এক্সক্লুসিভ

কোটা সংস্কারের যৌক্তিক সমাধান চায় ১৪ দলীয় জোট

স্টাফ রিপোর্টার

১৮ জুলাই ২০১৮, বুধবার, ৮:৫৭ পূর্বাহ্ন

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের যৌক্তিক সমাধান চায় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট। এজন্য জোটের পক্ষ থেকে কোটা পদ্ধতি সংস্কার নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে গঠিত কমিটিকে দ্রুত প্রতিবেদন দেয়ার দাবি জানানো হয়েছে। গতকাল আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে জোটের বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়া রাজশাহী, সিলেট ও বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ১৪ দলের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয়ভাবে প্রচারণা শুরু হচ্ছে রোববার (২২শে জুলাই) থেকে। ওইদিন থেকে তিন সিটিতে কেন্দ্রীয় তিন নেতার নেতৃত্বে তিনটি টিম নামবে মাঠে। তিন টিমের মধ্যে সিলেটে সাম্যবাদী দলের দিলীপ বড়ুয়া, বরিশালে জেপি’র শেখ শহিদুল ইসলাম এবং রাজশাহীতে ওয়ার্কার্স পার্টির ফজলে হোসেন বাদশার নেতৃত্বে ১৪ দলের নেতারা নৌকার প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় কাজ করবেন।
এদিকে বৈঠকে ১৪ দলীয় জোটের পরিধি বাড়ানোর প্রস্তাবে শরিক দলগুলো আপত্তি জানিয়েছে। শরিক দলগুলোর নেতাদের মতে, ১৪ দলীয় জোট সমপ্রসারণের প্রয়োজন নেই। কারণ এটি একটি আদর্শিক জোট। ভোটের স্বার্থে জোটের পরিধি বাড়ালে আদর্শিক ‘স্পিরিট’ নষ্ট হবে। তবে ভোটকেন্দ্রিক সাময়িক বোঝা-পড়ায় কোনও দলের সঙ্গে গেলে সে জন্য নির্বাচনী জোট মহাজোটই যথেষ্ট বলে মনে করছেন তারা। বৈঠকে জোট সমপ্রসারণের প্রস্তাব উঠলে এতে আপত্তি তোলেন সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, ওয়ার্কাস পার্টির পলিটব্যুারোর সদস্য আনিসুর রহমান মল্লিক, বাসদ একাংশের নেতা রেজাউর রহমানসহ কয়েকজন শরিক নেতা। জোটে অন্তর্ভুক্ত হতে আগ্রহী এমন কয়েকটি দলের সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা জানান ১৪ দলীয় জোটের মুখপাত্র ও আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। ওই বৈঠকে ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার নেতৃত্বাধীন তৃণমূল বিএনপিসহ আরও দল থাকবে বলে জানা গেছে। তার এই প্রস্তাবের পরই শরিক দলের নেতারা জোট সমপ্রসারণের ব্যাপারে আপত্তি তোলেন।
এদিকে বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে ১৪ দলীয় জোটের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম বলেন, একটি স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে একটি মহল একের পর এক চক্রান্ত করছে। কোনও ইস্যু না পেয়ে কোটা সংস্কার ইস্যু নিয়ে তারা মাঠে নেমেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তারুণ্যকে উৎসাহিত করার জন্য কোটার ব্যাপারটি নিয়ে তিনি কথা বলেছিলেন, এটা আপনারা জানেন। প্রধানমন্ত্রী যেহেতু একটি পর্যায়ে সংসদে বলেছিলেন কোটা রাখবেন না, তারপরেও তিনি একটি কমিটি করে দিয়েছেন কেবিনেট সচিবের নেতৃত্বে। সেই কমিটি কাজ করছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, কোটা সিস্টেম আমাদের সংবিধানে আছে। ১৪ দলের  পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর ওপর আস্থা রাখার আহ্বান জানাচ্ছি। তিনি অনগ্রসর মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। কেবিনেট সেক্রেটারির নেতৃত্বে কমিটি কাজ করছে, আপনারা ধৈর্য ধরুন। দীর্ঘদিনের একটা সিস্টেমকে বদল করে আনতে একটু সময় লাগে। আমরা কেবিনেট সচিবের নেতৃত্বে গঠিত কমিটিকে ১৪ দলের পক্ষ থেকে অনুরোধ করতে চাই, দ্রুত আপনাদের কাজটি শেষ করে দ্রুততার সঙ্গে প্রতিবেদন দিন। কেউ যেন সুযোগ না নিতে পারে, কেউ যেন ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে না পারে। সংবাদ সম্মেলন শেষে জাতীয় পার্টি-জেপি’র সাধারণ সম্পাদক শেখ শহীদুল ইসলাম বলেন, আমরা কোটা সংস্কারের বিষয়টির যৌক্তিক সমাধান চাই। আমরা আশা করি সমাধান পেয়ে যাবো। বিষয়টি নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। বিএনপি নির্বাচন ভণ্ডুলের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত- দাবি করে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, নির্বাচন সামনে আসছে। সে ক্ষেত্রে সংবিধান অনুযায়ী আগামী ডিসেম্বর মাসে নির্বাচন কমিশনের নির্ধারিত তারিখে বাংলাদেশে নির্বাচন হবে। আমরা আশা করি দেশের সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। এমনকি বিএনপি নির্বাচনে আসুক- সেটা আমরা চাই। কাউকে নির্বাচন থেকে সরানোর কোনও চিন্তা আমাদের নেই। আমরা চাই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নির্বাচনে জয় আসুক। এখন তারাই চক্রান্ত করছে নির্বাচনকে ভণ্ডুল করার জন্য। সংবিধানেই আছে কিভাবে নির্বাচন হবে। সমস্ত গণতান্ত্রিক দেশে নির্বাচিত সরকারের অধীনেই নির্বাচন হয়। একইভাবে আমাদের দেশেও শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচন হবে। তাই আমরা বলবো কোনও ধরনের চক্রান্ত না করে নির্বাচনে আসুন, জনগণের রায় গ্রহণ করুন। নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে বিএনপি’র সঙ্গে কোনও আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা আছে কিনা জানতে চাইলে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, কোনও রাজনৈতিক দল কিভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে এটা তাদের বিষয়। এটা নিয়ে আমাদের সঙ্গে কারও কোনও আলোচনা হয়নি। বিএনপি নির্বাচনে আসবে বলে আমরা আশা করছি। বিএনপি’র সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে ভবিষ্যতে আলোচনার কোনও প্রশ্নই উঠে না। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, জাসদের একাংশের সভাপতি শরিফ নুরুল আম্বিয়া, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, উপ-দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status