খেলা

তামিমের কাছে ‘ইচ্ছা শক্তিই’ আসল

স্পোর্টস রিপোর্টার

১৭ আগস্ট ২০১৮, শুক্রবার, ৯:৪৬ পূর্বাহ্ন

বাংলাদেশ ক্রিকেটের ইতিহাস পুরোটা জুড়েই উত্থান-পতনের গল্প। এক হারের পর আবার ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই। কখনো ব্যর্থতায় নত আবার কখনো সাফল্যের জোয়ারে ভাসা। সদ্য সমাপ্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর তার অন্যতম উদাহরণ। টেস্টে ব্যাটিং লজ্জায় ডুবে হোয়াইওয়াশ! এরপর ঘুরে দাঁড়িয়ে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়। এবার সামনে আরো কঠিন চ্যালেঞ্জ। এশিয়া কাপ, দেশের মাটিতে জিম্বাবুয়ে ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর ছাড়াও আগামী বছর ওয়ানডে বিশ্বকাপও টাইগারদের অন্যতম লক্ষ্য। তবে এ কঠিন চ্যালেঞ্জের জন্য দলের সিনিয়র ক্রিকেটারদের ওপর ভরসা করা গেলেও জুনিয়রদের নিয়ে রয়েছে ভয়। ভয় আছে টেস্ট ক্রিকেট নিয়েও। ওয়ানডেতে দল দারুণ করলেও টেস্ট ও টি-টোয়েন্টিতে এখনো ধুঁকে ধুঁকেই এগিয়ে যাচ্ছে টাইগাররা। তবে সব কিছু থেকে বের হয়ে আসতে কি করতে হবে! টাইগারদের অন্যতম ওপেনিং ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল মনে করেন ‘ইচ্ছা শক্তিই’ সব কিছু বদলে দিতে পারে। তার মধ্যে নিজেদের ভিতরে কিছু করার চ্যালেঞ্জটাই আসল। ক্যারিবীয় সফর থেকে ফেরার পর গতকাল তিনি কথা বলেন সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে। তার কথোপকথনের মূল অংশ তুলে ধরা হলো-

মাশরাফির মন্ত্র
আমাদের টেস্ট সিরিজ যতটা ভালো খেলা উচিত ছিল তার আশেপাশেও খেলতে পারিনি। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি আমরা এরচেয়ে আরো ভালো খেলতে পারতাম। উইকেট কঠিন ছিল, কিন্তু যেমন খেলেছি এর থেকে ভালো দল আমরা। আমাদের জন্য ওয়ানডে সিরিজটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। জানতাম এই ফরমেটে আমরা সবচেয়ে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। তবে আমাদের ঘুরে দাঁড়ানোর পেছনে মাশরাফি ভাইয়ের দলে যোগ দেয়া বড় অবদান ছিল। তিনি হয়তো অন্যের হয়ে ব্যাটিং ও বোলিং করে দেননি। কিন্তু তিনি দলের অভ্যন্তরীণ পরিবেশ পরিবর্তন করতে অনেক সাহায্য করেছেন। একটা বাজে টেস্ট সিরিজের পর প্লেয়ারদের মধ্যে অনেক নেতিবাচক মনোভাব থাকে। তিনি নেতিবাচক মনোভব দূর করে ইতিবাচক মনোভাবটা নিয়ে এসেছেন, সেটা সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছেন। এটা বড় কারণ ছিল। এরপর যেভাবে করে ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচটা খেললাম, কঠিন উইকেটে আমরা কোনো সময় হাল ছেড়ে দেয়নি। কষ্ট করে উইকেটে ছিলাম আমরা। সেটার ফলাফল পেয়েছি আমরা। এরপর স্বভাবতই দলের আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়।

বদলে যাওয়া সাকিব
পার্টনারশিপটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল, আমরা টেস্ট সিরিজ থেকে কামব্যাক করার জন্য। ওই উইকেটে ব্যাট করা কোনোভাবেই সহজ ছিল না। সেই সময় যদি আমি অথবা সাকিব উইকেটটা ছুড়ে ফেলতাম, তাহলে বিষয়টা আরো কঠিন হতো। সাকিবকেও তার স্বাভাবিক খেলার চেয়ে ভিন্ন ধাঁচে খেলতে হয়েছে। আমার কাছে মনে হয় আমাদের দুইজনেরই এটা বিশেষ পারফরমেন্স ছিল।

ওপেনিংয়ে সঙ্গী হতাশা নেই
ওপেনিং পার্টনার নিয়ে হতাশা। হয়তো তাদের সেইরকম পারফরমেন্স হচ্ছে না। কিন্তু আমি দলের সঙ্গে থেকে যা জানি, যারাই দলে এই দায়িত্ব পালন করছেন তারা সবাই যথেষ্ট পরিমাণ চেষ্টা করেন। যতটুকু নিজেদের উন্নতি করা দরকার সেটা তারা করছে। হয়তো প্রত্যাশামত ফলাফল পাচ্ছি না। কিন্তু আমার কারো সামর্থ্যের ওপর কোনো সন্দেহ নেই। আমার সঙ্গে যেই ব্যাট করেছে তারা সবাই যোগ্য, বাংলাদেশে অন্তত দশ বছর সার্ভিস দেয়ার জন্য। আমার কাছে মনে হয় দুই-একটা ম্যাচ দরকার তাদের, ভালো একটি ইনিংস হলেই ওরা স্থায়ী হয়ে যাবে।

এশিয়া কাপে শুরুটাই আসল
প্রথম দুই ম্যাচ আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের দ্বিতীয় রাউন্ডে কোয়ালিফাই করতে হবে। আমাদের প্রস্তুতিটা হচ্ছে সেই জন্যই। আমরা যদি এখন ফাইনাল কিংবা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার চিন্তা করি যেটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়ার জন্য আমাদের প্রথম দুই ম্যাচ জিততে হবে। প্রথম দুই প্রতিপক্ষ (শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তান) নিয়েই আমাদের পরিকল্পনা করা উচিত।

নিজেদের দায়িত্বটাই আসল
দেখেন, ঘরোয়া ক্রিকেট নিয়ে অনেকে অনেক ধরনের কথা বলে। আপনি দুনিয়ার সব সুযোগ- সুবিধা দিতে পারেন, কিন্তু প্লেয়ারদের মধ্যে যদি চ্যালেঞ্জটা না থাকে তাহলে কিন্তু কোনো লাভ নেই। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো নিজেদের মধ্যে চ্যালেঞ্জ থাকাটা। ভালো করার স্পৃহাটা থাকতে হবে। বোলিংয়ের কথা যদি বলি, বোলারদের লম্বা স্পেল বল করার চেষ্টা করতে হবে। এটা নিজের সঙ্গে নিজের চ্যালেঞ্জ, কি আমার পক্ষে আছে আর কি আমার পক্ষে নেই এসব না ভেবে ভালো করার চেষ্টা করা উচিত। বোর্ডের তরফ থেকে যা দেয়া দরকার তারা দিচ্ছে। এরচেয়ে বেশি আর কি আশা করতে পারি। একটা ভালো মাঠ দিচ্ছে, উইকেট দিচ্ছে, সব সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে এরচেয়ে বেশি তো আর তারা দিতে পারে না। তারা তো আমাদের হাত ধরে খেলিয়ে দিতে পারবে না। আমাদের দায়িত্ব হলো ওই অবস্থা থেকে নিজেদের জন্য ভালো
পারফরমেন্সটা বের করে আনা।

ম্যাকেঞ্জিতে আস্থা
আমার কাছে মনে হয় তার বাংলাদেশ ক্রিকেটে অনেক কিছু দেয়ার আছে। যতদিন ওর সঙ্গে কাজ করেছি আমার মনে হয়েছে সে দারুণ একজন কোচ।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status