দেশ বিদেশ

‘সব সোনা ঠিক আছে’

স্টাফ রিপোর্টার

১৯ জুলাই ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ৯:৪৬ পূর্বাহ্ন

বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে রাখা সোনা ‘ঠিক আছে এবং ঘরেই আছে’ বলে আশ্বস্ত করেছেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান। তিনি বলেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভল্টে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের রক্ষিত সোনা বদলে যাওয়ার যে অভিযোগ উঠেছে, তা অর্থমন্ত্রী দেশে ফিরলে ‘আইনানুগভাবে’ খতিয়ে দেখা হবে, যাতে ‘সামান্যতম সংশয় বা সন্দেহও’ দূরীভূত হয়। ওই সোনা নিয়ে আলোচনার প্রেক্ষাপটে বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর ফজলে কবিরের সঙ্গে এক বৈঠকের পর অর্থ প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. ইউনুসুর রহমান, শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শহিদুল ইসলাম এবং এনবিআর সদস্য কলিপদ হালদারও সচিবালয়ে প্রায় দেড় ঘণ্টার এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ওই ঘটনাকে মোটেও ‘ছোট করে’ দেখা হচ্ছে না, কারণ সামান্য ফাঁক দিয়েও বড় সমস্যা হয়ে যেতে পারে। অর্থ প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, পত্রিকায় ওই খবর দেখে প্রথমে তিনি আঁতকে উঠেছিলেন। এ সম্পর্কে কোনো ধারণা ছিল না। যেভাবে খবরের কাগজে এসেছে এটা ভয়াবহ ব্যাপার মনে হয়েছে আমার কাছে। আমি সারাদিন যেহেতু আমার জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী দেশে নেই, আমার যতটুকু সম্ভব বিভিন্ন জায়গায় কথাবার্তা বলেছি এবং তথ্য নেয়ার চেষ্টা করেছি। বিকালে বাংলাদেশ ব্যাংক সংবাদ সম্মেলন করে তাদের ব্যাখ্যা দেয়ার পর সেই উদ্বেগ প্রশমিত হয়েছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী। আমার মধ্যে যে ভীতি ছিল, সন্ধ্যা নাগাদ তা কমে এসেছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডও বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করে আশ্বস্ত হয়েছে- যে মাত্রায় খবর পরিবেশিত হয়েছে তা সঠিক নয়। অনেক বড় মাত্রায় এটি এসেছে, দুনিয়া কাঁপানো মাত্রায় আমাদের দেশের জন্য। এটি সঠিক নয় আমাকে আশ্বস্ত করেছেন, এ সম্পর্কে ভয়ের কোনো ব্যাপার নেই। প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকারের দুটি প্রতিষ্ঠান যখন একসঙ্গে কাজ করে, তখন মাঝেমধ্যে ধারণাগত ফারাক হতে পারে, এটি নতুন কিছু নয়। ভল্টের সোনা ঠিক আছে দাবি করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এ সম্পর্কে পরিষ্কার হয়ে গেছি আমরা উভয়ে বসছি, আরো বসব। যে পরিমাণের কথা বলা হয়েছে ৯৬৩ কেজি তা মোটেই ঠিক নয়। সব সোনা ঠিক আছে, ঘরেই আছে। মান্নান বলেন, তার কথা যে ঠিক তা জনগণ বা যেকোনো সংস্থা চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকে গিয়ে দেখে আসতে পারে। ৪০ ও ৮০ ক্যারেটের সমস্যা হয়েছে, এটি ক্লারিক্যাল এরর। লেখার মধ্যে ইংরেজি বাংলা মিকশ্চার হয়ে গেছে। কিছু ব্যাপার আমরা করি, মান্ধাতা আমলের সোনা মাপার কষ্টিপাথর দিয়ে পরীক্ষা করা হয়, এখন সর্বশেষ কিছু সিস্টেম ইলেকট্রনিক্সে পরিমাপ করা হয়। এর মধ্যে চুল পরিমাণ কিছু বেশকম আসতে পারে রিডিংয়ে। উভয় নির্বাহী কর্তৃপক্ষ আমাকে আশ্বস্ত করেছেন, ভয়ের কিছু নেই। তবে বিষয়টি পুরোপুরি ছেড়ে দেয়া হচ্ছে না জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, মন্ত্রী দেশে ফিরে আসবেন, আমরা বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রীকে ব্রিফ করবো। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভল্ট থেকে কিছু বাইরে যাওয়ার সম্ভাবনা মোটেও নেই। সেখানে ছয় স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে, গভর্নরও অনুমতি ছাড়া ভল্টে যেতে পারেন না। তবে আমরা ছোট করে দেখছি না, সামান্য ফাঁক দিয়েও কিন্তু বড় হয়ে যায়। আমাদের লেভেলে অন্য কোনো সংস্থাকে দিয়ে ফারদার পর্যালোচনা করবো। এতে বাংলাদেশ ব্যাংক ভীত নয়, তাদের গভর্নর বলে গেছেন, তাদের মনে কোনো সংশয় নেই, ঠিকই আছে সবকিছু। তদন্তের দীর্ঘ সময়ে কেন বাংলাদেশ ব্যাংক বুঝতে পারলো না যে তাদের ভুল হয়েছে- এ প্রশ্নে প্রতিমন্ত্রী বলেন, তাদের মধ্যে এক বছর ধরে চিঠি চালাচালি হয়েছে, মাঝে মাঝে একজনের চিঠি দিয়ে আরেক জনের জবাব পেতে দুই মাস লেগেছে, কিছু আমলাতান্ত্রিক গাফলতি আছে। বাংলাদেশ ব্যাংক যাকে ‘ক্লারিক্যাল ভুল’ বলছে, সে বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে কিনা-সাংবাদিকদের এ প্রশ্নে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা পর্যালোচনা করবো পুরো সিস্টেম নিরাপত্তা, মাপঝোক, ব্যক্তি, যারা কাজ করে আমরা পুরোটাই রিভিউ করবো। যদি কারো গাফলিত পাই সামান্যতম, তাহলে আইনানুগ শাস্তির বিধান করা হবে। ঘটনা তদন্তে কোনো কমিটি করা হবে কিনা- এ প্রশ্নে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা পর্যালোচনা করবো। আজকে আলোচনার ভিত্তিতে আমরা একমত হয়েছি, তারাও একমত হয়েছেন যে এটা দেখার বিষয় আছে। আমি মন্ত্রীকে ব্রিফ করবো, তদন্ত কমিটি হবে নাকি পর্যালোচনা কমিটি হবে- ল্যাংগুয়েজটা এ মুহূর্তে বলতে পারছি না। তবে এটা দেখা হবে। আইনানুগভাবে দেখা হবে। যাই করবো, আইনের মাধ্যমে করা হবে। তবে তদন্ত শব্দটি আমি ব্যবহার করছি না। পত্রিকায় প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনের বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, যে মাত্রার প্লেঅফ করা হয়েছিল তা বাস্তবভিত্তিক নয়, আপনারা নিউজ প্রেজেন্টেশন করেন, আমরা সম্মান করি। জনগণের কল্যাণের স্বার্থে সুন্দরভাবে করেন, সেটাও আপনাদের দায়িত্ব।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status