বাংলারজমিন
শখের টার্কি মুরগি পালনে সচ্ছলতা
ঘাটাইল (টাঙ্গাইল) সংবাদদাতা
২১ সেপ্টেম্বর ২০১৮, শুক্রবার, ৮:৪০ পূর্বাহ্ন
শখের বশে টার্কি জাতের মুরগি পালন করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন ঘাটাইল উপজেলার সাগরদীঘি গ্রামের আ. কাদের মিয়া। সংসারে এসেছে সচ্ছলতা। এ পরিবারের সচ্ছলতা দেখে এলাকার অনেক বেকার যুবক এখন টার্কি পালনে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে। বিনা ভ্যাকসিনে, স্বল্প বিনিয়োগে, অল্প জায়গায় এই টার্কি মুরগি পালন করা যায়। আ. কাদের ২০১৬ সালে তার বসতভিটার আঙিনায় গড়ে তোলেন টার্কি মুরগির ছোট্ট খামার। আ. কাদের পেশায় একজন দর্জি। কাজের পাশাপাশি স্ত্রী পূর্ণিমার সহযোগিতায় শখ করে গড়ে তুলেছেন টার্কির খামার। প্রথমে ১০টি টার্কির বাচ্চা দিয়ে শুরু করেন। এখন তার খামারে রয়েছে ছোট বড় ১৫০ টার্কি মুরগি। আ. কাদের ও স্ত্রী পূর্ণিমার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, টার্কি মুরগি পালনে তেমন কোনো ঝামেলা নেই। রোগবালাইও খুব কম হয় এবং এর মাংসও খুব সুস্বাদু। আমাদের খামারে এখন ১০০ বড় টার্কি রয়েছে। এদের ২০টি মুরগি এখন ডিম দিচ্ছে। প্রতি হালি ডিম ৩০০-৪০০ টাকা করে বিক্রি হয়। এ ডিম সংগ্রহ করে ইনকিউবেটর যন্ত্রের সাহায্যে বাচ্চা ফুটানো হয়। এ পদ্ধতিতে বাচ্চা ফুটাতে ২৬-২৭ দিন সময় লাগে। একটি টার্কির বাচ্চা ডিম পাড়ার উপযোগী হতে সময় লাগে ৭-৮ মাস। প্রতিটি বাচ্চা ৩০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করে থাকি। পূর্ণিমা আরো বলেন, গত দুই মাসে প্রায় ৩০,০০০ টাকার মতো ডিম বিক্রি করেছি। তাছাড়া প্রতি মাসে ৫-৬টি বড় টার্কি বিক্রি করেছি। ডিম পাড়ার উপযোগী প্রাপ্ত বয়স্ক একটি টার্কি মুরগির দাম ৩-৫ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। টার্কি মুরগি পালন করে আমাদের সংসার এখন আলোর মুখ দেখছে। সংসারে কোনো অভাব নেই। সংসারের সব খরচ চালিয়েও বাড়তি সঞ্চয় করতে পারছি। প্রতিদিন অনেক লোকজন আসে টার্কি মুরগি দেখতে। অনেকেই উৎসাহিত হচ্ছেন টার্কির খামার করার জন্য। টার্কি পালনে দামি কোনো খাবার বা অতিরিক্ত সময় ব্যয় করতে হয় না। টার্কি মুরগি শস্যদানা, শস্যবীজ, কচি ঘাস, শাকসবজি, ফলমূল, পোকামাকড় ও লতাপাতা খেয়ে জীবন ধারণ করে থাকে। তাই খাবারেরও তেমন কোনো ঝামেলা নেই। আ. কাদের মিয়া বলেন, আমাদের দেশের বেকার যুবকরা বাড়ির আঙিনায় বা পুকুর পাড়ে স্বল্প পরিসরে টার্কি পালন করতে পারেন। এতে কম বিনিয়োগে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি। ঘাটাইল উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আবদুল মান্নান জানান, টার্কি এক ধরনের মুরগি। টার্কির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা একটু বেশি। তাই এর রোগবালাই কম এবং যেকোনো পরিবেশের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে। বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় এ মুরগি এখন বাণিজ্যিকভাবে পালন করা হচ্ছে। বর্তমানে টার্কি পালন লাভজনক হওয়ায় অনেক বেকার যুবক টার্কি পালনে উৎসাহিত হচ্ছেন।