দেশ বিদেশ
ঢাবিতে বিএনপি-জামায়াতপন্থি শিক্ষকদের মানববন্ধন
খালেদার সুচিকিৎসা ও নিঃশর্ত মুক্তি দাবি
বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার
২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ৯:৪৫ পূর্বাহ্ন
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করে অবিলম্বে তার মুক্তি দাবি করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপি-জামায়াতপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল। এসময় সাদা দল শিগগিরই প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ করে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করার দাবি করে। গতকাল বেলা ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে এই মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমানের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ড. সদরুল আমিন, অধ্যাপক ড. আখতার হোসেন খান, অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. সুকোমল বড়ুয়া, অধ্যাপক ড. ছিদ্দিকুর রহমান খান, ড. মহিউদ্দিন, অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান, অধ্যাপক ড. আবদুর রশিদ, অধ্যাপক ড. গোলাম রাব্বানী, অধ্যাপক নুরুল আমিন, অধ্যাপক আতাউর রহমান বিশ্বাস, ইস্রাফিল প্রামাণিক রতন প্রমুখ। মানববন্ধনে সাদা দলের সাবেক আহ্বায়ক ইংরেজি বিভাগের সংখ্যাতিরিক্ত অধ্যাপক ড. সদরুল আমিন বলেন, সম্পূর্ণ মিথ্যা মামলায় খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়ে কারাবন্দি করেছে। আমি তার অবিলম্বে মুক্তি ও তার পছন্দমাফিক হাসপাতালে সুচিকিৎসা দেয়ার দাবি জানাই। আরেক সাবেক ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম বলেন, সরকার আবারো যেনতেনভাবে নির্বাচন করার জন্যই খালেদা জিয়াকে বন্দি করেছে মিথ্যা মামলায়। তিনি অসুস্থ। আজকে পুলিশ মৃত ব্যক্তিকেও মিথ্যা মামলায় আসামি করছে। কিন্তু দেশবাসী এই গণতন্ত্র চায় না। অবিলম্বে এসব বন্ধ করে দেশনেত্রীকে মুক্তি দিন। দেশে শান্তিময় পরিবেশ তৈরি করুন। অবিলম্বে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবি করছি। যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আজ পর্যন্ত দেশের যেকোনো ক্রান্তিলগ্নে দাঁড়িয়েছে। আজও দাঁড়িয়েছে। মিথ্যা মামলায় কারান্তরীণ দেশনেত্রীর মুক্তির দাবিতে। সাবেক আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আকতার হোসেন খান বলেন, আমরা কোনো রাজনৈতিক দলের অঙ্গ সংগঠন নই। যেখানে অন্যায় দেখি সেখানেই আমরা প্রতিবাদ- প্রতিরোধের চেষ্টা করি। আজ খালেদা জিয়া একজন বয়স্ক মহিলা, যিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী। মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে তাকে কারাবন্দি করা হয়েছে। এটা জুলুম। আমরা মানবিক কারণে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবি করছি। তাকে তার পছন্দের হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন। সেই সঙ্গে দেশে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করণের দাবি জানাই। হামলা-মামলা বন্ধ করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে করা একটি মিথ্যা মামলায় বেগম খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়ে কারাবন্দি করা হয়েছে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় তাকে আজ আট মাস ধরে কারাবন্দি করে রাখা হয়েছে। অথচ তিনি এ ট্রাস্টের সঙ্গে কোনোভাবেই সম্পৃক্ত ছিলেন না। বেনিফেশিয়ারি ছিলেন না। এ ট্রাস্টের অর্থের মধ্যেও আজ পর্যন্ত কোনো হেরফের হয়নি। অথচ এ মামলায় তিনি আজ কারান্তরীণ। তিনি ভীষণ অসুস্থ। এরই মধ্যে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা পরিচালনার জন্য অসাংবিধানিকভাবে কারাগারে আদালত বসানো হয়েছে। তবে তিনি কিন্তু মনোবল হারাননি। আমরা অবিলম্বে তার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি এবং বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়ার অনুরোধ করছি। অধ্যাপক ড. সুকোমল বড়ুয়া বলেন, আজকে দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি ও চিকিৎসার জন্য মানববন্ধন করতে হয়। কারণ তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী। কারাগারে খুবই অসুস্থ। আমি প্রতিহিংসার রাজনীতি বন্ধ করে তার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি। নির্বাচনের আগেই তার মুক্তি চাই যাতে তিনি ভোটে অংশগ্রহণ করতে পারেন। সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম বলেন, দেশ আজ গভীর সংকটে নিপতিত। বাকস্বাধীনতা নেই। হামলা, মামলা ও দুঃশাসনের রাজনীতি চলছে। গণতন্ত্র নেই। তারই উদাহরণ দেশের সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া মিথ্যা মামলায় কারাগারে বন্দি। আমরা তার নিঃশর্ত মুক্তি ও বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়ার দাবি জানাই। আর একমাস পর দেশের বর্তমান অবস্থা থাকবে বলে মনে হয় না। তাই সংসদ ভেঙে দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন।