ফেসবুক ডায়েরি
কর্তৃত্ববাদী শাসনের বিরুদ্ধে জনরায়
আলী রীয়াজ
২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮, শনিবার, ৯:২৭ পূর্বাহ্ন
মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিরোধী দলের প্রার্থী ইব্রাহিম সলিহ’র বিজয়কে মোটাদাগে দুইভাবে বিবেচনা করা যায়। একভাবে বলা যায় যে, এই নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আব্দুল্লাহ ইয়ামিনের পরাজয় হচ্ছে কর্তৃত্ববাদী শাসকের বিরুদ্ধে জনরায়। ক্ষমতায় থেকে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ, বিরোধীদের নির্বিচার দমন-পীড়ন, আদালতের ওপর নিয়ন্ত্রণ করেও মানুষের গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষাকে দমিয়ে রাখা যায়নি। ইয়ামিনের সরকার ‘উন্নয়ন’কেই গণতন্ত্রের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছিল, শেষ দিনগুলোতে ধর্মের ব্যবহারে কুণ্ঠিত হয়নি। মালয়েশিয়ার পরে মালদ্বীপেও আমরা দেখলাম দুর্নীতিপরায়ণ সরকারের পতন ঘটলো। অন্যভাবে বললে বলা যায় যে, এই ফলাফল হচ্ছে এই অঞ্চলে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের প্রত্যাখ্যান। ইয়ামিন চীনের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। এই ফলাফল ভারতের জন্য সামান্য হলেও স্বস্তিদায়ক, কেননা দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ ছাড়া ভারতের কোনো ‘মিত্র’ নেই। এখন অন্তত চীনের একটি মিত্র কমলো। সলিহ ভারতের সঙ্গে কতটা ঘনিষ্ঠ হবেন তা দেখার বিষয় থাকলো। মালদ্বীপের ভোটাররা আঞ্চলিক রাজনীতির এই হিসেবে-নিকেশ বিবেচনায় নিয়েছেন কি না সে বিষয়ে কোনো তথ্য বা জরিপ আমার জানা নেই, কিন্তু নির্বাচনী প্রচারাভিযানের খবরাদিতে স্পষ্ট তারা কর্তৃত্ববাদের বিরুদ্ধে নাগরিকের অধিকার ও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার বিষয়েই আগ্রহী ছিলেন। সারা বিশ্বে গণতন্ত্রের ভাটার টানের সময়ে একে সামান্য হলেও সুসংবাদ বলতে হবে।