এক্সক্লুসিভ

মাল্টা চাষে স্বাবলম্বী মতিন

এম.সাখাওয়াত হোসেন, মহাদেবপুর (নওগাঁ) থেকে

১৬ আগস্ট ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ৯:২৯ পূর্বাহ্ন

মাল্টা পাহাড়ি ফল হিসেবে পরিচিত হলেও সমতল ভূমিতেও রয়েছে এ ফলের ব্যাপক সম্ভাবনা। বরেন্দ্র অঞ্চলের খাদ্য গোলা বলে খ্যাত মহাদেবপুর উপজেলায় বাণিজ্যিক ভাবে চাষ হচ্ছে বিভিন্ন জাতের মাল্টার। মাটির গুণাগুণ ঠিক থাকলে সমতল এলাকাতেও মাল্টা চাষ করে লাভবান হতে পারেন কৃষকরা এমনটাই জানিয়েছেন নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর উপজেলার সফল মাল্টা চাষি আব্দুল মতিন। বর্তমানে আমাদের দেশে অনেক জনপ্রিয় ও সহজলভ্য একটি ফল হচ্ছে মাল্টা। এটি প্রায় সারা বছরই পাওয়া যায় এবং দামেও বেশ সস্তা। মাল্টা আমাদের দেশে এখন এতটাই জনপ্রিয় যে পথে ঘাটেও এর জুস পাওয়া যায়। জনপ্রিয় এই ফলটির পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আমরা হয়তো অনেকেই জানি না। মাল্টাতে আছে ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, ফসফরাস এবং চর্বিমুক্ত ক্যালরি। এগুলো ছাড়াও মাল্টাতে আরো অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে। মাল্টা চাষে সফল হয়ে এলাকায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার গোফানগর এলাকার কৃষক আব্দুল মতিন। তার বাগানে গাছে গাছে ঝুলছে থোকা থোকা মাল্টা। বাগানে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির ৬৫টি মাল্টা ও ৫টি কমলাগাছ। শুধু তাই নয়, মাল্টাসহ তার বাগানে সাথী ফসল হিসাবে ৫টি লেবুগাছ, ৩টি বেলগাছ, ৭টি পেঁপেগাছ, ২টি লিচুগাছ, ৩টি ডাবগাছ রয়েছে। গাছের নিচে ফাঁকা জায়গায় হলুদ ও ওল চাষ করেছেন। আব্দুল মতিনের সফলতায় উদ্বুদ্ধ হয়ে এলাকার বেকার যুবকরাও ঝুঁকছেন মাল্টা বাগান গড়ে তোলার দিকে। সরজমিনে মহাদেবপুর উপজেলার হাতুড় ইউনিয়নে গোফানগর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ২০১৬ সালে ১০ই আগস্ট হটিকালচার সেন্টার বদলগাছীর সহযোগিতায় মাল্টা (বারি-০১) চারা রোপণ করেন। প্রায় দুই বছরেই মাল্টা ও কমলাগাছে ফল ধরেছে। বাগানে গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন সাইজের মাল্টা। সবুজ পাতার আড়ালে কিংবা পাতাঝরা ডালেও ঝুলছে থোকা থোকা মাল্টা। এ নিয়ে আব্দুল মতিনের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, প্রথম গাছে মাল্টা ধরার পর থেকে ফল চাষের মাধ্যমে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের স্বপ্ন জাগে তার। এখন চলছে স্বপ্ন পূরণের পালা। তিনি আরো বলেন, স্থানীয় ধনী ও মাঝারি কৃষক এসব ফলমূল চাষে এগিয়ে এলে দেশে মাল্টাসহ বিভিন্ন ফলের চাহিদা মেটানো সম্ভব হতো। ফলগুলো সুমিষ্ট হওয়ায় বাণিজ্যিক ভাবে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন গোফানগর গ্রামের কৃষক আব্দুল মতিন। হটিকালচার সেন্টার বদলগাছীর সিনিয়র উদ্যান তত্ববিদ কৃষিবিদ আ ন ম আনারুল ইসলাম জানান, মহাদেবপুরসহ নওগাঁ জেলায় ধান চাষের পাশাপাশি মাল্টা চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। ধান উৎপাদনের চেয়ে মাল্টা চাষে ১০গুণ বেশি লাভবান হতে পারে এ অঞ্চলের কৃষক। ধান উৎপাদনের পাশাপাশি মাল্টা, কমলাসহ ফলজ বাগান তৈরিতে উদ্বুদ্ধকরণে জেলায় দেড়শতাধিক কৃষককে সহযোগিতা করা হয়েছে। এ বিষয়ে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও সবেক সংসদ সদস্য ড. আকরাম হোসেন চৌধুরী জানান, মাল্টাসহ বিভিন্ন ফলজ বাগান তৈরিতে উদ্বুদ্ধকরণে বিএমডিএ কাজ করে যাচ্ছে। যাতে করে বরেন্দ্র অঞ্চলের ভূ-গর্ভের পানির স্তর যেমন ঠিক থাকবে, তেমনি সবুজ ও সুন্দর প্রকৃতির তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ভূ-গর্ভের অল্প পানি উত্তোলন করে কম খরচে  ফলজ বাগান তৈরি করে কৃষক আর্থিকভাবে অধিক লাভবান হবে।      
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status