বাংলারজমিন
কোম্পানীগঞ্জে বাংকার লিলাই বাজারে তাণ্ডব
স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট থেকে
১৭ আগস্ট ২০১৮, শুক্রবার, ৯:৪৯ পূর্বাহ্ন
সিলেটের ভোলাগঞ্জ রোপওয়ে বাংকার ও লিলাই বাজারে পাথরখেকো সিন্ডিকেটের তাণ্ডব শুরু হয়েছে। বিগত দিনে ভোলাগঞ্জ রোপওয়ে বাংকার ও ধলাই নদীর আশপাশে পাথর উত্তোলন বন্ধ থাকলেও বর্তমানে স্থানীয় পুলিশ ও রেলওয়ের নিরাপত্তারক্ষীদের ম্যানেজ করে এই লুট চলছে। রাতের আঁধারে অতীতের ন্যায় আবারো বোমা মেশিন দিয়ে চলছে অবাধে পাথর লুট। পাথরখেকো চক্র হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। নদীগর্ভে বিলীন হয়ে হচ্ছে কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা দেশের একমাত্র রজ্জুপথ ভোলাগঞ্জ রেলওয়ে রোপওয়ে বাংকার ও পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়নের লিলাই বাজার এলাকা। পাশাপাশি হুমকির মুখে পড়েছে রোপওয়ে বাংকারে অবস্থিত রেস্ট হাউস, মসজিদ, ব্যারাক, মেশিনঘর, বসতবাড়ি, দোকানপাটসহ বিভিন্ন স্থাপনা। স্থানীয়রা জানিয়েছেন- বেশ কিছুদিন যাবৎ রোপওয়ে বাংকার ও ধলাই নদীতে উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বোমা মেশিন দ্বারা পাথর উত্তোলনের কাজ বন্ধ ছিল। তবে- বর্তমানে আবারো একটি পাথরখেকো চক্র থানার ওসি আব্দুল হাই এবং রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর কর্তাব্যক্তিদের বিশাল অঙ্কের টাকা দিয়ে রফাদফার মাধ্যমে পাথর লুটপাট করে রেলওয়ে রোপওয়ে বাংকার ও উপজেলার দয়ারবাজার সংলগ্ন লিলাইবাজার সহ তার আশপাশের নিরীহ লোকজনের বসতভিটা ধ্বংসে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে পেশিশক্তির বলে এই চক্র বহুল আলোচিত ওসি আব্দুল হাইকে আঁতাত করে বেআইনিভাবে অবৈধ ‘বোমা মেশিন’- এর মাধ্যমে সেখানকার কোটি কোটি টাকার পাথর সম্পদ লুটে নিচ্ছে। যার দরুন সরকার হারাচ্ছে লাখ লাখ টাকার রাজস্ব আয়। অবৈধ পাথর উত্তোলন বন্ধে প্রশাসনের তরফ থেকে সংরক্ষিত এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হলেও তাতে কোনো কাজ হচ্ছে না। রোপওয়ে বাংকারে প্রতিটি বোমা মেশিন থেকে ২০ হাজার ও লিলাই বাজার এলাকায় প্রতিটি বোমা মেশিন থেকে ৩০ হাজার টাকার রফাদফার বিনিময়ে ওসি আব্দুল হাই, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর চীফ কমান্ড্যান্ট ইকবাল হোসেন ও সিলেট চৌকির চিফ ইন্সপেক্টর (সিআই) নুর মোহাম্মদ এবং রোপওয়ে বাংকারের দায়িত্বে থাকা এএসআই রুবেল মিয়াকে ম্যানেজ করে স্থানীয় পাথর খেকো চক্রের শেল্টারদাতা কাজল সিংহ, কলাবাড়ি গ্রামের শাহাব উদ্দিন, বিল্লাল আহমদ, আমিনুল, রাসেল, তাজুল ইসলাম ওরফে পরিবেশ মোল্লা, কালিবাড়ি গ্রামের আব্দুল আজিজের নেতৃত্বে আবারো পাথর খেকো চক্ররা পাথর লুটপাটে মেতে উঠেছে। ভোলাগঞ্জে রোপওয়ের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিতদের ও তাকে ‘ম্যানেজ’ করে বোমা মেশিন দিয়ে পাথর লুটপাট কাজ চলছে বিষয়ে চিফ ইন্সপেক্টর নুর মোহাম্মদ সাংবাদিকদের জানান- সেখানে যা কিছু হচ্ছে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করেই চলছে। আমি ইতিপূর্বে বেশ কয়েকবার হেড কোয়াটার্সে রিপোর্ট দিয়েছি। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন বলে আমার বিশ্বাস। এদিকে কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি আব্দুল হাই দাবি করেন- রোপওয়ে বাংকার ও লিলাই বাজার এলাকায় বোমা মেশিন চলছে না। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবু লাইছকে ফোন দিলে তিনি বলেন, আমরা উপজেলা প্রশাসন দু’দিন পর পর সেখানে অভিযান দিয়েছি। এমনকি প্রচলিত আইনে কয়েকটি মামলাও করেছি। তবে আমরা আবারো সেখানে অভিযান পরিচালনা করবো।