বিশ্বজমিন

খাসোগি নিখোঁজ: ওয়াশিংটন পোস্টের সম্পাদকীয় পৃষ্ঠা ফাঁকা

মানবজমিন ডেস্ক

৯ অক্টোবর ২০১৮, মঙ্গলবার, ৩:১৮ পূর্বাহ্ন

সৌদি আরবের কলামনিস্ট, সাংবাদিক জামাল খাসোগি নিখোঁজ হওয়ার প্রতিবাদে সম্পাদকীয় পৃষ্ঠা ফাঁকা রেখে প্রকাশিত হয়েছে ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকা। খাসোগি এই পত্রিকার একজন প্রদায়ক। শুক্রবার ওয়াশিংটন পোস্টের সম্পাদকীয় পৃষ্ঠায় একটি শিরোনাম দেয়া হয়েছে ‘এ মিসিং ভয়েস’। এর উপরে ব্যবহার করা হয়েছে ফোনে আলাপরত খাসোগির ছবি। আর শিরোনামের নিচে খাসোগির নাম। এরপর ওই পৃষ্ঠায় দু’টি কলাম একেবারে ফাঁকা রাখা হয়েছে। উল্লেখ্য, গত সপ্তাহের মঙ্গলবার তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অবস্থিত সৌদি আরবের কনসুলেটে নিজের কাজে গিয়ে নিখোঁজ হন খাসোগি। তারপর থেকে বিষয়টি নিয়ে সারাবিশ্বে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। তুরস্কের কর্মকর্তারা অভিযোগ করছেন জামাল খাসোগিকে হত্যা করে মৃতদেহ সরিয়ে ফেলা হয়েছে কনসুলেট থেকে। তবে এ অভিযোগ একেবারেই অস্বীকার করেছে সৌদি আরব। এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পম্পেও। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ওয়াশিংটন পোস্ট ও বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
গত বছর ভিন্ন মতাবলম্বীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক ধরপাকড় শুরু হলে সৌদি আরব সরকারের কড়া সমালোচক জামাল খাসোগি চলে যান যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে বসবাস করতে থাকেন। তুরস্কের এক যুবতীকে বিয়ের কথা হয় তার। সে জন্য প্রয়োজনীয় কাগজ তুলতে তিনি ইস্তাম্বুলে যান সৌদি আরবের কনসুলেটে। তারপর থেকে তিনি নিখোঁজ। কেউই বলতে পারছেন না তিনি কোথায়। শুক্রবার ওয়াশিংটন পোস্টের গ্লোবাল অপিনিয়ন পৃষ্ঠায় লেখা হয়েছে শুধু কয়েকটি শব্দ। তাতে জামাল খাসোগিকে সৌদি আরবের সাংবাদিক, লেখক ও ওয়াশিংটন পোস্টের কলামনিস্ট হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়। ওয়াশিংটন পোস্টের নিচের দিকে এ কথা লিখে বলা হয়েছে, উপরে যে ফাঁকা জায়গাটি দেখা যাচ্ছে সেখানে খাসোগির লেখা থাকা উচিত ছিল। কিন্তু মঙ্গলবার বিকালে তিনি ইস্তাম্বুলে সৌদি আরবের কনসুলেটে প্রবেশের পর থেকে তার কোনো কথা আর শোনা যায় নি। ওদিকে, সাংবাদিক জামাল খাসোগি নিখোঁজের আগে সৌদি কনস্যুলেট থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন, সৌদি আরবের এমন দাবি প্রমাণের আহ্বান জানিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়্যিপ এদরোগান। এদিকে ওয়াশিংটনও সৌদি আরবকে এ বিষয়ে তদন্তে সাহায্য করার আহ্বান জানিয়েছে।   
সৌদি আরবের জনপ্রিয় সংবাদপত্রের সম্পাদক খাসোগির নিখোঁজ হবার বিষয়টি বিশ্বজুড়ে সকলের নজরে আসে। বিশেষ করে ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে তাকে হত্যা করা হয়েছে, তুরস্কের এমন দাবির পর বিষয়টি বিশ্ব মিডিয়ায় ব্যাপক আলোচিত হচ্ছে।
বুদাপেস্টে একটি সম্মেলন শেষে এদরোগান জানান, আমাদের যত দ্রুত সম্ভব এই তদন্তের একটি ফলাফলে আসতে হবে। খাসোগি কনস্যুলেট থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন, শুধু এ কথা বলে তারা নিজদেরকে সুরক্ষিত রাখতে পারে না। এদরোগান নিজেও ঘটনার তদন্তকাজ পর্যবেক্ষণ করছেন জানিয়ে বলেন, তুরস্কের কাছে এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য প্রমাণাদি নেই।
এদিকে  সৌদি কনস্যুলেটের একটি সূত্র খাসোগিকে হত্যা করা বা তাকে অপহরণ করার অভিযোগ পুরোপুই ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে।   
সৌদি ক্রাউন প্রিন্সের ভাই এবং সৌদি রাষ্ট্রদূত যুক্তরাষ্ট্রকে একই দাবি করে জানিয়েছেন, তদন্তকাজে সহায়তা করার জন্য তুরস্কের অনুমতিতে সৌদি আরবের পক্ষ থেকে একটি নিরাপত্তা দল তুরস্কের পাঠানো হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প এ বিষয়ে জানিয়েছেন, এ নিয়ে আমি খুবই উদ্বিগ্ন। আশা করি এটা খুব তাড়াতাড়িই সমাধান হয়ে যাবে। এখন এ বিষয়ে কেউ কিছু জানে না। তবে কিছু অপ্রীতিকর গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে, যা আমি একদমই পছন্দ করছি না।  
যুক্ত্রাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও জানান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে রিয়াদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। খাসোগির নিখোঁজ তদন্তে সৌদি আরবের সহায়তা করার আহ্বান জানানো হয়েছে। যাতে করে তদন্ত প্রতিবেদনটি স্বচ্ছ হয়।
ভাইস প্রেসিডেন্ট পাইক পেন্স এক টুইট বার্তায় জানিয়েছেন, বিশ্বজুড়ে সাংবাদিকদের উপর হামলার ফলে সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা এবং মানুষের অধিকার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পুরো বিশ্ব একটা উত্তর আশা করে।  
প্রসঙ্গত, এর আগে গত বছর ইয়েমেন যুদ্ধে সৌদির নীতি নিয়ে সমালোচনা করছিলেন খাসোগি। এরপর তিনি ভয়ে দেশ ত্যাগ করেছেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status