প্রথম পাতা

কোটা প্রায় তুলে দেয়ার পক্ষে কমিটি

মুক্তিযোদ্ধা কোটার ব্যাপারে আদালতের মতামত চাওয়া হবে

বিশেষ প্রতিনিধি

১৪ আগস্ট ২০১৮, মঙ্গলবার, ১০:৪৫ পূর্বাহ্ন

সরকারি চাকরিতে সব ধরনের কোটা উঠিয়ে দেয়ার সুপারিশ করতে যাচ্ছে কোটা পদ্ধতি পর্যালোচনা কমিটি। এরই মধ্যে এ বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়েছে। গতকাল সচিবালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকের ব্রিফিংয়ে কোটা পর্যালোচনা কমিটির প্রধান  মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম এসব তথ্য জানিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের সিদ্ধান্ত হলো যতদূর সম্ভব কোটা বাদ দিয়ে মেরিটে চলে যাওয়া। এখন আমাদের সময় এসেছে আমরা উন্মুক্ত প্রতিযোগিতায় যাবো। এর আগে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে গত ২রা জুলাই কোটা ব্যবস্থা পর্যালোচনা করে তা সংস্কার বা বাতিলের বিষয়ে সুপারিশ দিতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করে সরকার। কমিটিকে ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।

এ কমিটি ৮ই জুলাই প্রথম সভা করে। এরপর কমিটির মেয়াদ আরো ৯০ কার্যদিবস (তিন মাস) বাড়ানো হয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, কোটা নিয়ে সুপারিশ প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলেছি। আমরা মেরিটকে (মেধা) প্রাধান্য দিয়ে অলমোস্ট (প্রায়) কোটা উঠিয়ে দেয়ার সুপারিশ করবো। তিনি বলেন, কোর্টের একটা রায় রয়েছে, মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা সংরক্ষণ করতে হবে। যদি খালি থাকে তবে খালি রাখতে হবে। এটার ব্যাপারে কোর্টের মতামত চাইবো, কোর্ট যদি এটাকেও উঠিয়ে দেয় তবে কোটা থাকবে না।

আর কোর্ট যদি রায় দেয় যে, ওই অংশটুকু (মুক্তিযোদ্ধা কোটা) সংরক্ষিত রাখতে হবে তবে ওই অংশটুকু বাদ দিয়ে বাকি সবটুকু উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। এটা হলো প্রাথমিক প্রপজিশন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, মুক্তিযোদ্ধা কোটা আদালতের সিদ্ধান্তের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে আদালতের পর্যবেক্ষণ রয়েছে। কোর্টের পর্যবেক্ষণ তো বাধ্যতামূলক কিছু নয়- একজন সাংবাদিক বিষয়টি জানাতেই মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এটা পরিষ্কার নয়। আমরা কোর্টের রায়টা বিশ্লেষণ করেছিলাম।

এটা আমরা নিজেরা পুরোপুরি বুঝতে পারছি না। এজন্য কোর্টের মতামত চাওয়া হবে। কোর্টের ইন্সট্রাকশন বলেন, অবজারভেশন বলেন- এগুলো আমাদের নির্বাহী বিভাগের জন্য বাইন্ডিং হয়ে যায়। এগুলো আমরা ইগনোর (অবজ্ঞা) করতে পারবো না। যেভাবে লেখা আছে তা বাইন্ডিংয়ের মতোই। শফিউল আলম বলেন, আমাদের সিদ্ধান্ত হলো যত দূর সম্ভব কোটা বাদ দিয়ে মেরিটে চলে যাওয়া। এখন আমাদের সময় এসেছে আমরা উন্মুক্ত প্রতিযোগিতায় যাবো।

তাহলে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী কীভাবে মূলধারায় আসবে- জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেছি ওনারা অগ্রসর হয়ে গেছেন। বর্তমানে সরকারি চাকরিতে সংরক্ষিত কোটা ৫৬ শতাংশ। বাকি ৪৪ শতাংশ নেয়া হয় মেধা যাচাইয়ের মাধ্যমে। বিসিএসে নিয়োগের ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৩০, জেলা কোটায় ১০, নারী কোটায় ১০ এবং উপজাতি কোটায় ৫ শতাংশ চাকরি সংরক্ষণ করা আছে। এই ৫৫ শতাংশ কোটায় পূরণযোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে সেক্ষেত্রে ১ শতাংশ পদে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নিয়োগের বিধান রয়েছে। এদিকে কোটা ব্যবস্থার সংস্কারের দাবিতে কয়েক মাস ধরে আন্দোলন করছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এনিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ এবং আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তারের মতো ঘটনাও ঘটেছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status