বাংলারজমিন

মৌলভীবাজারে হাতি দিয়ে অভিনব চাঁদাবাজি

স্টাফ রিপোর্টার, মৌলভীবাজার থেকে

১৬ আগস্ট ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ৯:১৯ পূর্বাহ্ন

মৌলভীবাজারের বিভিন্ন সড়ক, গাড়িচালক ও যাত্রী, হাট-বাজার, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও শহরের বাসা-বাড়িতে হাতি দিয়ে চলছে চাঁদাবাজি। তরুণ বয়সী মাহুতরা হাতি নিয়ে এই চাঁদাবাজি চালাচ্ছেন। তাদের এমন অভিনব চাঁদাবাজিতে রাস্তাঘাটে যানবাহনে জটলা তৈরি হচ্ছে। হঠাৎ হাতির বিকট আওয়াজে সড়কের যাত্রীরা আতঙ্কগ্রস্ত হচ্ছেন। দুর্ভোগগ্রস্তরা স্থানীয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না। বরং দিন দিন তা বেড়েই চলছে। গেল বছর হাতির আক্রমণে এ জেলায় কয়েকজনের প্রাণহানির ঘটনায় হাতি দেখলেই মানুষ ভয়ে আঁতকে ওঠেন। এখন হাতির মাহুতদের এই চাঁদাবাজিতে স্থানীয় বাসিন্দারা আতঙ্কগ্রস্ত। পর্যটন এলাকা হিসেবে পরিচিত এ জেলার পর্যটন স্পটগুলো দেখতে আসা পর্যটকরাও এ ঘটনায় বিড়ম্বনায় পড়ছেন। কিছুতেই কমছে না হাতি দিয়ে চাঁদাবাজির এই দৌরাত্ম্য। জানা যায়, গেল কয়েক মাস থেকে হাতি দিয়ে বেপরোয়া চাঁদাবাজি চালাচ্ছেন মাহুতরা। প্রতিদিন একেক এলাকা থেকে তারা কয়েক হাজার টাকা চাঁদা তুলছেন। জেলার  কুলাউড়া, বড়লেখা, জুড়ী, মৌলভীবাজার, কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গল বিভিন্ন আঞ্চলিক সড়কে যানবাহনের পথ বন্ধ করে চাঁদাবাজি চালান মাহুতরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মাহুতরা অনেক কৌশলি। তারা কিছুদিন পরপর এই অভিযানে নামেন। এসব চাঁদাবাজ মাহুতরা হাতিকে দিয়ে বিকট শব্দ সৃষ্টি করে এবং অঙ্গভঙ্গি দেখিয়ে মানুষকে আতকগ্রস্ত করে চাঁদা দিতে বাধ্য করেন। চাঁদার পরিমাণ কম হলে মাহুত হাতিকে ক্ষেপিয়ে তুলে ভয় দেখান। এমনকি গাড়ি উল্টে দেয়ার অথবা ঘরের ভেতর হাতিকে ঢুকিয়ে দেয়ারও হুমকি দেয়। এমন পরিস্থিতিতে তখন আতঙ্কিত মানুষ মাহুতের চাহিদা অনুযায়ী টাকা দিয়ে মুক্তি পান। চাঁদাবাজির শিকার এমন কয়েকজন জানান, তারা হাতিকে ১০০ টাকা করে দিয়েছেন। কারণ, হাতি শুঁড় দিয়ে তাদেরকে চেপে ধরেছিল তাই। এর চেয়ে টাকা কম দিলে তা গ্রহণ করে না। ১০০ টাকা দিলে হাতিটি পিঠে বসে থাকা মাহুদকে শুঁড় উঁচিয়ে টাকা দিয়ে দেয়। অনুসন্ধানে জানা যায় এসব হাতির মালিক জেলার বড়লেখা, জুড়ী ও কুলাউড়ার কয়েকজন বিত্তশালী ব্যক্তি। বিভিন্ন পাহাড় হতে বন মহালদারের গাছ ও বাঁশ নামাবার জন্য এসব হাতিকে ভাড়ায় খাটানো হয়। কয়েকজন পরিবহন চালক জানান, আমরা সড়কে গাড়ি নিয়ে শহরের ভেতরে প্রবেশের আগেই রাস্তায় হাতি গাড়ির সামনে এসে দাঁড়িয়ে শুঁড় এগিয়ে দেয়; টাকা না দিলে সামনে থেকে সরে না। বাধ্য হয়ে আমরা ৫০ থেকে ১০০ টাকা দেই। প্রায় সময়ই আমরা এই ভোগান্তিতে পড়ি। হঠাৎ এই দুর্ভোগে পড়া থেকে মুক্তি চান স্থানীয়রা। তারা এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানান। এ বিষয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর মৌলভীবাজার জেলা সভাপতি ডা. ছাদিক আহমদ বলেন, অভনব কায়দায় বন্য প্রাণি দিয়ে এভাবে নাগরিকদের দুর্ভোগে ফেলা কোনো অবস্থাতেই ঠিক নয় এবং চাঁদাবাজি করতে গিয়ে রাস্তাঘাটেও তারা যানজট সৃষ্টি করে। এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি রাখছি।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status