শেষের পাতা

সাবেক সেনা কর্মকর্তার সন্ধানে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা পরিবারের

স্টাফ রিপোর্টার

১৮ আগস্ট ২০১৮, শনিবার, ৯:৩৯ পূর্বাহ্ন

সেনা কর্মকর্তা লে. কর্নেল (চাকরিচ্যুত) হাসিনুর রহমানকে উদ্ধারে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছে তার পরিবার। গতকাল সকাল ১১টায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর কাছে এই আকুতি জানান নিখোঁজ হাসিনুরের স্ত্রী শামিমা আক্তার।

তিনি বলেন, ‘দেশের জন্য আমরণ সময় দেন সেনা কর্মকর্তারা। লড়াই করেন দেশের স্বাধীনতা আর সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ন রাখতে। দেশের জন্যে লড়াই করে বীরপ্রতীক খেতাব পেয়েছেন হাসিনুর রহমান। প্রতিদান হিসেবে সেই হাসিনুর রহমানকে বাসার কাছ থেকে কে বা কারা তুলে নিয়ে যায়। দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তার সন্ধান দিতে পারছে না। স্বামীর সন্ধান না মেলায় আমি অসহায়। দ্বারে দ্বারে ঘুরছি। নিরুপায় হয়ে স্বামীকে উদ্ধারের জন্যে স্ত্রী হিসেবে দেশের ও সেনাবাহিনীর অভিভাবক প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’ শামিমা আক্তার বলেন, ‘আমার স্বামী কোনো দোষ করেনি, তিনি একজন দেশপ্রেমিক সাধারণ মানুষ। স্বজন হারানোর বেদনা প্রধানমন্ত্রী বুঝবেন, তাই উনার কাছে আমার দাবি- আমার স্বামীকে খুঁজে বের করার ব্যবস্থা করবেন। প্রধানমন্ত্রীর কাছে কায়মনে আবেদন করছি, আমার স্বামীকে পরিবারের মাঝে ফিরিয়ে দিন। তিনি বলেন, গত ৮ই আগস্ট রাত আনুমানিক ১০টা ২০ মিনিটের দিকে পল্লবীর ডিওএইচএস এলাকার ১১ নম্বর রোডের ৭৯২ নম্বর বাড়ির সামনে থেকে তাকে মাইক্রোবাসে করে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। ডিওএইচএস এলাকার ৪ নম্বর এভিনিউয়ের ১০ নম্বর রোডের ৬৫৯ নম্বর বাড়িতে হাসিনুর রহমান ডিউক সপরিবারে থাকতেন। ঘটনার পর তিনি পল্লবী থানায় অপহরণ সংক্রান্ত অভিযোগ দিলে ঘটনাস্থলে পুলিশ দ্রুত ছুটে যায়। পুলিশ ৭৯২ নম্বর বাড়ির সামনের রাস্তায় হাসিনুরের লাইসেন্সকৃত পিস্তলটি পড়ে থাকতে দেখে উদ্ধার করেন। পরদিন সকালে শামীমার অভিযোগটি পুলিশ জিডি হিসেবে গ্রহণ করে। জিডি নম্বর-৬৪২। তার স্বামী কোনো সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিল কী-না প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, তিনি একজন সেনা কর্মকর্তা ছিলেন। সেনা কর্মকর্তা হওয়ার কারণে কোনো সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন না। তিনি সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণ করে বাসায় দিন কাটাতেন। কোনো সংগঠনের সঙ্গে তিনি যুক্ত ছিলেন না। সংবাদ সম্মেলনে শামিমা আক্তারের ভাই ওয়াকিল, ডা. এহতেশামসহ বেশ কয়েজন নিকটাত্মীয় উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, হাসিনুর রহমান র‌্যাব-৫ ও র‌্যাব-৭ এর অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া বিজিবিতেও বেশ কিছুদিন দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৯ সালে চট্টগ্রামে র‌্যাব-৭ এর অধিনায়ক ছিলেন। র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখা তদন্ত করে তার সঙ্গে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হিজবুত তাহরীরের সংশ্লিষ্টতার তথ্য পায়। র‌্যাবের হাতে হিজবুত তাহরীরের বেশ কয়েকজন সদস্য আটক হওয়ার পর র‌্যাবও নিশ্চিত হয় হাসিনুর রহমানের সঙ্গে হিজবুত তাহরীরের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।
সূত্র জানায়, ২০১১ সালের প্রথম দিকে তাকে র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখায় ডেকে পাঠানো হয়। সেসময় গোয়েন্দা শাখার প্রধান ছিলেন লে. কর্নেল জিয়াউল আহসান। তিনি সাংবাদিকদের কাছে হাসিনুর রহমানের হিজবুত তাহরীর সংশ্লিষ্টতা নিশ্চিত করে। এরপরেই তাকে র‌্যাব-৭ থেকে অব্যাহতি দিয়ে সেনাবাহিনীতে ফেরত পাঠানো হয়। পরে তিনি সেনাবাহিনীতে আরডকে যোগদান করেন। সেখানে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্র দ্রোহিতার অভিযোগে একটি মামলা হয়। ওই মামলায় তার ৫ বছরের জেল হয়। ২০১৪ সালের শেষে দিকে তিনি জেল থেকে মুক্তি পান।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status