ষোলো আনা

যৌতুক না পেয়ে কিডনি বিক্রি

ষোলো আনা ডেস্ক

৫ অক্টোবর ২০১৮, শুক্রবার, ৯:২০ পূর্বাহ্ন

রীতা সরকার, বয়স আনুমানিক ৩০। প্রতিটি মেয়ের জীবনের মতো তিনিও স্বপ্ন দেখেছিলেন সুখে-শান্তিতে ঘর বাঁধার। অভাবী বাবা অনেক অর্থ ব্যয় করে জাঁকজমকপূর্ণভাবে বিয়ে দিয়েছিলেন একমাত্র মেয়ের। ভারতের মুর্শিদাবাদের মেয়ে তিনি। বছর দুয়েক আগে মুর্শিদাবাদেই আরেক গ্রামে বিয়ে হয় তার।

স্বামীর নাম বিশ্বজিৎ। সুখেই কাটছিল তাদের সংসার। বিশ্বজিতের বাড়ির চাহিদা অনুযায়ী ২ লাখ টাকা দিয়েও ছিল রীতার পরিবার। কিন্তু তাতেও তুষ্ট হয়নি শ্বশুর বাড়ির লোকজন। আরো টাকার জন্য রীতাকে চাপ দিতে থাকে। চাপ দিয়ে কাজ না হওয়ায় শুরু হয় শারীরিক নির্যাতন। রীতার বাবা জমি বিক্রি করে ফের দেন ১ লাখ টাকা। আবার টাকার জন্য নির্যাতন শুরু হয় তার ওপর। গরিব বাবার কথা চিন্তা করে রীতা মুখ বুঝে সহ্য করে যায় অত্যাচার। নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়েও যখন কাজ হচ্ছিল না, তখন রীতা রানী হঠাৎ খেয়াল করেন তার স্বামী আর খারাপ আচরণ করছে না। রীতা ভাবেন সুখ ফিরে এলো তার জীবনে।

হিন্দুস্থান টাইমসকে দেয়া এক সাক্ষৎকারে রীতা জানান, একদিন হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়ি। চিকিৎসার জন্য তার স্বামী কলকাতা নিয়ে যায়। ডাক্তার জানান, অ্যাপেন্ডিক্সের অস্ত্রোপচার করা দরকার। কিন্তু রীতা তখন জানতো না তার কপালে কী ভয়াবহ ঘটনা অপেক্ষা করছে। অস্ত্রোপচার শেষে তারা মুর্শিদাবাদ ফিরে আসেন। কিছুদিন পর পেটে ব্যথা অনুভব করেন রীতা। বিশ্বজিৎ ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে অস্বীকৃতি জানায়। এমনকি অসুস্থ অবস্থায় মারধর করে ঘরে বন্দি করে রাখে। মাসখানেক পর রীতা তার এক আত্মীয়ের সহায়তায় ডাক্তারের কাছে গিয়ে আলট্রাসনোগ্রাফি করান। এই পরীক্ষার ফলাফলে উঠে আসে ভয়াবহ তথ্য। অ্যাপেন্ডিক্সের অস্ত্রোপচারের নামে আসলে তার কিডনি বিক্রি করে দেন তার স্বামী। ঘটনার পর রীতার বাবা বিশ্বজিৎ ও তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেন।

এখন বিশ্বজিতের অবস্থান জেলে আর এক কিডনি নিয়ে সাবধানী জীবন কাটাচ্ছেন হতভাগী রীতা সরকার।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status