এক্সক্লুসিভ

রুপির বিপরীতে শক্তিশালী টাকা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

২০১৮-১০-১০

বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে ভারতীয় রুপির বিপরীতে শক্তিশালী অবস্থানে টাকার মান। সম্প্রতি টাকার সঙ্গে ভারতীয় রুপির বিনিময় হার প্রায় কাছাকাছি চলে এসছে। এখন এক টাকা ১৩ পয়সায় মিলছে এক রুপি। কয়েক মাস আগেও এক রুপি কিনতে খরচ করতে হতো এক টাকা ৩০ পয়সার বেশি।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ডলারের বিপরীতে রুপি যে হারে দর হারাচ্ছে, টাকার দরপতন হচ্ছে সে তুলনায় কম। এ কারণে রুপির সঙ্গে বিনিময়ে টাকা শক্তিশালী হচ্ছে। ভারতীয় রুপির বিপরীতে টাকা শক্তিশালী হওয়ায় রপ্তানিতে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও আমদানিতে কিছুটা লাভবান হতে পারে বাংলাদেশ।

গত বৃহস্পতিবার ভারতীয় রুপির মান বাংলাদেশি মুদ্রায় রেকর্ড সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে আসে। ওই দিন বাংলাদেশি ১১৩ টাকার বিপরীতে পাওয়া যায় ভারতীয় ১০০ রুপি। অর্থাৎ ১০০ টাকায় মিলেছে ৮৯ রুপি। বাংলাদেশি টাকার বিপরীতে রুপির এটি সর্বনিম্ন অবস্থান। গত রোববার রুপির মান ১ পয়সা বেড়ে বাংলাদেশি ১ টাকা ১৪ পয়সার বিপরীতে ১ রুপি পাওয়া যায়।

ভারতে বাংলাদেশে রপ্তানির তুলনায় আমদানির পরিমাণ অনেক বেশি। গত অর্থবছরে দেশের মোট আমদানি ৫ হাজার ৪৪৬ কোটি ডলার। আর মোট রপ্তানি তিন হাজার ৬৬৭ কোটি ডলারের। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য রয়েছে ৯০০ কোটি ডলারের বেশি। বাংলাদেশ থেকে গত অর্থবছরে ভারতে রপ্তানি হয়েছে মাত্র ৮৭ কোটি ৩৩ লাখ ডলারের পণ্য। ৮০০ কোটি ডলারের বেশি পণ্য সে দেশ থেকে আমদানি হয়েছে।

ইন্টারনেট মানি এক্সচেঞ্জ থেকে জানা যায়, ৪ঠা অক্টোবর এক ডলারের বিনিময়ে ভারতীয় মুদ্রার মূল্য দাঁড়ায় ৭৩.৬৬ রুপি। অথচ চলতি বছরের প্রথম দিনেও ১ মার্কিন ডলারের বিপরীতে পাওয়া যেত ৬৩.৮৮ রুপি। ফলে গত ১০ মাসের ব্যবধানে ডলারের বিপরীতে রুপির দাম কমেছে ১৫ শতাংশ। তবে ডলারের বিপরীতে টাকার মান ওই অনুপাতে না কমায় রুপি ও টাকার মান পাশাপাশি চলে আসছে। সর্বশেষ রোববার এক ডলারের বিনিময়ে ভারতীয় মুদ্রার মূল্য দাঁড়িয়েছে ৭৪.০৭ রুপি।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতীয় রুপির বিপরীতে বাংলাদেশি মুদ্রা টাকার মান বাড়লে রপ্তানি খাতে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও আমদানির ক্ষেত্রে লাভবান হবে বাংলাদেশ। তবে বাংলাদেশ থেকে ভারতে রপ্তানির তুলনায় আমদানির পরিমাণ বেশি হওয়ায় বাংলাদেশ লাভবান হওয়ার কথা। এ ছাড়া রুপি ও টাকার মান সমান কিংবা কাছাকাছি হলে বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর ভারতে চিকিৎসা কিংবা ভ্রমণ করতে যাওয়া ২০ লাখ লোক লাভবান হবেন। কারণ রুপি কিনতে তাদের টাকা কম লাগবে। এতে করে তাদের খরচও কম হবে। তারা জানান, রুপির যে হারে অবমূল্যায়ন হয়েছে সেই হারে টাকার অবমূল্যায়ন না হওয়ায় রুপির মান টাকার কাছাকাছি চলে এসেছে। এই অবস্থায় ভারত থেকে পণ্য আমদানিতে কিছুটা সুবিধা হলেও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে রপ্তানিতে।

অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, ভারতের মুদ্রা রুপির মান বাংলাদেশে টাকার কাছাকাছি চলে আসাটা আমাদের অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক। বিশেষ করে বাংলাদেশ ভারত থেকে রপ্তানির তুলনায় আমদানির পরিমাণ বেশি হওয়ায় আমরা লাভবান হবো।

ইন্টারনেট মানি এক্সচেঞ্জ সূত্রে জানা গেছে, ডলারের বিপরীতে পাল্লা দিয়ে বাংলাদেশের মুদ্রা বেশ শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে। রোববার বাংলাদেশি টাকার বিনিময় হার হলো ১ ডলার ৮৩ টাকা ৮৫ পয়সা, এক ভারতীয় রুপির সমপরিমাণ ১ টাকা ১৪ পয়সা, এক বৃটিশ পাউন্ড ১১২ টাকা ৭০ পয়সা, এক ইউরো ৯৯ টাকা ২৪ পয়সা ও এক সৌদি রিয়াল ২২ টাকা ৩৬ পয়সা। এ ছাড়া বাংলাদেশি এক টাকায় ১.৩৪ নেপালি রুপি ও ১.৯২ শ্রীলংকান রুপি পাওয়া যায়।
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status