এক্সক্লুসিভ

রংপুরে বাবু সোনা হত্যা

স্ত্রী ও প্রেমিকের নামে চার্জশিট

স্টাফ রিপোর্টার, রংপুর থেকে

১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮, মঙ্গলবার, ৯:২১ পূর্বাহ্ন

রংপুরে সরকারি অ্যাডভোকেট রথিশ চন্দ্র ভৌমিক বাবু সোনা হত্যা মামলার চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ। নিহত অ্যাডভোকেট বাবু সোনার স্ত্রী স্নিগ্ধা ভৌমিক ওরফে দীপা এবং তার প্রেমিক কামরুল ইসলাম মাস্টারকে আসামি করে কোতোয়ালি আমলী আদালতে চার্জশিট দেয়া হয়। এ চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার দ্রুত বিচার সম্পন্ন করার দাবি জানিয়েছে মামলার বাদীসহ তার পরিবার।
গতকাল সোমবার দুপুরে রংপুর পুলিশ সুপার কার্যালয় মিলনায়তনে পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান সংবাদ সম্মেলন করে জানান, পরকীয়া প্রেম ফাঁসের ভয়ে এক মাস আগে অ্যাডভোকেট রথিশ চন্দ্র ভৌমিক বাবু সোনাকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল স্ত্রী স্নিগ্ধা ভৌমিক ও তার প্রেমিক কামরুল ইসলাম মাস্টার।

পরিকল্পনা অনুযায়ী চলতি বছরের ২৯শে মার্চ রাতে খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দেয় স্নিগ্ধা ভৌমিক। বাবু সোনা ঘুমিয়ে পড়লে স্নিগ্ধা ও কামরুল তার গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করে তাকে কোট-প্যান্ট, জুতা পরিয়ে পাশের রুমে আলমারিতে লাশ লুকিয়ে রাখে। পরদিন সকালে তাজহাটে কামরুলের বড় ভাইয়ের নির্মাণাধীন বাড়ির মেঝেতে বাবু সোনার লাশ মাটিতে গর্ত খুঁড়ে চাপা দিয়ে রাখে কামরুল। ১লা এপ্রিল বাবু সোনা নিখোঁজ বা অপহৃত হয়েছে বলে রংপুর কোতোয়ালি থানায় তার ছোট ভাই সুশান্ত ভৌমিক বাদী হয়ে মামলা করেন। নিখোঁজের পরপরই তদন্তে নামে পুলিশ, পিবিআই, সিআইডি, র‌্যাবসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা। তদন্তের ৫ দিনের মাথায় বাবু সোনার স্ত্রী স্নিগ্ধা ভৌমিক ও তার প্রেমিক কামরুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদের পর তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী বাবু সোনার লাশ তাজহাটের ওই নির্মাণাধীন বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়।

পরে তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে হত্যার দায় স্বীকার করে। অ্যাডভোকেট বাবু সোনা সংস্কৃতি কর্মী, যুদ্ধাপরাধ মামলার সাক্ষী, জঙ্গি মামলার সরকারি কৌঁসুলি থাকায় তার স্ত্রী হত্যার পর বাবু সোনাকে অজ্ঞাত কোনো মোটরসাইকেল আরোহী নিয়ে গেছে এবং সেটি কোনো জঙ্গি গোষ্ঠি অপরহণ করতে পারে বলে ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহের চেষ্টা করে প্রচার করে। পুলিশ সুপার বলেন, এ মামলায় ৪০ জন সাক্ষী হয়েছেন। অ্যাডভোকেট বাবু সোনার পরিবারের লোকজন, লাশ উদ্ধারের সময় যারা ছিলেন, স্টিল আলমিরার দোকানদার, যে শিক্ষার্থীর দ্বারা গর্ত খোঁড়া হয়েছিল তারা, ঔষধ বিক্রেতা। এ ঘটনায় রথিশ চন্দ্র ভৌমিক বাবু সোনার স্ত্রী স্নিগ্ধা ভৌমিক ওরফে দীপা, কামরুল ইসলাম মাস্টার, কামরুলের ছাত্র লিমন ও মাইনুল, খড় বিক্রেতা স্বপন চন্দ্র রায়, বাবু সোনার সহকারী মিলন মোহন্তকে আটক করে পুলিশ। মিলন মোহন্ত কারাগারে মারা যায়। খড় বিক্রেতা স্বপন চন্দ্র , শিক্ষার্থী লিমন ও মাইনুল নির্দোষ হওয়ায় তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। ডিএনএ রিপোর্ট হাতে পাওয়ায় পুলিশ ঘটনার ৫ মাস ১১ দিন পর ১৩ই সেপ্টেম্বর রংপুর কোতোয়ালি আমলী আদালতের বিচারক অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আরিফা ইয়াসমিন মুক্তার কাছে চার্জশিট দেয় পুলিশ।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status