অনলাইন

প্যারিসের রাস্তায় রাস্তায় স্লোগান, ‘আলে লে ব্লু’

নিয়াজ মাহমুদ, ফ্রান্স থেকে

১৬ জুলাই ২০১৮, সোমবার, ৩:১৫ পূর্বাহ্ন

জয়ের উৎসবে নানা রঙে রঙ্গিন রাতের প্যারিস! রাস্তায় রাস্তায় স্লোগান, ‘আলে লে ব্লু’ অর্থাৎ এগিয়ে যাও ফ্রান্স। রাতেই প্যারিস গেট এবং আইফেল টাওয়ারের সামনে গভীর রাত পর্যন্ত জড়ো হয়েছিল লাখো লাখো ফুটবল ভক্ত। জয়ের উৎসবকে স্বরণীয় করে রাখতে বিশেষ আলোক সজ্জাসহ নানা রঙে রাঙিয়ে তোলা হয় আইফেল টাওয়ার ও প্যারিস গেট। তবে কাল প্যারিসে রাত নেমেছিল ঠিকই, নামেনি প্যারিসবাসীর চোখে। বিয়ার-শ্যাম্পেনসহ নানা  ব্রান্ডের পানীয় খেয়ে  নেচে গেয়ে উৎসব করে নির্ঘুম রাত কাটিয়েছন তারা। এ-এক অন্যরকম প্যারিস। কোনো যান্ত্রিকতা নেই, কোনো বিরতি নেই, শুধু উৎসব আর আনন্দ।
রাত নেমে আসার সঙ্গে-সঙ্গে আইফেল টাওয়ারে ১৯৯৮-২০১৮ ফ্লাশ ভেসে ওঠে। এর মধ্য দিয়ে বোঝানো হয় ফ্রান্স দু’বার বিশ্বকাপ জিতেছে। আর বিশষ প্রজেক্টরের মাধ্যমে প্যারিস গেটে  ফ্রান্সের লোগো মুরগি, জাতীয় পতাকা, দুটি বিশ্বকাপ জয় করায় দুটি স্টার ও বিশ্বকাপ জয়ী  গ্রিজম্যান, পগবাসহ জাতীয় তারকা বীরদের ছবিসহ নাম আলোক সজ্জার মাধ্যমে প্রদর্শন করা হয়। আইফেট টাওয়ারে প্রজেক্টরের মাধ্যমে দেখানো হয় তিন রঙের ফরাসি পতাকা। নীল, সাদা, লাল। ফরাসি বিপ্লবের আদর্শ স্বাধীনতা, সমতা, ভ্রাতৃত্ব ধারণ করে আছে এই তিন রং।  পরিচিত-অপরিচিত যে যাকে কাছে পেয়েছিল, তাকেই জড়িয়ে ধরে, মুখে সমস্বরে আওড়াতে থাকে:
axu armes citoyens
Formey vos bataillons
marchons, marchons, marchons (ফ্রান্সের জাতীয় সংগীত)।
লোকে লোকারণ্য ছিল প্যারিসের প্রতিটি ট্রাম, ট্রেন, মেট্রো, বাস। সবার মুখে মুখে স্লোগান, আলে লে ব্লু  (Alley les blues), ‘এগিয়ে যাও ফ্রান্স।’
তবে প্যারিস ছাড়াও দেশটির বড় বড় শহরে এবং তার আশপাশের  গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে বড় পর্দায় খেলা  দেখানোর ব্যবস্থা করায় সমাগম হয়েছিল হাজার হাজার দর্শক। গুরুত্বপূর্ণ পাবলিক ট্রান্সপোর্ট সার্ভিস সীমিত রেখে বাকিগুলো বন্ধ  করে দেয়ায় উৎসবমুখর মানুষের ঢল নেমেছিল প্যারিসসহ বড় বড় শহরগুলোতে। ফ্রান্সের জাতীয় পতাকা হাতে মোটরবাইক ও ট্যাক্সি চালিয়ে হই হুল্লোড় করেছেন তরুন-তরুণীরা। একইসঙ্গে আতসবাজি ফাটিয়ে উৎসবের ভিন্ন মাত্রা তৈরি করা হয়। গলা ভেঙে গেছে, তবু মুখে on est champion (অন এ চ্যাম্পিয়ন), ‘আমরা চ্যাম্পিয়ন।’ অতিরঞ্জিত উল্লাস করতে গিয়ে অনেক অনাকাঙ্খিত ঘটনাও ঘটেছে। বিশৃঙ্খল আচরণ  ঠেকাতে আগে থেকেই রাস্তায় রাস্তায় মোতায়েন করা হয়েছিল হাজার হাজার দাঙ্গা পুলিশ। পুলিশের সঙ্গে আনন্দ উদযাপনকারীদের সংঘর্ষ হয়েছে দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর লিয়নে।
লিয়নের বাসিন্দা বাংলাদেশি আলী সিরাজ বেলকুতে বড় পর্দায় খেলা দেখেন। তিনি বলেন, আমি ১০ বছর ফ্রান্সে থাকি। এমন সুন্দর উৎসব কোনদিন দেখিনি। তবে রাত বাড়ার সঙ্গে-সঙ্গে অর্থাৎ সাড়ে ১১টার দিকে জড়ো হওয়া লোকদের গ্যাস ছুড়ে সরিয়ে দেয় পুলিশ। ওদিকে ফ্রান্সের সাপ্তাহিক ‘জুর্নাল দ্য দিমশে’ বিশ্বকাপ ফাইনাল নিয়ে প্রকাশিত এক আগাম জরিপ রিপোর্টে বলা হয়েছিল শতকরা ৮৪ ভাগ ফরাসির ধারণা ছিল এবার ফাইনালে  ক্রোয়েশিয়াকে হারাবে ফ্রান্স। আর যারা নিয়মিত ফুটবল দেখেন বা ভালবাসেন তাদের মধ্যে এ হার ছিল শতকরা  ৯০ ভাগের বেশি। তবে উটের গণনায় পিছিয়ে ছিল ফ্রান্স। পশু উটের গণনা ভুল প্রমাণিত হলেও ফুটবল বোদ্ধা ও পত্রিকার জরিপ রিপোর্ট সত্যি হয়েছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status