বাংলারজমিন

টাকার বিনিময়ে ধর্ষণ মামলা আপস চেয়ারম্যান-মেম্বার কারাগারে

বগুড়া প্রতিনিধি

১৭ জুলাই ২০১৮, মঙ্গলবার, ৯:৪৮ পূর্বাহ্ন


বগুড়ায় একটি ধর্ষণ মামলা টাকার বিনিময়ে আপস করানোর ঘটনায় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং মেম্বারকে কারাগারে দিয়েছে আদালত। তারা হলেন- শিবগঞ্জ উপজেলার রায়নগর ইউপি চেয়ারম্যান ফিরোজ আহম্মেদ রিজু ও একই ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ড সদস্য মোস্তফা কামাল তোতা। রোববার বিকালে বগুড়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক আব্দুর রহিম তাদেরকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
মামলার সূত্রে জানা গেছে, শিবগঞ্জ উপজেলার রায়নগর ইউনিয়নের টেপাগাড়ী গ্রামের মৃত আশরাফ আলীর মেয়ের সঙ্গে আইএফআইসি ব্যাংক বগুড়ার সাতমাথা শাখায় কর্মরত কর্মকর্তা নন্দীগ্রাম উপজেলার গোচন সরদার পাড়ার ফরেজ উদ্দিন মাস্টারের ছেলে সামছুর রহমান স্বপনের সঙ্গে পরিচয় ঘটে। তিনি ঐ নারীকে ব্যাংক থেকে ক্ষুদ্র ঋণ উত্তোলনে সহায়তার আশ্বাস দিয়ে সখ্য গড়ে তোলেন। এক পর্যায়ে ওই মেয়ের সঙ্গে প্রেম ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে তুলে তার সঙ্গে দৈহিক মেলামেশার প্রস্তাব দিলে মেয়েটি রাজি হয়নি। ফলে মেয়েটিকে বিশ্বাস অর্জন করাতে তাকে বিয়ে করার শপথ করে দৈহিক মেলামেশায় রাজি করে। এভাবে তাকে বিয়ে করার আশ্বাস দিয়ে তার সঙ্গে একাধিকবার দৈহিক মেলামেশায় মেয়েটি গর্ভবতী হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় মেয়েটি তাকে বিয়ের কথা বললে প্রেমিক স্বপন তাকে জানায় গর্ভের সন্তান নষ্ট না করলে শরীয়তসম্মত বিয়ে করা যাবে না। এবং মেয়েটিকে সন্তান নষ্ট করার ওষুধ এনে দেয় এবং বলে এগুলো খেলে তার গর্ভের সন্তান নষ্ট হয়ে যাবে। এরপর আমরা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হবো। এরপর গত ২৫শে সেপ্টেম্বর স্বপন পুনরায় মেয়েটির সঙ্গে দৈহিক মেলামেশা করতে চাইলে মেয়েটি বিয়ে না করা পর্যন্ত কোনো দৈহিক মেলামেশা করা যাবে না বলে জানিয়ে দিলে স্বপন ক্ষিপ্ত হয়ে বলে সে তাকে কোনোদিনই বিয়ে করবে না। এ অবস্থায় মেয়েটি শিবগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে থানার কর্মকর্তা আদালতে মামলা দায়ের করার পরামর্শ প্রদান করেন। পরে মেয়েটি উপায় না দেখে বগুড়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এ ধর্ষণের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করে। ট্রাইব্যুনাল মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য শিবগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার প্রতি নির্দেশ প্রদান করেন। এদিকে স্থানীয় রায়নগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফিরোজ আহম্মেদ রিজু ও একই ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের মেম্বার মোস্তফা কামাল তোতা আপস করে আপসনামায় স্বাক্ষর করে সমাজসেবা কর্মকর্তা আব্দুল মানিকের কাছে দাখিল করেন। সেই মোতাবেক সমাজসেবা কর্মকর্তা আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করলে মেয়েটি আদালতে তদন্ত প্রতিবেদনের প্রতি নারাজি দাখিল করলে ট্রাইব্যুনাল আপসনামায় সাক্ষী হিসেবে স্বাক্ষরকারী ইউপি চেয়ারম্যান ফিরোজ আহম্মেদ রিজু ও ইউপি সদস্য মোস্তফা কামাল তোতাকে তলব করেন। গত রোববার ট্রাইব্যুনালে বিচারকের কাঠগড়ার এলে বিচারক মামলাটি আপসযোগ্য না হওয়া সত্ত্বেও আপসনামায় স্বাক্ষর করার অভিযোগে তাদেরকে মামলার আসামি দেখিয়ে জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ প্রদান করেন। বগুড়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর স্পেশাল পিপি আশেকুর রহমান সুজন জানান, ট্রাইব্যুনালে দাঁড়িয়ে আসামিরা স্বপনের কাছ থেকে সাড়ে ৪ লাখ টাকা আদায় করে আপস মীমাংসার কথা স্বীকার করেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status