অনলাইন
‘ত্রাসের রাজত্ব ভেঙে প্রতিবাদ করতে শিখেছে শিক্ষার্থীরা’
বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার
১৮ জুলাই ২০১৮, বুধবার, ২:৪৫ পূর্বাহ্ন
সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের অব্যাহত হামলা ও শিক্ষক লাঞ্ছনার প্রতিবাদে আজও ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করে মানববন্ধন করেছে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা আগামীতে এ ধরণের হামলা হলে প্রতিহতের ঘোষণা দেয়। সমালোচনা করা হয় ভিসি ও প্রক্টরের। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ভিসি ও প্রক্টর দায়িত্বশীল আচরণ করছেন না বলে আজ ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা নিরাপত্তাহীনতায় আছেন। আজ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এক মানববন্ধনে এসব অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের যৌক্তিক দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর ছাত্রলীগ হামলা করেছে। এর প্রতিবাদ করতে গেলে শিক্ষকদের ওপরও তারা হামলা করছে। হামলার বিচার চাইতে গেলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিশ্চুপ। তারা কোন জবাব দিচ্ছে না। আমরা আমাদের প্রতিবাদ কর্মসূচী অব্যাহতভাবে পালন করব। এবার যদি ছাত্রলীগ হামলা চালায় তবে তাদের শক্তভাবে প্রতিহত করা হবে। এসময় শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ধরণের প্ল্যাকার্ড বহন করেন। এতে লেখা- ‘আগে নিরাপত্তা পরে ক্লাস’, ‘শিক্ষা ও হাতুড়ি এক সঙ্গে চলতে পারে না’, ‘শিক্ষদের উপর হামলা কেন প্রশাসন জবাব চাই’, ‘প্রক্টর, ভিসি, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা চাই’, ‘উদ্বেগ উৎকণ্ঠা আর কত দিন’, ‘নিপীড়নের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াও ছাত্রসমাজ’ ইত্যাদি। মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা তিন দফা দাবি তুলে ধরেন।
দাবিগুলো হলো- ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর ছাত্রলীগের হামলায় জড়িতদের চিহ্নিত করে শাস্তি; কোটা সংস্কার আন্দোলন করতে গিয়ে গ্রেপ্তারকৃতদের কেন গ্রেপ্তার করা হয়েছে তা প্রকাশ করা ও তাদের মুক্তি; ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। এদিকে শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক ড. রুশাদ ফরিদি বলেন, গত সমাবেশে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উপর ছাত্রলীগের হামলার পর শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে নিরাপত্তাহীনতা বোধ করছেন। এর আগে ছাত্ররা ক্যাম্পাসে নিরাপদে বিভিন্ন আন্দোলন করত। তিনি বলেন, আজকের এই মানববন্ধন প্রমাণ করে শিক্ষার্থীরা ত্রাসের রাজত্ব ভেঙ্গে প্রতিবাদ করতে শিখেছে। ঢাবির এ শিক্ষক বলেন, ছাত্রলীগের কথাবার্তা পোলাপানের মতো। তাদের বিভিন্নভাবে ব্রেন ওয়াশ করা হয়। প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের গনরুমে যে টর্চার করা হয় এর মধ্য দিয়ে তারা ভবিষ্যতে ছাত্রলীগের বড় ক্যাডারে পরিণত হয়। এদের আশ্রয় দিচ্ছে কারা তাদের খুঁজে বের করতে হবে। সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নাহিদ ইসলাম বলেন, ছাত্রলীগ সরকারের উপর মহলের কথায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করছে। এর বিচার চাইতে গেলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করতে অনুমতি নেইনি কেন? আমরা কার কাছে বিচার দাবি জানাবো? এর বিচার করার কেউ নেই। আমরা আন্দোলনের মাধ্যমে এর প্রতিবাদ জানাবো। তাই আমাদের প্রতিবাদ কর্মসূচী অব্যহত থাকবে।