বাংলারজমিন

মেঘনার তীররক্ষা বাঁধে আবারো ধস : আতঙ্কে লক্ষাধিক মানুষ

কমলনগর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি

১৭ জুলাই ২০১৮, মঙ্গলবার, ৯:৪৮ পূর্বাহ্ন

কমলনগরে মেঘনার তীর রক্ষা বাঁধে আবারো ধস দেখা দিয়েছে। উপজেলার মাতাব্বরহাট এলাকায় নির্মিত বাঁধের দক্ষিণ অংশে রোববার সকালে এ ধস নামে। আকস্মিক এ ধসে বাঁধটির প্রায় ১০০ মিটার এলাকার নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এতে করে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন এলাকাবাসী। তাদের অভিযোগ, যথাযথভাবে জিও ব্যাগ (বালুভর্তি বিশেষ ব্যাগ) ড্রাম্পিং ও ব্লক স্থাপন না করাসহ নিম্নমানের কাজের কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এর আগেও বাঁধটির বিভিন্ন অংশে কয়েকবার ধস নামে। জানা যায়, ২০১৪ সালে সরকার নদীভাঙন ঠেকাতে লক্ষ্মীপুরের কমলনগর ও রামগতি উপজেলার মেঘনা নদীর তীর রক্ষা বাঁধের জন্য ১৯৮ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। বরাদ্দকৃত টাকায় গত তিন বছরে কমলনগর উপজেলার মাতাব্বরহাট এলাকায় এক কিলোমিটার, রামগতি উপজেলার চর আলেকজান্ডার এলাকায় সাড়ে তিন কিলোমিটার ও রামগতিরহাট এলাকায় এক কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ করা হয়। এর মধ্যে ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ২০১৬ সালে কমলনগর উপজেলার এক কিলোমিটার অংশের কাজ শুরু করে সম্প্রতি তা সম্পন্ন করেন। এর জন্য ব্যয় হয় প্রায় ৪৮ কোটি টাকা। সরেজমিনে গেলে এলাকাবাসী জানান, রোববার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে প্রায় অর্ধশত কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ বাঁধের দক্ষিণ অংশে হাঠাৎ করে ধস নামে। ধসের কারণে বাঁধ ভেঙে ড্রাম্পিং করা জিও ব্যাগ ও ব্লকসহ প্রায় ১০০ মিটার এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। বর্ষার শুরুতেই পানির চাপে বাঁধে এ ভাঙন দেখা দেওয়ায় বাঁধের পুরো অংশই এখন হুমকিতে রয়েছে। যে কারণে, বাঁধের আশপাশের এলাকায় বসবাসকারীদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অনিয়মের কারণেই বাঁধটিতে ধস নেমে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। এর আগেও নির্মাণের শুরু থেকে বাঁধটির বিভিন্ন অংশে কয়েকবার ধস নামে। প্রকল্পের কার্যাদেশ অনুযায়ী নদীর ভিতরে ৪৫ মিটার জিও ব্যাগ ড্রাম্পিং ও যথাযথভাবে ব্লক স্থাপনের কথা থাকলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দায়সারাভাবে কাজটি সম্পন্ন করেন। মো. রিপন, ওমর ফারুক ও আবুল কালামসহ স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, বাঁধটি নির্মাণের শুরু থেকেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন অনিয়ম করে। যথাযথভাবে জিও ব্যাগ ড্রাম্পিং না করে উল্টো নিম্নমানের বালু ও জিও ব্যাগ ব্যবহার করে। এছাড়া নিম্নমানের ব্লক তৈরি কারে তা স্থাপনেও ব্যাপক অনিয়ম করেছে। যে কারণেই বাঁধটির বিভিন্ন অংশে বারবার ধস নামছে বলে তারা অভিযোগ করেন। এদিকে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রজেক্ট ইনচার্জ নুরুল আফসার দাবি করেন, বাঁধ নির্মাণে কোনো অনিয়ম হয়নি। কার্যাদেশ অনুযায়ীই তারা কাজটি সম্পন্ন করেছেন। তবে বর্ষা মৌসুমে উজান থেকে নেমে আসা পানির চাপে বাঁধের ওই অংশে ধস নেমেছে। তিনি বলেন, ‘ধস নামার সঙ্গে সঙ্গেই ওই অংশে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ড্রাম্পিং কর হচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রায় চার হাজার জিও ব্যাগ ড্রাম্পিং করা হয়েছে। বাঁধ রক্ষায় প্রয়োজন অনুযায়ী জিও ব্যাগ ড্রাম্পিং করা হবে।’ লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মুসা জানান, ধসের খবর পেয়ে তিনি তাৎক্ষণিক বাঁধ এলাকা পরিদর্শন করেছেন। বাঁধ রক্ষায় জিও ব্যাগ ড্রাম্পিংসহ প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status