বাংলারজমিন

বাড়ছে ব্রহ্মপুত্রের পানি ডুবছে কৃষকের স্বপ্ন

চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি

২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ৮:১৭ পূর্বাহ্ন

রোপা আমনের মৌসুম শুরুতেই পানির জন্য ছিল হাহাকার। নেই পানি, ঝরছিল না বৃষ্টি। বেশ অপেক্ষার পর শ্যালো মেশিন দিয়েই পানি নিয়ে বাড়তি পয়সা খরচ করে শুরু করেছিল রোপা আমনের চাষ কিন্তু হঠাতই হানাদেয় পানি। আর তলিয়ে যেতে শুরু করেছে ধানসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত। সেই সঙ্গে ডুবতে শুরু করেছে কৃষকের স্বপ্ন। তাদের চোখে এখন অন্ধকার। শুধু চোখে-মুখে তাদের দুশ্চিন্তার ছাপ। ভাবতে ভাবতেই আর চিন্তায় চিন্তায় চোখের পানি কখন যে চোখেই শুকিয়ে যাচ্ছে তাও যেন বুঝতেও পারছে না তারা। এদিকে কুড়িগ্রামের প্রধান-প্রধান নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় তলিয়ে যাচ্ছে চিলমারী উপজেলার নিম্নাঞ্চল। বাড়তে শুরু করেছে দুর্ভোগ। বিশেষ করে চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপাকে পড়েছে নিম্নাঞ্চল, দ্বীপচর ও নদনদী তীরবর্তী এলাকার মনুষজন। ব্রহ্মপুত্রের চিলমারী পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি এবং তা অব্যাহত থাকায় তা বিপদ সীমা ছুঁই ছুঁই করছে।
পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বেশ কিছু পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ডুবে গেছে বীজতলা, রোপা আমন, সবজিসহ কিছু ফসল। এছাড়াও ভাঙনে গৃহহীন হয়েছে শতাধিক পরিবার। চিলমারীর রমনা পাত্রখাতা, মাছাবান্দা, অষ্টমীরচর, নয়ারহাটসহ কয়েকটি এলাকার নিম্নাঞ্চলের বীজতলা ও রোপা আমন, সবজি জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। ফলে কৃষকরা দিশাহারা হয়ে পড়েছেন। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ধীরে ধীরে নিম্নাঞ্চল থেকে উঁচু স্থানের জমিগুলো ডুবে যাওয়া শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে লোকালয়েও ঢুকতে শুরু করেছে বন্যার পানি। নিচে পানি আর উপরে রোদের প্রচণ্ড তাপে বিভিন্ন স্থানের আমন ক্ষেত পচতেও শুরু করেছে বলে জানান কৃষকগণ। পাত্রখাতার কৃষক আ. রাজ্জাক, আ. আজিজ, মাছাবান্দার খয়বার, জাহিদুলসহ অনেকে জানান রোপা আমনের মৌসুমের শুরুতে ছিল না কোনো পানি। ছিল চারদিকে পানির জন্য হাহাকার, তাই বাধ্য হয়ে শ্যালো মেশিন দিয়ে পানি দিয়ে চাষ শুরু করেছিলাম কিন্তু হঠাতেই নদীর পানি অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যা আশঙ্কা দেখা দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে রোপা আমনসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত ইতিমধ্যে ডুবে যাওয়ায় আমরা চিন্তিত। ভাবতেও পারছি না এখন কি হবে। এ সময় বেশকিছু কৃষক বলেন, বাবারে একে তো অতিরিক্ত খরচ করে জমি চাষ করেছিলাম তার ওপর বন্যার পানি সব নষ্ট করে দিলো; এখন কি করমো আগামী দিনগুলোই বা কীভাবে চলবো। এদিকে কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবারে রোপা আমানের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৭ হাজার ৯৮৫ হেক্টর তা শতভাগ অর্জিত হয়েছে। এর মধ্যে ১২৫৭ হেক্টর জমির আমন ক্ষেত পুরো পানিতে ডুবে গেছে। তবে কৃষকরা তা মানতে নারাজ। তারা বলেন, জমির বেশির ভাগ ক্ষেত এখন পানির নিচে। উপজেলা কৃষি অফিসার মো. খালেদুর রহমান কৃষকের সাময়িক সমস্যার কথা স্বীকার করে বলেন, দু’চারদিনের মধ্যে পানি নেমে গেলে আশা করি তেমন ক্ষতি হবে না। তবে পানি নেমে না যাওয়া পর্যন্ত ক্ষতির পরিমাণ বলা যাচ্ছে না।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status