অনলাইন

‘বিদ্যমান অবস্থাতেই গার্মেন্ট শ্রমিকদের নূন্যতম মজুরি ১৬ হাজার টাকা করা সম্ভব’

স্টাফ রিপোর্টার

১০ আগস্ট ২০১৮, শুক্রবার, ৯:৫৪ পূর্বাহ্ন

আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড এবং দেশি গার্মেন্ট মালিক উভয় পক্ষ থেকে মাত্রাতিরিক্ত মুনাফা  কমিয়ে আনা গেলে বিদ্যমান কাঠামোতেই গার্মেন্ট শিল্পে ন্যূনতম মজুরি ১৬ হাজার টাকা করা সম্ভব।

শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির উদ্যোগে ‘কী করে বাঁচে শ্রমিক’ শিরোনামে গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ এবং মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন বক্তারা। সম্প্রতি দেশের ছয়টি শিল্পাঞ্চলে ২০০ শ্রমিকের অংশগ্রহণে পরিচালিত জরিপের ভিত্তিতে একটি গবেষণা প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে গার্মেন্ট সংহতি। প্রতিবেদনের সার-সংক্ষেপ উপস্থাপন করেন সংগঠনের প্রধান তাসলিমা আখতার।

গবেষণা জরিপের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে যে, বাংলাদেশে একজন গার্মেন্ট শ্রমিক বেতন, ওভারটাইম ও হাজিরা বোনাস সহ মোট ৮,২০০ টাকা আয় করেন এবং প্রতিটি গার্মেন্ট শ্রমিক পরিবারে গড়ে দুই জন উপার্জনকারি সদস্য রয়েছেন এবং চার সদস্যের একটি পরিবারের মোট আয় ১৫ হাজার ৮৬৩ টাকা। ৬১ শতাংশ শ্রমিক মনে করেন তার আয়ের তুলনায় ব্যয় বেশি।

অতিরিক্ত ব্যয়ের বোঝা সামাল দেয়ার জন্য গার্মেন্ট শ্রমিকরা বিভিন্ন উৎস থেকে নিয়মিত ঋণ করেন এবং খাদ্য ও বাসা ভাড়া বাবদ ব্যয় কমিয়ে দেন। গড়ে একজন গার্মেন্ট শ্রমিক দৈনিক ৮ ঘণ্টা কাজের পাশাপাশি মাসে গড়ে ৬০ ঘণ্টা পর্যন্ত ওভারটাইম করেন। ফলে শ্রমিকরা প্রয়োজনিয় ঘুম ও বিশ্রাম থেকে বঞ্চিত হন।

তাসলিমা আখতার বলেন , গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি এক বছরেরও বেশি সময় আগে থেকে গার্মেন্ট খাতে নূন্যতম ১৬ হাজার টাকা মজুরির দাবিতে আন্দোলন করে আসছে এবং এই দাবি করা হয়েছে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিধি-বিধান ও তথ্যনির্ভর গবেষণার ভিত্তিতে। তাই গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি সহ সকল প্রগতিশীল শ্রমিক সংগঠন মালিক পক্ষের ৬,৩৬০ টাকা ন্যূনতম মজুরির প্রস্তাব প্রত্যাখান করেছে।

মতবিনিময়ে সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি)-এর গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন,  সরকার ও মালিক পক্ষ যে নূন্যতম মজুরি নির্ধারণ করছে তা গার্মেন্ট শ্রমিকদের নূন্যতম জীবন মান নিশ্চিত করার জন্য মোটেও যথেষ্ট নয়।

এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের অধ্যাপক তানজিমউদ্দিন বলেন- সরকার গার্মেন্ট মালিকদের জন্য বহুবিধ কর সুবিধা রাখলেও গার্মেন্ট শ্রমিকদের কল্যাণ নিয়ে ততটা ভাবিত নয়। সরকারের উচিৎ মালিককে কর রেয়াত দেয়ার বদলে শ্রমিক পরিবারগুলোর জন্য বিনা মূল্যে শিক্ষা, চিকিৎসা সহ সামাজিক সেবা নিশ্চিত করা।

গার্মেন্ট শ্রমিক অধিকার আন্দোলনে সমন্বয়ক মাহাবুবুর রহমান ইসমাইল  বলেন, জেলের কয়েদির চেয়েও গার্মেন্ট শ্রমিকরা নিম্ন মানের জীবন যাপন করছে। তাই সকল প্রগতিশীল শক্তির গার্মেন্ট শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে যুক্ত হতে হবে।

গণসংহতি আন্দোলনের রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য ফিরোজ আহমেদ বলেন- গার্মেন্ট শ্রমিকদের মজুরি বাড়লে সেটি গার্মেন্ট শিল্পের বিকাশে সহায়ক হবে, পাশাপাশি অন্যান্য শিল্পের বিকাশেও ভূমিকা রাখবে।
মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশনের সভাপতি শাহ আতিউল ইসলাম, গার্মেন্ট শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি আহসান হাবিব বুলবুল, নারী সহংতির সভাপতি শ্যামলী সরকার, ব্র্যাক বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক সিউতি সবুর, এবং ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোশাহিদা সুলতানা প্রমুখ।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status