেলার উভয় দিকে প্রায় ১ হাজার ৪০০ একর ভূমি অধিগ্রহণের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। অধিগ্রহণকৃত জমির মধ্যে কক্সবাজার জেলার ১ হাজার একর ও চট্রগ্রাম জেলার ৪০০ একর ভূমি রয়েছে। যার অধিকাংশই ব্যক্তি মালিকানাধীন।
২০১৩ সালের ১৯শে এপ্রিল একনেকের সভায় দোহাজারী ভায়া কক্সবাজার ঘুমধুম পর্যন্ত রেলওয়ে প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়া হয়। ২০১৪ সালে এ প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল।
নাইক্ষ্যংছুড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া আফরিন কচি জানান, দোহাজারী ঘুমধুম রেললাইন প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে যোগাযোগ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন হবে। যাত্রীরা নিরাপদে গন্তব্য স্থানে পৌঁছতে সক্ষম হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নমুখী প্রকল্পের মধ্যে এটি অন্যতম। যেহেতু, রেললাইনটি ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ে করিডরে যুক্ত হচ্ছে। এতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্প্রসারিত হবে। পার্শ্ববর্তী বন্ধুপ্রতীম দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক আরো উন্নয়ন হবে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status