শেষের পাতা

চলছে দর দাম বিক্রি কম

স্টাফ রিপোর্টার

১৯ আগস্ট ২০১৮, রবিবার, ৯:৪৭ পূর্বাহ্ন

রাজধানীতে কোরবানির পশুর হাটগুলো জমে উঠছে। গতকাল থেকে হাটগুলোর কার্যক্রম শুরু হওয়ায় ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগম হলেও বিক্রি হয়েছে কম। ক্রেতারা দরদাম করছেন। এবারের হাটে দেশি খামারের গরুর সংখ্যাই বেশি। সঙ্গে আছে ভারতীয় গরুও। বিক্রেতারা দাম হাঁকছেন একটু বেশি। তবে ক্রেতারা দাম কমার অপেক্ষায় কিনছেন কম। শনিবার দুপুর দেড়টা। রাজধানীর মেরুল বাড্ডার আফতাব নগর পশুর হাটের প্রবেশ ফটকে ঢুকতে দেখা যায় গরুভর্তি  তিনটি  ট্রাক।

এভাবেই গত কয়েকদিন ধরে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আফতাব নগর হাটে গরু নিয়ে প্রবেশ করছেন বেপারিরা। হাটে পর্যাপ্ত গরু  থাকলেও গতকাল পর্যন্ত বেচাকেনা খুব লক্ষ্য করা যায়নি। তবে  বেপারিরা মনে করছেন আজ থেকেই মূলত ক্রেতার সংখ্যা বাড়বে। আফতাব নগরের হাটটিতে ঘুরে দেখা গেছে, অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর গরুর দাম অনেকটাই বেশি।  বেপারিরা মাঝারি আকারের একেকটি গরু সর্বনিম্ন ৭০ হাজার থেকে লাখ টাকা পর্যন্ত দাম হাঁকাচ্ছেন। নির্দিষ্ট সময়ের আগে হাটে গরু আসার খবরে অনেককেই দেখা গেছে শুধু দেখার জন্য হাটে এসেছেন। তবে যারা কিনতে এসেছেন তাদের অনেকেই হতাশা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। আশরাফুল নামের এক ক্রেতা জানান, প্রতিবছর হাটে আগাম গরু আসে।

এ সময়টাতে দাম ছাড়েন না বেপারিরা। এবারো প্রথম দিন এসে ফিরে যাচ্ছি। কাল পরশু আবার আসবো। জাফর নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, এখনো গরু আসলেও সেভাবে বেচাকেনা দেখতে পাচ্ছি না। মেরুলের কাছাকাছি বাসা হওয়ায় সকাল-বিকাল দুই বেলা করেই হাটে আসা হয় আমার। কিন্তু যতদূর দেখছি এখানে অনেক গরু এলেও দাম খুব চড়া। বেপারিরা গরুর দাম হাঁকাচ্ছেন অনেক বেশি। যে গরুটা গত বছর ৬০ হাজার টাকা ছিল সেটা এবার দাম বলছে ৯০ থেকে এক লাখ টাকা। জানি না, কাল পরশু পর্যন্ত এমন দাম থাকবে কিনা। উত্তর বাড্ডা থেকে ফয়জুর নামের আরেক ক্রেতা এসেছেন শিশু সন্তানকে নিয়ে। তার উদ্দেশ্য সন্তানকে হাট ঘুরে দেখানো। এর ফাঁকে গরু কেনা যায় কিনা সেটাও দেখছেন।

ফয়জুর বলেন, বাচ্চাকে নিয়ে হাটে এলাম। তাকে গরু- ছাগল দেখানোর জন্য এসেছি। আর পাশাপাশি দেখে যাচ্ছি গরুর দাম কেমন? পুরো হাটে অনেক গরু এসেছে। কিন্তু সে অনুযায়ী ক্রেতা নেই। কাল থেকে হয়তো বাড়বে। যেটা আশঙ্কা করছি তাহলো এবছর গরুর দাম অনেক বেশি। বেপারিরা কিছুতেই ছাড়বেন না এমন অবস্থা। এদিকে বেপারিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এখনো ক্রেতার সংখ্যা না বাড়ায় গরু কেনাবেচা সেভাবে বাড়েনি। আর যেহেতু রোববার থেকে হাটের আনুষ্ঠানিক বিকিকিনি শুরু হচ্ছে তাই অনেকেই শুধু ঘুরে ঘুরে দেখছেন।  আফতাব নগরের হাটটিতে নীলফামারী জেলা থেকে আসা গরু ব্যবসায়ী আব্দুল হালিম জানান, তিনি হাটে ১৪টি গরু উঠিয়েছেন। সব নিজের খামারের।

এক-একটি গরুর দাম হাঁকাচ্ছেন ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা। তবে দুইদিন পেরিয়ে গেলেও কোনো ক্রেতা এখনো তেমন কোনো দাম বলেননি। গরুগুলো আনতে তার ৪০ হাজার টাকা গাড়ি ভাড়া লেগেছে। দিনাজপুর থেকে আসা গরু ব্যবসায়ী শরীফুল হক বলেন, আমরা বিভিন্ন আকারের মোট ৩০টি গরু এনেছি। প্রতি গরু ১ থেকে ২ লাখ টাকার মধ্যে বিক্রি করবো। চার হাজার টাকা খুঁটি ভাড়া দিচ্ছি। ১০ টাকা করে প্রতি বালতি পানি খাওয়াচ্ছি গরুকে। সঙ্গে করে গরুর খাবারও এনেছি। প্রতিদিন প্রতি গরুর পেছনে ৪০০-৫০০ টাকা খরচ হচ্ছে। কিন্তু বাজারে এখনো তেমন ক্রেতা দেখছি না। অনেকে এসে ঘুরে ঘুরে দেখেন। আফতাব নগরের পাশেই রাজধানীর আরেক ঐতিহ্যবাহী হাট মেরাদিয়া। এখানেও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যাপক হারে কোরবানির পশু উঠিয়েছেন বেপারিরা। তবে চিত্র একই। গতকাল বিকালে ঘুরে দেখা যায় পর্যাপ্ত গরু-ছাগল থাকলেও সেভাবে ক্রেতা কম।

এদিকে গাবতলীর হাটে গিয়ে দেখা যায় ভিন্নচিত্র। সেখানে অধিকাংশ পশুই দেশীয় খামারের। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসেছে পশুগুলো। হাটে বিশাল আকারের অনেক সংখ্যক গরুও লক্ষ্য করা গেছে। হাজী আনোয়ার মণ্ডল নামের এক গরু ব্যবসায়ী ইতিমধ্যে হাটে এনেছেন ৭০০ গরু। এর মধ্যে ২৫০টি বিক্রি হয়ে গেছে। গরুর দাম এবার অন্যবারের চেয়ে বেশি বলে দাবি করছেন  ব্যবসায়ীরা। এবার অন্যবারের মতো সীমান্ত পার হয়ে অবৈধ গরু আসেনি বলেও দাবি করেন গাবতলী হাটের ইজারাদার লুৎফর রহমান। এই হাটের গরু ব্যবসায়ীরা সাধারণত সারা দেশের খামারিদের থেকে গরু কিনে বিক্রি করেন। হাটে পুলিশ, র‌্যাব ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নজরদারি লক্ষ্য করা যায়।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status