শেষের পাতা

দেশে-বিদেশে শহিদুল আলমের মুক্তি দাবি

মানবজমিন ডেস্ক

২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ১০:০৬ পূর্বাহ্ন

জেলবন্দি বাংলাদেশি ফটোসাংবাদিক ড. শহিদুল আলম ও আটক শিক্ষার্থীদের মুক্তির দাবিতে দেশে ও বিদেশে প্রতিবাদ বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। কয়েক সপ্তাহ আগে কিছুসংখ্যক শিক্ষার্থী জামিন পেয়েছেন। তবে এখনো অজ্ঞাত সংখ্যক আটক আছেন। এরই মধ্যে শহিদুল আলমের মুক্তি দাবি করেছে বেশ কিছুসংখ্যক আন্তর্জাতিক এজেন্সি, নোবেল বিজয়ী, ফটোসাংবাদিক, সাংবাদিক ও মানবাধিকার সংগঠন। এর মধ্যে তার মুক্তি দাবি করে দ্বিতীয়বার বিবৃতি দিয়েছেন ভারতের সুপরিচিত লেখিকা অরুন্ধতী রায়, আমেরিকার নোয়াম চমস্কি, কানাডার লেখক নোয়ামি ক্লেইন, আমেরিকার প্লেরাইট ইভ এনস্লার, ভারতীয় সাংবাদিক বিজয় প্রসাদ। তারা শহিদুল আলমের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ বাতিল করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ সরকারের কাছে। শহিদুল আলমকে ‘অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল প্রিজনার অব সনসায়েন্স’ বা বিবেকের বন্দি হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। এ  খবর দিয়েছে অনলাইন গ্লোবাল ভয়েস।

গ্লোবাল ভয়েস লিখেছে, শহিদুল আলমকে আটক করা হয় ৫ই আগস্ট। আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয় পরের দিন। তার বিরুদ্ধে আইসিটি আইনের অধীনে মামলা করা হয়। ২৮শে আগস্ট তার জামিন আবেদন করেন তার আইনজীবীরা। ৪ঠা সেপ্টেম্বর হাই কোর্টের দুই সদস্যের বেঞ্চ এ নিয়ে শুনানিতে বিব্রতবোধ করেন। বাংলাদেশে বিচারিক ক্ষেত্রে বিচারকরা মাঝে মাঝে বিব্রতবোধ করেন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ বিচারের ক্ষেত্রে। বিশেষ করে যদি সেটা হয় কোনো সুপরিচিত ব্যক্তির বিরুদ্ধে, সরাসরি বা প্রত্যক্ষভাবে, অথবা যদি তারা আতঙ্ক বোধ করেন যে, তাদের হুমকি বা ভয়ভীতি দেখানো হবে তাহলে এমন বিব্রতবোধ করেন। শহিদুল আলমের আইনজীবীরা আপিল করেছিলেন হাইকোর্টের কাছে। সেখান থেকে তাদের পাঠানো হয়েছিল নিম্ন আদালতে।

ফেসবুকে ও টুইটার অ্যাকাউন্টে বাংলাদেশের অকার্যকর ট্রাফিক আইনের বিরুদ্ধে ছাত্রবিক্ষোভের খবর প্রকাশ করার কারণে শহিদুল আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া তিনি ফেসবুক লাইভে ওই বিক্ষোভ সম্পর্কে আলোচনা করেছিলেন। এর বাইরে শহিদুল আলম আল জাজিরা টেলিভিশনকে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন। সেখানে তিনি ওই সময়ের চলমান ছাত্রবিক্ষোভ নিয়ে কথা বলেন। সমালোচনা করেন সরকারের। দু’জন শিক্ষার্থী বেপরোয়াভাবে চালানো বাসের নিচে পড়ে মারা যাওয়ার পর নিরাপদ সড়কের দাবিতে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের হাজার হাজার শিক্ষার্থী ঢাকার রাজপথে নেমে আসে ২৯শে জুলাই। সেই বিক্ষোভ অব্যাহত থাকে এক সপ্তাহের বেশি।

৪ঠা সেপ্টেম্বর দৃক গ্যালারিতে শহিদুল আলমের নির্বাচিত কিছু ছবি নিয়ে একটি প্রদর্শনী হয়। এর শিরোনাম ‘এ স্ট্রাগল ফর ডেমোক্রেসি’ অর্থাৎ গণতন্ত্রের জন্য লড়াই। ২৯ বছর আগে তিনি এই গ্যালারি প্রতিষ্ঠা করেছেন। তার সংগ্রাম ও সম্মানকে ফুটিয়ে তোলার জন্য এর আয়োজন করা হয়। এ ছাড়া শহিদুল আলম প্রতিষ্ঠা করেন পাঠশালা সাউথ এশিয়ান মিডিয়া ইনস্টিটিউট ও ছবি মেলা। ৯ই সেপ্টেম্বর রাজধানীর শাহবাগে শহিদুল আলম ও শিক্ষার্থীদের আটক রাখার প্রতিবাদে একটি জনসমাবেশ হয়। এর শিরোনাম ‘লেট ডেমোক্রেসি বি ফ্রি’ অর্থাৎ গণতন্ত্রকে স্বাধীনতা দেয়া হোক। লন্ডন, নিউ ইয়র্ক ও ওয়াশিংটন ডিসির মতো শহরেও এই বিক্ষোভের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে বিক্ষোভ হয়েছে। শহিদুল আলমের ভাতিজি সোফি করিম বসবাস করেন লন্ডনে।

চাচাকে আটকের প্রতিবাদে তিনি ইন্সটাগ্রামে সক্রিয় থেকে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তার ইন্সটাগ্রামের অ্যাকাউন্টে প্রতিবাদ জানিয়ে বহু আর্ট বা ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। এ ছাড়া তিনি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন বিবিসিতে। শহিদুল আলমকে জামিন না দেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন লন্ডনভিত্তিক বাংলাদেশি আইনি পরামর্শক ড. রায়হান রশিদ।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status