দেশ বিদেশ
আওয়ামী লীগ নেতারা বিস্মৃতিপ্রবণ: রিজভী
স্টাফ রিপোর্টার
১৮ জুলাই ২০১৮, বুধবার, ৯:১৬ পূর্বাহ্ন
দেশের গণতন্ত্র ও গুম-খুন নিয়ে সরকারের দায়িত্বশীল মন্ত্রীদের বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগ নেতাদের বিস্মৃতিপ্রবণ বলে আখ্যায়িত করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। গতকাল দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এ আখ্যা দেন। গণতন্ত্র নিয়ে সেতুমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের দেয়া বক্তব্যের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, আওয়ামী নেতারা মূঢ় অহংকারের কারণে বিস্মৃতিপ্রবণ। তারা কী ভুলে গেছেন সরকারের সমালোচনা করার কারণে গভীর রাতে দলীয় কার্যালয় ভেঙে তছনছ করে গ্রেপ্তারের কথা? ভুলে গেছেন ২০১৩ সালে পুলিশ ঢুকিয়ে সারা কার্যালয় তছনছ করে বিএনপি মহাসচিব ও সিনিয়র নেতৃবৃন্দসহ ১৫৪ জন বিএনপি নেতাকর্মীদের আটক করে নিয়ে যাবার কথা? তাহলে তখন কী আপনাদের তথাকথিত গণতন্ত্র ছিল না? রিজভী বলেন, জাতীয় সংসদে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সম্পর্কে যে উদ্ভট, অলীক, অসংসদীয়, অশ্রাব্য কটুবাক্য প্রধানমন্ত্রী ব্যবহার করেছেন সেটি কোন গণতান্ত্রিক রীতিতে পড়ে? বিএনপিসহ বিরোধী দলের সভা-সমাবেশের অনুমতি না দেয়া কোন গণতান্ত্রিক রীতিতে পড়ে? বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে ছাত্রলীগ ও পুলিশের হামলা, নির্যাতন-নিপীড়ন কোন গণতান্ত্রিক রীতি? তিনি বলেন, বন্দুকের জোরে দেশের প্রধান বিচারপতিকে পদত্যাগে বাধ্য করে দেশ থেকে বিতাড়ন কোন গণতান্ত্রিক রীতিতে পড়ে? মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে বিজয়ী করা কোন গণতান্ত্রিক রীতি? ধমক দিয়ে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করা কোন গণতান্ত্রিক রীতি? আমি আওয়ামী সাধারণ সম্পাদককে অনুরোধ করবো- নিজেরা আয়নায় ভালো করে নিজেদের চেহারাটা দেখুন। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও গুম নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দেয়া বক্তব্যেরও সমালোচনা করেন রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, জবাবদিহিহীন ভোটারবিহীন সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীই কেবল এই ধরনের উদ্ভট, ভারসাম্যহীন, অসত্য কথা বলে নির্যাতিত নিপীড়িত জনগণের সঙ্গে এমন নিষ্ঠুর রসিকতা করতে পারেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদ রাখতে এমন বানোয়াট ও অসত্য বক্তব্য দেয়া ছাড়া তার কোনো উপায় নেই। প্রতিদিন বিচারবর্হিভূত হত্যার হিড়িক চলছে। রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষকে গুম করা হচ্ছে। দুঃসময়ের আতঙ্কজনক কালো রাত সৃষ্টি করে এই সরকার সারা দেশকে নরমুণ্ডের পাহাড় বানাতে চাচ্ছে। তাই রক্তপিপাসু প্রাণির যেমন বিবেক থাকে না তেমনি বিবেকহীন বর্তমান সরকার। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের দেয়া বক্তব্যের কড়া প্রতিবাদ জানান রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের মধ্যদিয়ে আবারো আমাদের কথাই সত্যি হলো। তারা (সরকার) বিএনপি চেয়ারপারসনকে নিয়ে দুরভিসন্ধিমূলক এক গভীর চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে। লোক মুখে যে কথা প্রচারিত তাই সত্য হচ্ছে- রাজনীতি থেকে খালেদা জিয়াকে চিরতরে সরিয়ে দেয়ার জন্যই তার জীবনকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে। রিজভী বলেন, দেশের স্বাধীনতার ঘোষকের সহধর্মিণী তিন বারের প্রধানমন্ত্রী জননন্দিত নেত্রী খালেদা জিয়ার অসুস্থতাকে চরম অবনতির দিকে ঠেলে দিতেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও তার সরকার এক নোংরা খেলায় মেতে উঠেছে। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, কোন ব্যবস্থাপনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কারাবন্দি থাকা অবস্থায় স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছিলেন? কোন ব্যবস্থাপনায় আওয়ামী লীগের অন্য সিনিয়র নেতাদের চিকিৎসা হয়েছিল রাজধানীর ল্যাবএইড বা বারডেমে।
সুতরাং খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা না দিয়ে তিলে তিলে নিঃশেষ করে দেয়াই যে সরকারের উদ্দেশ্য তা আবারো সুস্পষ্ট হলো স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের মধ্যদিয়ে। ব্রিফিংয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন উপস্থিত ছিলেন।
সুতরাং খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা না দিয়ে তিলে তিলে নিঃশেষ করে দেয়াই যে সরকারের উদ্দেশ্য তা আবারো সুস্পষ্ট হলো স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের মধ্যদিয়ে। ব্রিফিংয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন উপস্থিত ছিলেন।