বিশ্বজমিন

জাতিসংঘে ট্রাম্পের অতিকথন, হাসলেন শ্রোতারা (ভিডিওসহ)

মানবজমিন ডেস্ক

২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, বুধবার, ১১:২৫ পূর্বাহ্ন

জাতিসংঘের অধিবেশনে অকস্মাৎ হাসি। তীব্র শব্দে হাসি। অপ্রত্যাশিত এ ঘটনা। এমনটা সচরাচর ঘটে না। কিন্তু তাই ঘটেছে যখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প বিশ্বনেতাদের সামনে বক্তব্য রাখছিলেন। তার বক্তব্যের ভিডিও ক্লিপ অনলাইনে কোটি কোটি দর্শকের মধ্যে আগ্রহের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। ট্রাম্প যখন অধিবেশনে বিশ্বনেতাদের সামনে বলেন, দু’বছরেরও কম সময়ে আমার সরকার এতটা বেশি কাজ করেছে যা আমার দেশের ইতিহাসে আর কোনো প্রশাসন করতে পারে নি।
তার এ কথায় হাসিতে ফেটে পড়েন বিশ্বনেতারা, উপস্থিত শ্রোতারা। এ সময় ট্রাম্প কৌতুক করতে ছাড়েন নি। তিনি বলেন, এমন প্রতিক্রিয়া তিনি প্রত্যাশা করেন নি। পরে যখন তিনি জাতিসংঘ চত্বর ত্যাগ করেন তখন সাংবাদিকদের বলেন যে, তিনি আসলে মজা করতে চেয়েছেন। এ বিষয়ে ট্রাম্প বলেন, ওহ এটা তো ছিল চমৎকার। এটা ছিল কিছু হাসির জন্য। তাই এটা গ্রেট বিষয়।
তা সত্ত্বেও জাতিসংঘের অধিবেশনে আলোচনা হয়েছে যুদ্ধ ও শান্তি, সমৃদ্ধি ও দারিদ্র্য, দুর্ভিক্ষ ও প্রাচুর্য্য সহ বিভিন্ন বিষয়ে। এ সময় অনেক নেতাকে মুখে হাত দেখা গেছে। তবে আরো কিছু মুহূর্ত এসেছিল সাধারণ অধিবেশনে, যা হতাশ করেছে অনেককে। এখানে তার কিছুটা তুলে ধরা হলো।
ক্রুশ্চেভের জুতো
সোভিয়েত নেতা নিকিতা ক্রুশ্চেভ। ১৯৬০ সালে কিছু মানুষ বাঁকা চোখে তার দিকে তাকালেও তিনি অনেক কিছু করেছেন। যখন শীতল যুদ্ধ তীব্র হয়ে উঠেছে তখন তিনি উন্মত্ততায় তার জুতো রাখলেন ডেস্কের ওপরে। পূর্ব ইউরোপিয়ানদের স্বাধীনতায় বিধিনিষেধ আরোপ করেছে এই অভিযোগে ফিলিপাইনের একদল প্রতিনিধি যখন মস্কোর সমালোচনা করে তখন এ ঘটনা ঘটেছিল। পরে তার দাদা লিখেছিলেন, তিনি নতুন জুতা পরেছিলেন এবং তা ছিল টাইট। তাই তা তাকে খুলতে হয়েছিল, যখন তিনি বসা ছিলেন। তাই তাকে জুতা তুলতে হয়েছিল টেবিলের ওপর।
ইয়াসির আরাফাত ইস্যু
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার অকুতোভয় নেতা ছিলেন ইয়াসির আরাফাত। এই স্বাধীনতা যুদ্ধে অসংখ্য মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। বহু মানুষ নিহত হয়েছে। ১৯৭৪ সালে তাকে প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের (পিএলও) প্রতিনিধিত্ব ও বিশ্বের কাছে এ সংগঠনকে তুলে ধরতে আমন্ত্রণ জানানো হয়। পিএলও’র হয়ে তিনি এটা পরিষ্কার করেন যে, যেকোনো মূল্যে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্রের মর্যাদা দিতে হবে। তিনি নির্যাতিত মানুষের পক্ষে এবং স্বাধীনতার পক্ষে কথা বলেছেন। তিনি তার ট্রেডমার্ক পোশাক পরতেন। এটাকে ফিলিস্তিনে বলা হয় কেফিয়েহ স্কার্ফ।
ক্যাস্ত্রোর দীর্ঘ বক্তৃতা
জাতিসংঘে অনেক বক্তব্য দিয়েছেন কিউবার প্রয়াত নেতা ফিদেল ক্যাস্ত্রো। এতে তার দেশে বাইরের চাপ সম্পর্কে কথা বলেন। এক পর্যায়ে জাতিসংঘ নেতাদেরকে তাদের বক্তব্য সংক্ষিপ্ত করতে বলে। কিন্তু এ কথা ফিদেল ক্যাস্ত্রোর জন্য কখনো ঘটেনি। ১৯৬০ সালে তিনি সাধারণ অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন এবং তাতে সময় নেন সাড়ে চার ঘণ্টা। সেনাবাহিনীর সবুজ মার্কাযুক্ত পোশাকে ক্যাস্ত্রো বলেন, ওই সময় থেকে ২০ মাস আগে তিনি যে বিপ্লবের সূচনা করেছেন তাতে তাতে তার দেশ যুক্তরাষ্ট্রের একটি কলোনির মর্যাদামুক্ত হয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র এখনও বিশ্বাস করে এখনও তারা আমার দেশের ভিতর রাষ্ট্রদ্রোহতাকে উৎসাহিত করে এবং অনুমোদন করে। ওই বক্তব্যে ক্যাস্ত্রো সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে কিউবার যুক্ত থাকার পক্ষে কথা বলেন। একই বক্তব্যে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের তখনকার প্রেডিসডেন্ট জন এফ কেনেডিকে অশিক্ষিত এবং দম্ভ মিলিয়নিয়ার বলে আখ্যায়িত করেন।
গাদ্দাফির মুক্তভাব
লিবিয়ার প্রয়াত নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফিও জাতিসংঘে বক্তব্য রেখেছেন এবং আলোচিত হয়েছেন। তিনি ২০০৯ সালে এ সংস্থায় ১ঘন্টা ৪০ মিনিট বক্তব্য রাখেন। এ সময় তার পরনে ছিল বাদামি রঙের বেদুইন আলখাল্লা ও কালো টুপি মাথায়। কয়েক ডজন যুদ্ধ প্রতিরোধে ব্যর্থতার জন্য তিনি জাতিসংঘের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ইরাকে যারা গণহত্যা করছে তাদের বিচার হতে হবে। তালেবানরা যে ইসলামিক একটি আমিরাত প্রতিষ্ঠা করতে চায় তার পক্ষে কথা বলেন তিনি। এক পর্যায়ে তিনি জাতিসংঘ সনদের একটি কপি দোলান এবং দৃশ্যত তা ছিড়ে ফেলবেন বলে মনে হয়। বলেন, তিনি স্বীকৃতি কতৃত্বকে মানেন না। পরের দিন তখনকার বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউন জাতিসংঘে বলেন, আমি জাতিসংঘ সনদের পক্ষে। এটা ছিড়ে ফেলার পক্ষে নই।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status