দেশ বিদেশ

অভিজ্ঞতা বিনিময় সভায় বক্তারা

বাল্যবিয়ে বন্ধে পাঁচ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা জরুরি

স্টাফ রিপোর্টার

১৭ জুলাই ২০১৮, মঙ্গলবার, ৯:৫১ পূর্বাহ্ন

নারীর ক্ষমতায়ন, শিক্ষা-স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন উন্নয়ন সূচকে বাংলাদেশ আশাব্যঞ্জক উন্নতি করলেও এখনো বাল্যবিয়ে বন্ধে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য আসেনি। বিশেষত দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে বেশি বাল্যবিয়ে সংঘটিত হয় বাংলাদেশে। আর এই ক্ষেত্রে প্রধানত পাঁচটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এগুলো হচ্ছে- সিদ্ধান্ত গ্রহণে মেয়েদের মতামতকে কম গুরুত্ব দেয়া, প্রত্যন্ত অঞ্চলে তথ্য প্রাপ্তির সীমিত সুযোগ, স্থানীয় উন্নয়নে মেয়েদের অংশগ্রহণ কম থাকা, পারিবারিক ও সামাজিক বাধা এবং সর্বোপরি মেয়েদের ভবিষ্যৎ কর্মসংস্থানের কথা অভিভাবকগণের বিবেচনায় না আনার প্রবণতা। এই কয়েকটি চ্যালেঞ্জ  মোকাবিলা করলে বাল্যবিয়ে বন্ধে দেশে আশানুরূপ সাফল্য আসতে পারে। গতকাল রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে ‘তারুণ্যের শক্তি: আমরাই পারি বাল্যবিবাহ রুখে দিতে’ প্রকল্পের অভিজ্ঞতা বিনিময় সভায় বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন। গার্লস নট ব্রাইডস-এর আয়োজনে এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির সমন্বয়ক ও ব্র্যাকের পরিচালক আন্না মিনজ। সভায় প্রকল্প মূল্যায়ন গবেষণায় প্রাপ্ত শিক্ষণ ও সীমাবদ্ধতা ও সুপারিশসমূহ তুলে ধরেন ব্র্যাকের জেন্ডার জাস্টিস অ্যান্ড ডাইভারসিটি কর্মসূচির প্রধান হাবিবুর রহমান ও সংস্থাটির একই কর্মসূচির ব্যবস্থাপক দিলরুবা নাসরীন। আয়োজকরা জানান, ২০১৩ সালের বিবিএস কর্তৃক মাল্টিপল ইন্ডিকেটর ক্লাসটার সার্ভের পরিসংখ্যান অনুযায়ী- রংপুর বিভাগে ১৮ বছরের আগে বিবাহ সংঘটনের হার ৭৬ শতাংশ, যা সবচেয়ে বেশি। আর বরিশাল বিভাগে এই হার ৭০ শতাংশ, যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এই প্রেক্ষাপটে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে সমমনা কয়েকটি সংগঠনের উদ্যোগে গঠিত গার্লস নট ব্রাইডস বাংলাদেশ জোটের পক্ষ থেকে এই জেলা দুটিতে একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়। দুই বছর মেয়াদি প্রকল্পটির বাস্তবায়ন শেষ হবে ২০১৮ সালের ২৪শে জুলাই। প্রকল্পের প্রায় শেষ সময়ে এর কার্যকারিতা ও প্রাপ্ত অভিজ্ঞতাসমূহ তুলে ধরতে এই সভার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রকল্পটি মূলত প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়ে মেয়েদের ক্ষমতায়নের মাধ্যমে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধকরণে ভূমিকা রাখে। আর এটি বাস্তবায়নে জোটের সচিবালয়ের দায়িত্বপালনকারী সংস্থা ব্র্যাকের নেতৃত্বে সদস্য সংস্থাসমূহ সক্রিয়ভাবে যুক্ত থাকে। রংপুরের মিঠাপুকুর, গঙ্গাচড়া, তারাগঞ্জ, পীরগাছা ও কাউনিয়া এবং বরিশালের আগৈলঝরা, মুলাদি, হিজলা, বাকেরগঞ্জ ও মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলায় এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। সভায় আন্না মিনজ বলেন, অভিজ্ঞতায় দেখা যায় কোনো এলাকায় অভিভাবক, জনপ্রতিনিধি বা সুশীল সমাজ যাদেরই সাক্ষাৎকার নেয়া হউক না কেন, তারা দাবি করেন নিজেদের এলাকায় বাল্যবিয়ে হয় না, বরং তাদের এলাকা থেকে পালিয়ে অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলেমেয়েরা অন্য এলাকায় বিয়ে করেন। হাবিবুর রহমান বলেন, বাল্যবিয়ে এখন মানবাধিকার লঙ্ঘনও বটে। আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে, সরকারি- বেসরকারি ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সুশীল সমাজসহ সবাই এক প্ল্যাটফরমে কাজ করলে বাল্যবিয়ে বন্ধে কার্যকর ফলাফল আসে। সচেতনতাসহ বিভিন্ন কারণে তখন যুবদের ঐক্যবদ্ধ শক্তির পাশাপাশি স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে নেটওয়ার্কিং তৈরি হয়। ব্র্যাকের জেন্ডার জাস্টিস অ্যান্ড ডাইভারসিটি কর্মসূচির সমন্বয়কারী নিশাত সুলতানার সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়ক কনসালট্যান্ট কাজী আরিফুল হকসহ সরকারি-বেসরকারি ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ। এতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা যুব, ধর্মীয় নেতা, কিশোর-কিশোরীসহ প্রায় ১০০ জন অংশগ্রহণ করেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status