দেশ বিদেশ
জামাল খাসোগির ‘অন্তর্ধান’ পাল্টে দিতে পারে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি
মেসাম বেহরাবেশ
১২ অক্টোবর ২০১৮, শুক্রবার, ৯:১১ পূর্বাহ্ন
সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের হাইপ্রোফাইল সমালোচক ও যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন পত্রিকার স্বেচ্ছানির্বাসিত কলামিস্ট জামাল খাসোগি ২রা অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অবস্থিত সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশের পর হাওয়ায় মিলিয়ে গেছেন। তার বাগদত্তা ও বন্ধুরা বলছেন, এরপর থেকে আর তাকে দেখা যায়নি। তার কোনো খবরও কেউ পাননি।
তুরস্কের কর্তৃপক্ষ মনে করছে, তাকে হত্যা করা হয়েছে। তার মরদেহ সম্ভবত টুকরো টুকরো করে কনস্যুলেট ভবন থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে। একটি নিরাপত্তা সূত্রের বরাতে রয়টার্স জানিয়েছে যে, কিছু কর্মকর্তা সহ ১৫ জন সৌদি নাগরিকের একটি দল দুইটি বিমানে করে ইস্তাম্বুলে পৌঁছায়। খাসোগি যখন কনস্যুলেটে প্রবেশ করেন সেইদিনই ওই দলটি ভবনের ভেতর অবস্থান করে। এরপর তুরস্ক ছেড়ে চলে যায়। তুরস্কের একটি পত্রিকা জানিয়েছে, ওই দলের সদস্যদের চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে। তবে কনস্যুলেটের ভেতরের একটি সূত্র বলছে, খাসোগিকে ভবনের ভেতর অপহরণ বা হত্যা করা হয়েছে এমন অভিযোগ ভিত্তিহীন।
তুরস্কের কর্তৃপক্ষের বক্তব্য যদি সত্য হয়, তাহলে সৌদি রাষ্ট্র-অনুমোদিত এই খুন পুরো অঞ্চলে এক ধরনের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে। যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই যে সমালোচনা রয়েছে তা আরো তীব্র হবে। তিনি ২০১৭ সালের জুনে ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে ভিন্নমতাবলম্বীদের ওপর দমনপীড়ন চালিয়ে আসছেন। ধর্মীয় নেতা, বুদ্ধিজীবী ও অ্যাক্টিভিস্টদের পাশাপাশি রাজপরিবারের অভ্যন্তরেও তার সমালোচকদের তিনি গ্রেপ্তার করেছেন।
ইরান-সৌদি দ্বৈরথের প্রেক্ষাপটে, এই ঘটনা হবে তেহরানের জন্য রাজনৈতিক হাতিয়ার। বিদেশি নেতারা যখন মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতা এবং বিশৃঙ্খলা, মৃত্যু ও ধ্বংসের বীজ বোপনের অভিযোগে ইরানের সমালোচনা ক্রমেই বাড়াচ্ছিলেন, ঠিক তখন এই ঘটনায় ইরান নৈতিকভাবে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকবে।
মধ্যপ্রাচ্যে তেহরানকে একঘরে করতে সৌদি আরব হেন কিছু নেই, যা তারা করে নি। ২০১৭ সালে লেবানিজ প্রধানমন্ত্রী সাদ আল-হারিরিকে অবরুদ্ধ করা, ইরানের চির-প্রতিদ্বন্দ্বী ইসরাইলের সঙ্গে পরোক্ষ জোট গঠন করা এবং দেশটির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকায় কাতারকে শাস্তি দেয়া- কোনো কিছুই বাদ রাখেনি সৌদি আরব।
এসব প্রচেষ্টা থেকে প্রত্যাশিত লক্ষ্য অর্জিত হয় নি দেশটির। মাঝে মাঝে বিপরীত ফল বয়ে এনেছে। কিন্তু খাসোগিকে রাষ্ট্রীয় অনুমোদনে হত্যা করার বিষয়টি সুনিশ্চিত হয়ে গেলে সৌদি নেতৃবৃন্দের জন্য ইরানকে মধ্যপ্রাচ্যের চূড়ান্ত ভিলেন বানানোর কাজ কঠিন হয়ে যাবে।
এ বিষয়টি মার্কিন প্রশাসনের ওপরও আন্তর্জাতিক চাপ বৃদ্ধি করবে। ট্রাম্প প্রশাসন তরুণ এই যুবরাজের কথিত সংস্কার কাজের প্রতি সমর্থন দিয়েছে। তিনি যাতে ভবিষ্যতে রাজ সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হতে পারেন সেই মঞ্চ প্রস্তুত করতে সহায়তা দিয়েছে। বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্র পেয়েছে বিলাসী সব অস্ত্র চুক্তি আর কয়েক বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্রকল্প। সৌদি আরব সন্তুষ্ট ও লাভবান হয়েছে যখন ইরান পারমাণবিক চুক্তি থেকে এ বছরের মে মাসে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেন। ওয়াশিংটনের ইউরোপিয়ান মিত্ররা এতে অসন্তুষ্ট হলেও পাত্তা দেয়নি মার্কিন প্রশাসন।
মার্কিন প্রশাসনের এই সমর্থনের জোরেই রিয়াদ আমেরিকার ঐতিহ্যগত মিত্র কানাডার সঙ্গে কূটনৈতিক ও বাণিজ্য সম্পর্ক পর্যন্ত বিচ্ছিন্ন করেছে। এর কারণ ছিল স্রেফ কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ডের একটি টুইট, যেখানে তিনি দুই কারান্তরীণ সৌদি মানবাধিকার কর্মীর মুক্তি দাবি করেছিলেন।
এ ছাড়াও উন্নত অস্ত্রশস্ত্র ও জাতিসংঘ সহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোয় রাজনৈতিক সমর্থনের মাধ্যমে ট্রাম্প প্রশাসন ইয়েমেনে সৌদি-নেতৃত্বাধীন বিতর্কিত সামরিক অভিযানে সমর্থন দিয়েছে। ৯ই আগস্ট উত্তর ইয়েমেনের একটি স্কুলবাসে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের বিমান হামলায় ৪০ শিশু ও ১১ প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি নিহত হন। আহত হন ৭৯ জন যাদের ৫৬ জনই ছিল শিশু। সিএনএন এক প্রতিবেদনে জানায়, ওই হামলায় ব্যবহৃত অস্ত্রটি ছিল ৫০০ পাউন্ড ওজনের লেজার গাইডেড বোমা, যেটি বানিয়েছে মার্কিন প্রতিষ্ঠান লকহিড মার্টিন আর সরবরাহ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
ইয়েমেন যুদ্ধ ও ইয়েমেনি বেসামরিক নাগরিকদের ওপর সৌদি জোটের নৃশংসতার অন্যতম প্রণিধানযোগ্য সমালোচক ছিলেন খাসোগি। তার বিরুদ্ধে রিয়াদ যদি কোনো ব্যবস্থা নিয়ে থাকে, তাহলে রিয়াদকে সমর্থন দিয়ে যাওয়ার রাজনৈতিক মূল্য ওয়াশিংটনের জন্য নাটকীয়ভাবে বেড়ে যাবে।
খাসোগিকে অপহরণ বা হত্যার বিষয়টি সৌদি রাজপরিবারের নির্দেশে হয়েছে, এমনটা যদি নিশ্চিত হয়ে যায়, তাহলে সৌদি আরব ও দেশটির প্রতিদ্বন্দ্বী কাতারের মধ্যকার সম্পর্কেও প্রভাব ফেলবে। ২০১৭ সাল থেকে সন্ত্রাসবাদ সমর্থন দেয়ার অভিযোগে কাতারের ওপর বাণিজ্য ও কূটনৈতিক অবরোধ আরোপ করে রেখেছে সৌদি আরব। খাসোগির হত্যা কিংবা অপহরণের সঙ্গে সৌদি রাজপরিবারের সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হলে যুবরাজ মোহাম্মদের অধীনে সৌদি পররাষ্ট্রনীতির বেপরোয়া অবস্থার বিষয়টি তুলে ধরার বিরল সুযোগ পাবে কাতার।
এখানে বিশেষ গুরুত্বের দাবি রাখে যে তথ্য তা হলো, খাসোগি নিখোঁজ হয়েছেন তুরস্কে। যেটি কাতারের কট্টর মিত্র। কাতারের বিরুদ্ধে সৌদি অবরোধ শুরু হওয়ার পর সৌদি আক্রমণের সম্ভাবনা প্রবল হয়ে উঠার পর তুরস্কই দোহায় নিজেদের সৈন্য পাঠায়। দুই মুসলিম ব্রাদারহুড-ঘেঁষা সরকারের মধ্যকার রাজনৈতিক, সামরিক ও আদর্শিক সম্পর্ক বিবেচনায় নিলে বলতে হয়, তুরস্কের মাটিতে রাষ্ট্র-অনুমোদিত হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি নিয়ে আরো সোচ্চার হতে তুরস্ককে চাপ দিতে পারে কাতার।
আবার খাসোগির এই মর্মান্তিক ঘটনার রহস্য হয়তো কখনই সমাধা হবে না। তবে যদি সৌদি সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে এমন ব্যক্তিবিশেষ খাসোগিকে হত্যা বা অপহরণ করে থাকেন, তবে যুবরাজ মোহাম্মদকে এর চড়া পরিণতি ভোগ করতে হবে।
(মেসাম বেহরাবেশ সুইডেনের লুন্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর মিডল ইস্টার্ন স্টাডিজের একজন গবেষক। তার এই নিবন্ধ বার্তাসংস্থা রয়টার্সের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে।)
তুরস্কের কর্তৃপক্ষ মনে করছে, তাকে হত্যা করা হয়েছে। তার মরদেহ সম্ভবত টুকরো টুকরো করে কনস্যুলেট ভবন থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে। একটি নিরাপত্তা সূত্রের বরাতে রয়টার্স জানিয়েছে যে, কিছু কর্মকর্তা সহ ১৫ জন সৌদি নাগরিকের একটি দল দুইটি বিমানে করে ইস্তাম্বুলে পৌঁছায়। খাসোগি যখন কনস্যুলেটে প্রবেশ করেন সেইদিনই ওই দলটি ভবনের ভেতর অবস্থান করে। এরপর তুরস্ক ছেড়ে চলে যায়। তুরস্কের একটি পত্রিকা জানিয়েছে, ওই দলের সদস্যদের চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে। তবে কনস্যুলেটের ভেতরের একটি সূত্র বলছে, খাসোগিকে ভবনের ভেতর অপহরণ বা হত্যা করা হয়েছে এমন অভিযোগ ভিত্তিহীন।
তুরস্কের কর্তৃপক্ষের বক্তব্য যদি সত্য হয়, তাহলে সৌদি রাষ্ট্র-অনুমোদিত এই খুন পুরো অঞ্চলে এক ধরনের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে। যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই যে সমালোচনা রয়েছে তা আরো তীব্র হবে। তিনি ২০১৭ সালের জুনে ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে ভিন্নমতাবলম্বীদের ওপর দমনপীড়ন চালিয়ে আসছেন। ধর্মীয় নেতা, বুদ্ধিজীবী ও অ্যাক্টিভিস্টদের পাশাপাশি রাজপরিবারের অভ্যন্তরেও তার সমালোচকদের তিনি গ্রেপ্তার করেছেন।
ইরান-সৌদি দ্বৈরথের প্রেক্ষাপটে, এই ঘটনা হবে তেহরানের জন্য রাজনৈতিক হাতিয়ার। বিদেশি নেতারা যখন মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতা এবং বিশৃঙ্খলা, মৃত্যু ও ধ্বংসের বীজ বোপনের অভিযোগে ইরানের সমালোচনা ক্রমেই বাড়াচ্ছিলেন, ঠিক তখন এই ঘটনায় ইরান নৈতিকভাবে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকবে।
মধ্যপ্রাচ্যে তেহরানকে একঘরে করতে সৌদি আরব হেন কিছু নেই, যা তারা করে নি। ২০১৭ সালে লেবানিজ প্রধানমন্ত্রী সাদ আল-হারিরিকে অবরুদ্ধ করা, ইরানের চির-প্রতিদ্বন্দ্বী ইসরাইলের সঙ্গে পরোক্ষ জোট গঠন করা এবং দেশটির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকায় কাতারকে শাস্তি দেয়া- কোনো কিছুই বাদ রাখেনি সৌদি আরব।
এসব প্রচেষ্টা থেকে প্রত্যাশিত লক্ষ্য অর্জিত হয় নি দেশটির। মাঝে মাঝে বিপরীত ফল বয়ে এনেছে। কিন্তু খাসোগিকে রাষ্ট্রীয় অনুমোদনে হত্যা করার বিষয়টি সুনিশ্চিত হয়ে গেলে সৌদি নেতৃবৃন্দের জন্য ইরানকে মধ্যপ্রাচ্যের চূড়ান্ত ভিলেন বানানোর কাজ কঠিন হয়ে যাবে।
এ বিষয়টি মার্কিন প্রশাসনের ওপরও আন্তর্জাতিক চাপ বৃদ্ধি করবে। ট্রাম্প প্রশাসন তরুণ এই যুবরাজের কথিত সংস্কার কাজের প্রতি সমর্থন দিয়েছে। তিনি যাতে ভবিষ্যতে রাজ সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হতে পারেন সেই মঞ্চ প্রস্তুত করতে সহায়তা দিয়েছে। বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্র পেয়েছে বিলাসী সব অস্ত্র চুক্তি আর কয়েক বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্রকল্প। সৌদি আরব সন্তুষ্ট ও লাভবান হয়েছে যখন ইরান পারমাণবিক চুক্তি থেকে এ বছরের মে মাসে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেন। ওয়াশিংটনের ইউরোপিয়ান মিত্ররা এতে অসন্তুষ্ট হলেও পাত্তা দেয়নি মার্কিন প্রশাসন।
মার্কিন প্রশাসনের এই সমর্থনের জোরেই রিয়াদ আমেরিকার ঐতিহ্যগত মিত্র কানাডার সঙ্গে কূটনৈতিক ও বাণিজ্য সম্পর্ক পর্যন্ত বিচ্ছিন্ন করেছে। এর কারণ ছিল স্রেফ কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ডের একটি টুইট, যেখানে তিনি দুই কারান্তরীণ সৌদি মানবাধিকার কর্মীর মুক্তি দাবি করেছিলেন।
এ ছাড়াও উন্নত অস্ত্রশস্ত্র ও জাতিসংঘ সহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোয় রাজনৈতিক সমর্থনের মাধ্যমে ট্রাম্প প্রশাসন ইয়েমেনে সৌদি-নেতৃত্বাধীন বিতর্কিত সামরিক অভিযানে সমর্থন দিয়েছে। ৯ই আগস্ট উত্তর ইয়েমেনের একটি স্কুলবাসে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের বিমান হামলায় ৪০ শিশু ও ১১ প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি নিহত হন। আহত হন ৭৯ জন যাদের ৫৬ জনই ছিল শিশু। সিএনএন এক প্রতিবেদনে জানায়, ওই হামলায় ব্যবহৃত অস্ত্রটি ছিল ৫০০ পাউন্ড ওজনের লেজার গাইডেড বোমা, যেটি বানিয়েছে মার্কিন প্রতিষ্ঠান লকহিড মার্টিন আর সরবরাহ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
ইয়েমেন যুদ্ধ ও ইয়েমেনি বেসামরিক নাগরিকদের ওপর সৌদি জোটের নৃশংসতার অন্যতম প্রণিধানযোগ্য সমালোচক ছিলেন খাসোগি। তার বিরুদ্ধে রিয়াদ যদি কোনো ব্যবস্থা নিয়ে থাকে, তাহলে রিয়াদকে সমর্থন দিয়ে যাওয়ার রাজনৈতিক মূল্য ওয়াশিংটনের জন্য নাটকীয়ভাবে বেড়ে যাবে।
খাসোগিকে অপহরণ বা হত্যার বিষয়টি সৌদি রাজপরিবারের নির্দেশে হয়েছে, এমনটা যদি নিশ্চিত হয়ে যায়, তাহলে সৌদি আরব ও দেশটির প্রতিদ্বন্দ্বী কাতারের মধ্যকার সম্পর্কেও প্রভাব ফেলবে। ২০১৭ সাল থেকে সন্ত্রাসবাদ সমর্থন দেয়ার অভিযোগে কাতারের ওপর বাণিজ্য ও কূটনৈতিক অবরোধ আরোপ করে রেখেছে সৌদি আরব। খাসোগির হত্যা কিংবা অপহরণের সঙ্গে সৌদি রাজপরিবারের সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হলে যুবরাজ মোহাম্মদের অধীনে সৌদি পররাষ্ট্রনীতির বেপরোয়া অবস্থার বিষয়টি তুলে ধরার বিরল সুযোগ পাবে কাতার।
এখানে বিশেষ গুরুত্বের দাবি রাখে যে তথ্য তা হলো, খাসোগি নিখোঁজ হয়েছেন তুরস্কে। যেটি কাতারের কট্টর মিত্র। কাতারের বিরুদ্ধে সৌদি অবরোধ শুরু হওয়ার পর সৌদি আক্রমণের সম্ভাবনা প্রবল হয়ে উঠার পর তুরস্কই দোহায় নিজেদের সৈন্য পাঠায়। দুই মুসলিম ব্রাদারহুড-ঘেঁষা সরকারের মধ্যকার রাজনৈতিক, সামরিক ও আদর্শিক সম্পর্ক বিবেচনায় নিলে বলতে হয়, তুরস্কের মাটিতে রাষ্ট্র-অনুমোদিত হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি নিয়ে আরো সোচ্চার হতে তুরস্ককে চাপ দিতে পারে কাতার।
আবার খাসোগির এই মর্মান্তিক ঘটনার রহস্য হয়তো কখনই সমাধা হবে না। তবে যদি সৌদি সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে এমন ব্যক্তিবিশেষ খাসোগিকে হত্যা বা অপহরণ করে থাকেন, তবে যুবরাজ মোহাম্মদকে এর চড়া পরিণতি ভোগ করতে হবে।
(মেসাম বেহরাবেশ সুইডেনের লুন্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর মিডল ইস্টার্ন স্টাডিজের একজন গবেষক। তার এই নিবন্ধ বার্তাসংস্থা রয়টার্সের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে।)