দেশ বিদেশ
সর্বক্ষেত্রে দেশকে এগিয়ে নেয়ার মতো শিক্ষিত জাতি গড়তে চাই: প্রধানমন্ত্রী
স্টাফ রিপোর্টার
২০ জুলাই ২০১৮, শুক্রবার, ৯:০৯ পূর্বাহ্ন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বর্তমান সরকার উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষা করে দেশকে আগামী দিনে সর্বক্ষেত্রে এগিয়ে নেয়ার জন্য একটি শিক্ষিত জাতি গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা একটি শিক্ষিত জাতি গড়ে তুলতে চাই, যেন আগামী দিনেও আমাদের এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকে। এজন্য সরকার শিক্ষাখাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ দিয়েছে এবং শিক্ষার বহুমুখীকরণ ও কারিগরি শিক্ষার ওপর সর্বাধিক গুরুত্বারোপ করেছে যাতে এই বিশাল জনসংখ্যাকে দক্ষ মানব সম্পদে রূপান্তরিত করা যায়। প্রধানমন্ত্রী গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে এবছর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সকালে গণভবনে পরীক্ষার ফলাফলের সারসংক্ষেপ প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন। প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে শিক্ষার্থীদের ওপর আস্থা পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, আমাদের ছেলেমেয়েরা অনেক অনেক মেধাবী। কাজেই সেই মেধাকে আমাদের দেশ গড়ার কাজে লাগাতে হবে। দেশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ, পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ এবং সমুদ্র সীমানা অর্জনের ফলে সার্বিক ভাবে একটি উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থা সময়ের প্রয়োজন হিসেবে দেখা দিয়েছে, যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর জেলায় জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন থেকে শুরু করে কারিগরি শিক্ষার দিকে অধিক গুরুত্ব দেয়া হয়। কারণ, কারিগরি শিক্ষা কর্মসংস্থানের আরো সুযোগ সৃষ্টি করবে। পাশাপাশি তার সরকার বিজ্ঞান শিক্ষাকেও গুরুত্ব দেয়। শেখ হাসিনা এ সময় দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করা এবং কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিতে তার সরকারের বিভিন্ন সাফল্য তুলে ধরে বলেন, আমাদের অর্থনৈতিক নীতিমালার লক্ষ্যই হচ্ছে প্রতিটি গ্রামকে সবরকমের নাগরিক সুবিধা দিয়ে উন্নত-সমৃদ্ধ করে গড়ে তোলা। কারণ, সরকার হিসেবে জনগণের সেবা করা এটাই আমাদের কর্তব্য। কারিগরি ও মাদরাসাসহ ১০টি শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যানগণ নিজ নিজ শিক্ষাবোর্ডের ফলাফল একে একে প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন। মাদরাসা এবং কারিগরি শিক্ষা বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলী এবং মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই ফল প্রকাশ অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান। নেত্রকোনা জেলা এ সময় গণভবনের সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত ছিল। সোনার বাংলা গড়তে সোনার মানুষ চাই’- জাতির পিতার বক্তব্যের এই উদ্ধৃতির আলোকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের ছেলেমেয়েরা সোনার মানুষ হিসেবে গড়ে উঠবে সেভাবেই আমরা তাদেরকে গড়তে চাই। তিনি প্রশ্নপত্র ফাঁস প্রতিরোধে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এবারের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক, বোর্ড এবং মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের প্রতি ধন্যবাদ জানান। প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, এই সমস্যাটা শুধু আমাদের দেশে নয়, ডিজিটালাইজেশনের কারণে অনেক উন্নত দেশেও এ ধরনের সমস্যা দেখা যাচ্ছে। এবার আধাঘণ্টা আগে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার হলে উপস্থিতি নিশ্চিত করা এবং পরীক্ষার ২৫ মিনিট আগে কয়েকটি সেটের মধ্য থেকে কোন প্রশ্নের সেটে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে তা মোবাইলে এসএমএস’র মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রধানমন্ত্রী শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, নকল করতে হবে কেন, একটু মনোযোগী হলেই তো পরীক্ষায় পাস করা যায়। শিক্ষাকে জীবনের অন্যতম সম্পদ আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, এই সম্পদ কেউ কেড়ে নিতে পারবে না। প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ এবং মাদক থেকে শিক্ষার্থীদের দূরে থাকার জন্য সতর্ক করে দিয়ে এ বিষয়ে লক্ষ্য রাখার জন্য অভিভাবক, শিক্ষক, মসজিদের ইমাম, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা এবং জনপ্রতিনিধিসহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের প্রতি আহ্বান জানান।