শেষের পাতা

নড়িয়ায় হাহাকার

শেখ খলিলুর রহমান, শরীয়তপুর থেকে

১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮, বুধবার, ৯:৪৮ পূর্বাহ্ন

সকালবেলার ধনীরে তুই, ফকির সন্ধ্যাবেলা। এমন অবস্থা হয়েছে নড়িয়ার ৭০০০ পরিবারের। সহায়-সম্পদ, ঘর-বাড়ি সব হারিয়ে তারা এখন নিঃস্ব। আশ্রয়হীন। খোলা আকাশের নিচে ঠাঁই হয়েছে তাদের। কেউ কেউ অন্য কারো জমিভাড়া নিয়ে ঘর তুলেছে। কেউ রাস্তার পাশে ছাপড়া দিয়ে আশ্রয় নিয়েছে।

কেউ স্কুলের মাঠে অস্থায়ী ছাউনি দিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। মানবেতর জীবনযাপন করছে তারা। জেলা প্রসশাক কাজী আবু তাহের বলেন, পদ্মা নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের  উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আশ্রয় নিয়েছে। মানুষের জমি ভাড়া করে, কেউ কেউ আত্মীয়স্বজনের বাড়ি, যারা অর্থাভাবে ঘরবাড়ি তুলতে পারে  না তাদের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে শিগগিরই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় টিন ও ঘর উঠানের জন্য বরাদ্দ দেবে। তা ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে বিতরণ করা হবে। কেদারপুর গ্রামের রহিমা বেগম বলেন, সর্বনাশা পদ্মা নদীর ভাঙনে ২-৩ মাসে আমাদের বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। অনেক আসা করে ঘর উঠাই ছিলাম। একটা বছরও ঘরে  থাকতে পারলাম না- মেয়েটাকে বিয়ে দিতে পারলাম না।

আল্লাহ আমাদের কি করল আমার পরিবারে সদস্য সংখ্যা ৮ জন। আমার স্বামী ফলের ব্যবসা করে ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার খরচ চালায় আর টিনের ঘরটি উঠায় বতমানে ছেলেমেয়েদের নিয়া পাশের গ্রামে আশ্রয় নিয়াছি। ২-৩ মাসে তিনটি ইউনিয়নের মধ্য মোক্তারেরচর, ইশ্বরকাঠি, শেহের আলী মাদবরের কান্দি, মুলপাড়প কেদারপুর ইউনিয়নের চর জুজিরা, সাহেবের চর, ওয়াবদা বাসতলা, দেওয়ান কান্দি, শুলফৎগঞ্জ, দাসপাড়া.বাগান বাড়ি ও নড়িয়অ ৫০ শস্যা হাসপাতালের নতুন ভবন নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে, আশ্রয়হীন এলাকায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ খাবার, পানি, গো খাদ্য, স্যানিটেশন, শিশুখাদ্যর অভাব। স্রোতের তীব্রতা কমলেও পদ্মার ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কমকর্তা বলেন, আমরা সরকারের পক্ষ থেকে ভাঙনে যারা ক্ষতিগ্রস্ত অসহয় এই পর্যন্ত ২-৩ বার চাল ও শুকনা খাবার বিতরণ করেছি।

আগামীকাল ত্রাণমন্ত্রী পদ্মার ভাঙন এলাকা পরির্দশন করে চাল ও শুকনা খাবার বিতরণ করবেন। এদিকে শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন পদ্মার ভাঙন রোধে সরকারের পক্ষ থেকে জিও ব্যাগ ফেলার জন্য ৮ কোটি ২০ লাখ টাকা বরাদ্ধ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে গতকাল পর্যন্ত ১ লাখ ৩৭ হাজার  জিও ব্যাগ পদ্মার ভাঙনে ফেলা  হয়েছে।

জিও ব্যাগ ফেলা হবে ১ লাখ ৭৭ হাজার ৯টি। কেদারপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নুর হোসেন দেওয়ান বলেন জিও ব্যাগ ফেলে আমাদের কোনো উপকারে আসবে না। এটা ফেলে মানুষকে শান্ত্বনা দেয়া ছাড়া আর কিছুই না। তাড়াতাড়ি করে যদি বেড়িবাঁধ হয় আমাদের উপকার হবে। শরীয়তপুর সিভিল সার্জন ডা. খলিলুর রহমান বলেন নড়িয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নতুন ভবনটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেলে আমরা আবাসিক ভবনে ইমার্জেন্সি ও আউটডোরে  কাজ করে চালিয়ে যাচ্ছি।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status