বাংলারজমিন
শ্রীপুরে দরিদ্র মুক্তার ভাগ্যে জোটেনি প্রতিবন্ধী ভাতা
এনামূল হক আকন্দ, শ্রীপুর (গাজীপুর) থেকে
২১ সেপ্টেম্বর ২০১৮, শুক্রবার, ৮:৩৯ পূর্বাহ্ন
সারাক্ষণ চুপচাপ বসে থাকে মুক্তা আক্তার। ১৯ বছর বয়সী মুক্তার জন্মটাই যেন অভিশাপ। পুরো শরীর অসাড়। হাত-পা নাড়তে পারে না সে। দুই বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে মুক্তা সবার ছোট। বাবা গত হয়েছেন ১৭ বছর হলো। প্রতিবন্ধী এই মেয়েকে নিয়ে প্রতিদিন দরিদ্রতার সঙ্গে যুদ্ধ করে যাচ্ছেন তেলিহাটি ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মা হোসনারা। হোসনারা জানান, জন্ম থেকেই মুক্তা প্রতিবন্ধী। তার বয়স বাড়তে থাকলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গও অসাড় হতে থাকে। সারাদিন সে বাড়ির উঠানে বসে থাকে। তার মুখে কোনো কথা নেই। এমন নিষ্প্রভ চাহনি দেখলে বুক ভেঙে যায়। চার সন্তানের মধ্যে মুক্তার জন্মের পরই তার পুরো পরিবারের ওপর একধরনের কষ্ট নেমে আসে। এর মধ্যে ২০০১ সালে স্বামীর মৃত্যু হয়। অভাবের সংসারে আকাশ ভেঙে পড়ে তখনি। কিভাবে সংসার চলবে তা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন তিনি। নিজের সংসার চালাতে তাই মানুষের বাড়িতে কাজ শুরু করেন হোসনারা। এর মধ্যে বড় তিন সন্তান সংসার পেতে আলাদা থাকছে। প্রতিবন্ধী মুক্তাকে নিয়ে এখন চলছে মায়ের জীবনযুদ্ধ। তিনি বলেন, আমার সন্তান প্রতিবন্ধী। সরকার প্রতিবন্ধীদের জন্য ভাতা দেয় জেনে ইউনিয়ন পরিষদে গিয়েছি বহুবার। কিন্তু তারা আমার মেয়ের জন্য ভাতার ব্যবস্থা করেননি। ভাতা দেয়ার কথা বলে বহুবার আমাদের ওয়ার্ড মেম্বারের কাছে ঘুরেছি। তিনি আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়ন করেননি। তিনি বলেন, ‘অন্যের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালাতে পারতাম কিন্তু আমার প্রতিবন্ধী সন্তানকে আমি কার কাছে রেখে যাব’। তেলিহাটি ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড সদস্য আফসার উদ্দিন মানবজমিনকে জানান, এই প্রতিবন্ধীর পরিবার আমার কার্যালয় থেকে অনেক দূরে। এ জন্য হয়তো সে ভাতা পায়নি। ইদানিং সে আমার কার্যালয়ে এসেছে। কিন্তু ভাতা দেয়ার তো একটা নির্দিষ্ট সময় থাকে। আগামী তালিকায় তাকে সংযুক্ত করা হবে।