শেষের পাতা

ভিজিএফ’র চাল-গম বিনামূল্যে নয়, টাকা দিয়ে কিনতে হবে

দীন ইসলাম

১৬ আগস্ট ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ১০:০৪ পূর্বাহ্ন

গ্রামের নিঃস্ব, সহায় সম্বলহীন ও অতি দরিদ্রদের ভিজিএফ (ভালনারেবল গ্রুপ ফিডিং)-এর মাধ্যমে বিনামূল্যে খাদ্যশস্য দেয়া বন্ধ হচ্ছে। এখন থেকে তাদেরও সরকারের দেয়া চাল ও গম কিনতে হবে। তবে বাজারমূল্যে নয়, নামমাত্র মূল্যে। ক্ষেত্রবিশেষে পঙ্গু, প্রতিবন্ধী, অতিশয় বৃদ্ধ এবং একেবারেই কর্মক্ষম নয়- এমন দরিদ্র ব্যক্তিদের জন্য সীমিত আকারে বিনামূল্যে খাদ্যশস্য বিতরণের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)-এর প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী এটা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিষয়টি আগামী ৯ই সেপ্টেম্বর বিকাল সাড়ে তিনটায় খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির বৈঠকে আলোচনার জন্য উঠছে। এটি ৫ নম্বর এজেন্ডায় রাখা হয়েছে। এ ব্যাপারে খাদ্য অধিদপ্তরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মানবজমিনকে বলেন, ভিজিএফ কার্ডধারীদের বিনামূল্যে খাদ্যশস্য দেয়া বন্ধ করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। বিষয়টি আলাপ-আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে। নয় বছর আগে ২০০৯ সালের ৯ই জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় পরিদর্শন করেন। ওই সময় ভিজিএফ বিতরণের বিষয়ে নির্দেশনায় বলেন, সাধারণ ক্ষেত্রে প্রত্যেক ভিজিএফ কার্ডধারীদের রেশনকার্ড দিয়ে খাদ্যশস্য বিনামূল্যের বদলে নামমাত্র মূল্যে দেয়ার বিষয়ে বিবেচনা করা যেতে পারে। তবে ক্ষেত্রবিশেষে পঙ্গু, প্রতিবন্ধী, অতিশয় বৃদ্ধ এবং একেবারেই কর্মক্ষম নয় এমন দরিদ্র ব্যক্তিদের জন্য সীমিত আকারে বিনামূল্যে খাদ্যশস্য বিতরণের বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে। এরপর ভিজিএফ বিতরণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দেয়া নির্দেশনা বাস্তবায়নে করণীয় ঠিক করতে খাদ্য বিভাগ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ বিভাগ কয়েক দফায় বৈঠক করে। ২০০৯ সালের ১২ই নভেম্বর অনুষ্ঠিত খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির সিদ্ধান্তে বলা হয়, নামমাত্র মূল্যে ও বিনামূল্যে ভিজিএফ’র খাদ্যশস্য বরাদ্দের জন্য উপকারভোগীর সর্বাধিক ২৫% সংখ্যা নির্ধারণ করা হবে। এক্ষেত্রে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিবন্ধী, বয়স্কদের তালিকা ও জাতীয় পরিচয়পত্রের সহায়তা নিতে হবে। ওই সভায় নামমাত্র মূল্যে কত টাকা নির্ধারণ করা হবে সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না হওয়ায় মূল্য নির্ধারণের জন্য খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির ২০১০ সালের ২৫শে জুলাইয়ের সভায় উপস্থাপনের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়। এরপর ২০১১ সালের ২২শে মার্চ খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির সভায় নেয়া সিদ্ধান্তে বলা হয়, ভিজিএফ’র আওতায় বাস্তব প্রয়োজনের নিরিখে বিনামূল্যে খাদ্যশস্য বিতরণ অব্যাহত থাকবে। একই বছরের ১৩ই এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিবের সভাপতিত্বে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক বিভিন্ন সভা, সমাবেশে বক্তব্য, মন্ত্রণালয় ও বিভাগ পরিদর্শনের সময় দেয়া প্রতিশ্রুতি ও নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় নেয়া সিদ্ধান্তে বলা হয়, ভিজিএফ কার্ডধারীদের রেশন কার্ড দিয়ে খাদ্যশস্য বিনামূল্যের বদলে নামমাত্র মূল্যে দেয়ার বিষয়ে খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির ২২শে মার্চের সভায় নেয়া সিদ্ধান্তের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হলে মন্ত্রণালয় স্পষ্টকরণ করতে পারে। এরপর থেকে এখনো পর্যন্ত বিষয়টি ঝুলে আছে। তাই নতুন করে প্রস্তাবটি খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির বৈঠকে উঠতে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ বিভাগ পরিচালিত সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীমূলক কর্মসূচিগুলোর মধ্যে অন্যতম ভিজিএফ কর্মসূচি। এ কর্মসূচির উদ্দেশ্য হচ্ছে দুস্থ ও দরিদ্র জনসাধারণের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, দুস্থ ও দরিদ্র পরিবারের শিশুদের পুষ্টি অবনতিরোধে সহায়তা করা, কর্মহীন সময়ে দরিদ্র জনসাধারণের খাদ্য সহায়তা দেয়া এবং যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status