বাংলারজমিন

ঝিনাইদহে সিসি ক্যামেরা বসানোর পরও থামছে না চুরি

আমিনুল ইসলাম লিটন, ঝিনাইদহ থেকে

২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ৮:১৮ পূর্বাহ্ন

সিসি ক্যামেরায় চোর ধরে, কিন্তু পুলিশ চোর শনাক্ত করতে পারে না। এমন ঘটনা ঘটছে ঝিনাইদহ শহরসহ বিভিন্ন দোকানপাট ও বাসা বাড়িতে। এ সব প্রতিষ্ঠানে বসানো ৬ শাতাধিক সিসি ক্যামেরা থাকার পরও চুরি হচ্ছে। চোরদের মুখমণ্ডল ও পোশাক পরিচ্ছেদ দেখা যাচ্ছে স্পষ্টভাবে। এসব ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের ও ভিডিও ফুটেজ জমা দেয়া হচ্ছে। কিন্তু সিসি ক্যামেরার আওতায় চুরি হওয়া কোনো আসামিকেই গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এতে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ব্যবসায়ীরা। তদন্ত কর্মকর্তাদের সদিচ্ছার অভাবেই আসামি গ্রেপ্তার হয়নি- এমনটি মনে করেন ক্ষতিগ্রস্ত দোকানদাররা। তবে দ্রুত আসামি গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিলু মিয়া বিশ্বাস। এআর অটো। ঝিনাইদহ শহরের ব্যাপারীপাড়া জোড়া পুকুর এলাকায় অবস্থিত। গত ৫ই জুন দুর্ধর্ষ চুরি সংঘটিত হয়। কয়েক মিনিটের মধ্যে চোররা ট্রাক নিয়ে দোকানের প্রায় ৮-১০ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে চম্পট দেয়। সিসি ক্যামেরায় স্পষ্ট দেখা যায়। কিন্তু ৩ মাস পেরিয়ে গেলেও চোর ধরা পড়েনি। উদ্ধার হয়নি মালামাল। দোকান মালিক আক্তার হতাশা প্রকাশ করে বলেন, চোরদের মুখমণ্ডল স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। তার পরও কেন যে এই চক্রটি গ্রেপ্তার হয়নি তা বলা মুশকিল। ঝিনাইদহ সদর থানা থেকে প্রায় ২শ’ গজ দূরে প্রিয়ান্না ট্রেডার্সে চুরি হয় ৮ মাস আগে। এখানে সিসি ক্যামেরা থাকলেও ভোর সাড়ে ৫টা থেকে সাড়ে ৬টার মধ্যে ১৪ লাখ টাকার মোবাইল ফোন চুরি করে নিয়ে যায় ৭-৮ জনের একদল চোর। সিসি ক্যামেরার স্পষ্ট ভিডিও ফুটেজ জমাসহ এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের পর দীর্ঘ ৮ মাস পেরিয়ে গেলেও কোনো আসামিকেই গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। শহরের শহীদ বীজ ভাণ্ডার, শামীমা ক্লিনিকের পাশে একটি টায়ার ও টাইলসের দোকানসহ একাধিক দোকান কিংবা বাসা-বাড়িতে চুরি হলেও অদৃশ্য কারণে চোর শনাক্ত হচ্ছে না। ঝিনাইদহ জেলায় অপরাধ দমনে পুলিশের পক্ষ থেকে ২০১৬ সাল থেকে জেলার বিভিন্ন স্থানে ৯ শতাধিক সিসি ক্যামেরা বসানো হয়। এর মধ্যে ঝিনাইদহ শহরসহ সদর উপজেলায় বসানো হয় ৬ শতাধিক। ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা নিয়ে বসানো অধিকাংশ সিসি ক্যামেরাই অকেজো হয়ে পড়ে আছে। অনেক স্থান থেকে খুলে নিয়ে গেছে কে বা কারা। এছাড়া পুলিশের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ব্যক্তিগতভাবেও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ও বাসা-বাড়িতে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়। কিন্তু কোনো কাজেই আসছে না এ উদ্যোগ। সিসি ক্যামেরা থাকা সত্ত্বেও বেড়েই চলেছে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড। জেলা পুলিশের তথ্য মতে, ২০১৭ সালে জেলায় ৫৭টি ও ২০১৮ সালের বর্তমান সময় পর্যন্ত ৫৪টি চুরির ঘটনা ঘটে। তবে সিসি ক্যামেরার আওতায় কতটি ঘটনা ঘটেছে তার সঠিক তথ্য দিতে পারেনি পুলিশ। তবে এ সংখ্যা হবে ২৫টির বেশি। এর মধ্যে ঝিনাইদহ শহরেই ১৫টির মতো চুরির ঘটনা ঘটেছে। ব্যবসায়ীরা জানান, সিসি ক্যামেরার আওতায় চুরির অন্তত একটা ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচারের মুখোমুখি করা গেলে সব চুরির রহস্য বের হতো। বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ চেম্বারের সভাপতি সাইদুল করিম মিন্টু বলেন, খুবই দুঃখজনক যে, কোনো ঘটনারই সমাধান হচ্ছে না। ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিলু মিয়া বিশ্বাস বলেন, অপরাধ দমনে সিসি ক্যামেরা বসানো হলেও অস্পষ্ট ছবির কারণে অনেক সময় অপরাধীদের চেনা যায় না। আমরা সচেষ্ট আছি আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য।

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status