বাংলারজমিন

চাহিদার শীর্ষে ‘টাইট গরু’

মাগুরা প্রতিনিধি

১৮ আগস্ট ২০১৮, শনিবার, ৭:৩৭ পূর্বাহ্ন

মাগুরায় শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে কোরবানির গরু হাট। প্রতিটি হাটে উঠছে ছোট-বড় মাঝারি সাইজের হাজার-হাজার গরু। তবে দাম নিয়ে খুশি নয় কোনো পক্ষই। ক্রেতারা বলছেন, দাম বেশি। বিক্রেতা ও খামারিরা বলছেন, ভারত থেকে গরু আসায় তারা উপযুক্ত দাম পাচ্ছেন না। যে কারণে লোকসানের মুখে পড়েছেন তারা। তবে স্থানীয় ক্রেতাদের পাশাপাশি বিভিন্ন জেলা থেকে আসা ব্যাপারীদের কাছে চাহিদার সৃষ্টি করেছে গৃহস্থদের পালা স্বাস্থ্যসম্মত দেশি জাতের গরু। যা স্থানীয় পশু হাটগুলোতে সকলের কাছে ‘টাইট গুরু’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে মাগুরা বিভিন্ন এলাকায় বসেছে গরুর হাট। তবে সদরের রামনগর, কাটাখালী, ইটখোলা বাজার, আলমখালী, শত্রুজিৎপুর, মহম্মদপুরের বেথুলিয়া, বেথুলিয়া, নহাটা, শালিখার আড়পাড়া, সীমাখালী, বুনাগাতী ও শ্রীপুর উপজেলার লাঙ্গলবাধ, সারঙ্গদিয়ায় বসেছে জেলার বড় বড় কোরবানির গরুর হাট। এসব হাটে উঠেছে ছোট-বড় সাইজের বিভিন্ন জাতের হাজার-হাজার গরু। সাধারণ ক্রেতাদের পাশাপাশি ব্যাপারীদের নজর কেড়েছে গৃহস্থদের পালা মাঝারি সাইজের ক্যামিকেল মুক্ত দেশি গরু। মাগুরার পশু হাটগুলো যা পরিচিতি পেয়েছে টাইট গরু হিসেবে। রামনগর, কাটাখালী, ইটখোলা বাজার পশু হাট ঘুরে দেখা গেছে, ক্রেতাদের চাহিদার শীর্ষে থাকা এ ধরনের টাইট গরু ৪০ থেকে ৭০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কোরবানির জন্য কিনতে আসা অধিকাংশ ক্রেতাকেই দেখা গেছে এ ধরনের গরু কিনে বাড়ি ফিরতে। মাগুরা হাসপাতাল পাড়া এলাকার সোহেল আলম তুষার জানান, তিনি কাটাখালী হাট থেকে ৬৫ হাজার টাকায় গৃহস্থের পালা একটি টাইট গরু কিনেছেন। দাম একটু বেশি মনে হলেও কেমিক্যাল মুক্ত স্বাস্থ্যসম্মত গরু কিনতে পেরে তিনি খুশি। জগদল এলাকা সাইফুল ইসলাম জানান, তার পালা মাঝারি সাইজের দুইটি টাইট গরু কাটাখালী হাটে এনে প্রথম দিনেই বিক্রি করতে পেরেছেন। তবে গুরুর খাবারের দাম বেশি হওয়ায় তিনি বেশি লাভ করতে পারেনি বলে জানান। সাইদুর রহমান নামে এক ব্যাপারী বলেন, বাইরের জেলাগুলোতে মাগুরার কেমিক্যাল মুক্ত মাঝারি সাইজের গরু ব্যাপক চাহিদা। তিনি কাটাখালী রামনগর হাট থেকে এ ধরনের ২০টি গুরু কিনেছেন। যা সিলেট নিয়ে বিক্রি করে লাভবান হবেন বলে জানান। তবে হাটগুলোতে বড় সাইজের গরু নিয়ে আসা খামারিরা পড়েছেন বিপাকে। বেশি দামের অজুহাতে ক্রেতারা এ ধরনের বড় গরুর কাছে ভিড়ছেন না। খামারিরা বলছেন, ভারত থেকে গরু আসায় তারা বিপাকে পড়েছেন। কারণ খাবারের উচ্চ মূল্যর কারণে গরু প্রস্তুত করতে তাদের যে খরচ হয়েছে সে দামে গরু বিক্রি হচ্ছে না। শৈলকুপা থেকে আসা খামারি আবুল হোসেন জানান, তিনি হাটে বড় সাইজের চারটি গরু এনেছেন। প্রতিটি গরু দুই লাখের উপরে দাম চেয়েছেন। ক্রেতারা একটির দাম ৯৬ হাজার ও অপরটির দাম দিয়েছে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা। খারারসহ উপকরণের উচ্চমূল্যের কারণে দেড় লাখের নিচে বেচলে তার খরচের টাকা উঠবে না।

আবুল কালাম নামে অপর খামারি জানান, কোরবানি সামনে রেখে বড় সাইজের ২০টি গরু প্রস্তুত করেছেন। ছোট গরুর চাহিদা থাকলেও কোনো হাটেই ক্রেতারা তার বড় গরুর উপযুক্ত দাম বলছে না। সব ক্রেতা-বিক্রেতা মাঝারি সাইজের টাইট গরুর দিকে ছুটছেন। যে কারণে তাকে ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়তে হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, ভারতীয় গরু আমদানির ফলে দেশি খামারিরা ব্যাপকভাবে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে। রামনগর, কাটাখালী হাট ইজারাদার নূরে আলম সিদ্দিকী দিপু জানান, ৪০ থেকে ৬০ হাজার টাকা দামে মাঝারি সাইজের দেশি গরু বেশি বিক্রি হচ্ছে। বড় সাইজের গরুর চাহিদা কম। তবে দুই-একদিনের মধ্যে সব ধরনের গরু চাহিদা বাড়বে। বিক্রিও আরো জমজমাট হবে বলে তিনি আশা করছেন।

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status