প্রথম পাতা

দুই শিক্ষার্থীকে ছাত্রলীগের নির্যাতন

ফেসবুকে ছাত্রীর মর্মস্পর্শী বর্ণনা

স্টাফ রিপোর্টার

১৬ জুলাই ২০১৮, সোমবার, ১১:১৬ পূর্বাহ্ন

শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে হামলার শিকার হন দুই শিক্ষার্থী। তাদের একজন রোকেয়া গাজী লিনা। নিজের ফেসবুকে দেয়া স্ট্যাটাসে তিনি ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন। হামলাকারীরা তাকে এবং তার সহপাঠীকে হেনস্থা ও মারধরের কথা উল্লেখ করেন। এদিকে  দুই শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৩ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তারা হলেন সিফাত উল্লাহ, মোহাম্মদ আল ইমরান ও মাহমুদুর রহমান। এ ৩ জনই ছাত্রলীগ কর্মী। নিচে তার ফেসবুক স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো।

১৪ই জুলাই, ২০১৮। সময়: ৫:৩০। স্থান: রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ের সামনে আমি আর আমার বন্ধু আসাদ রিকশার জন্য সূর্য সেন হলমুখী রোড থেকে রেজিস্ট্রার বিল্ডিং গেট-এর দিকে যাচ্ছি। ঠিক তখন সামনে থেকে আগত ১০-১২ জন ছেলে আমাদের পথ আটকায়। হকচকিয়ে গেলেও আমরা দাঁড়ালাম। প্রথমে একটা ছেলে ক্ষিপ্র ভঙ্গিতে এসে জানতে চাইলো আমরা এই ক্যাম্পাসের কি না। বললাম হ্যাঁ, আমরা দুজনেই এ ক্যাম্পাসের।

আসাদকে তখন বলল কোন ইয়ার তুই, কোন হলে থাকিস? আমি বললাম আমরা অর্থনীতি ৩য় বর্ষের। ইভেন আমি আমার হল আইডি কার্ড দেখিয়ে বললাম ভদ্রভাবে কথা বলো। কোনো তোয়াক্কা না করেই আবারো আসাদকে বলল, তুই কোন হলের। আইডি কার্ড দেখা। আসাদ পোলাইটলি জানতে চাইল তোমরা কোন ইয়ার, কোন হল, কেন চার্জ করছো এভাবে? তারা নিরুত্তর এবং মারমুখী ছিল তখন।

আসাদ আইডি কার্ডটা দেখানোর পর আইডি কার্ডটা দিয়েই ছেলেটা বলল ‘প্রথম বর্ষের ছেলে কি তোরে চার্জ করতে পারে না? ১ম বর্ষের পোলাপানের হাতে মাইর খাইতে খুব মজা লাগব’ বলেই ঠাস করে আসাদকে থাপ্পড় মারে। আমি যখন জানতে চাই, কী করলে এটা; তখন বাকিরাও চড়াও হয় এবং আমাকেসহ হ্যারেস করে, ফেরাতে গেলে। যখন আসাদকে এলোপাথাড়িভাবে মারতে থাকে; আমি আমার এক পরিচিত বন্ধুকে বলি আসতে। আমাদের অপরিচিত কয়েকটা ছেলে বাজেভাবে আক্রমণ করছে।

প্রশ্ন থাকতে পারে প্রক্টোরিয়াল টিমকে কেন কল দিলাম না। প্রথমত আমার কাছে নাম্বার ছিল না। আর তারা তখনই খুব জোরে হেটে সূর্য সেন হলের গেটের ভেতরে চলে যায়। আর আমরা ঘটনার আকস্মিকতায় মেন্টালি শকড ছিলাম। আসাদ তাদের পেছন পেছন হল গেটের ভেতরে গিয়ে যখন জানতে চাইলো ‘আমি এই ক্যাম্পাসের পরিচয় দেয়ার পর, আইডি কার্ড দেখানোর পরও আমাদের গায়ে কেন হাত তুললে তোমরা?

তখন তারা মোটেই অনুতপ্ত না হয়ে বলছে ‘তুই হলের ভেতরে আসলি কেন আবার?’ আসাদকে আবার মারতে আসে। তখন ওরা ১৫-২০ জন। অনেক মানুষই ছিল। মজা নিচ্ছিল না ঘটনার আকস্মিকতায় তারাও চুপ জানি না! আমি তখন আসাদকে ফিরিয়ে নিয়ে আসার সময় ওরা গেস্ট রুম থেকে স্ট্যাম্প, কাঠ নিয়ে আসে মারতে। আসাদের মাথায়, মুখে, কাঁধে, পায়ে সমস্ত শরীরে বাজেভাবে আঘাত করা হয়েছে। আমি বাধা দিতে যাওয়ায় আমার গায়েও লাঠির আঘাত, তাদের জোরাজুরি আসাদকে আলাদাভাবে নিয়ে মারার জন্য। আমার পায়ে জুতা দিয়ে পিশে দেয়ায় আমার নখ উঠে গেসে। ব্লিডিং হচ্ছিল।

তখনও তারা থামে নাই। এফবিএস, সূর্য সেন ক্যাফেটেরিয়া- এই তিন রাস্তার মোড়ে এসে আসাদের হলের কিছু পরিচিত মানুষ জন আসতে দেখায় তারা চলে যায়। কিন্তু ফিরে আবার মারমুখী হয়ে হুমকি দেয়। আমরা দুজনেই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। নিজের ক্যাম্পাসে এরকম #শারীরিক #মানসিক #হ্যারেসমেন্ট #হামলার শিকার হব সেটা মেনে নেয়া অসম্ভব। আজকে পরিচয়পত্র দেখানোর পর তাদের সিনিয়র জানার পরও হ্যারেস করল। আমার যে জুনিয়র বোন বা ভাই মাত্রই ক্যাম্পাসে আসল তাদের নিরাপত্তা কী তাহলে? আমার ক্যাম্পাসে আমি অতর্কিত হামলার শিকার হব কেন? আমরা সূর্য সেন হলের প্রভোস্ট স্যারের সঙ্গে কথা বলেছি। স্যার আমাদেরকে আগামী কাল লিখিত দিতে বলেছেন এবং প্রক্টোরিয়াল টিম ও আমাদের ন্যায্য বিচারের আশ্বাস দিয়েছেন এই পর্যন্ত। আমরা লিখিত দিব।
আসাদের শারীরিক অবস্থা তেমন ভালো না। আমার পায়ে ড্রেসিং করতে হয়েছে। মাথা আর ঘাড়ে প্রচণ্ড ব্যথা। অনেকের অনেক প্রশ্ন মনে জাগছে বা বিষয়টার সঙ্গে অন্য কোনো কিছু যুক্ত কি না জানতে চাইছে।
 # i_am_clearing_on_this_point
আমাদের যারা চিনেন তারা নির্দ্বিধায় বলতে পারবেন আমাদের এই ঘটনার পেছনে অন্য কোনো কিছুর সংশ্লিষ্টতা নেই। এটা সম্পূর্ণটাই আমাদের অসম্মান করা হয়েছ we have enough honorable and clean image in our university to senior, junior, classmates. so,it was just unexpected hit from some morally destroyed boys. নিজ মুখে নিজ ক্যাম্পাসের ভয়াল বিভীষিকাময় ঘটনার কথা বর্ণনা করতে যেয়ে আজ আমি ঢাবিয়ান বলতেই এক অসামান্য লজ্জায় কুঁকড়ে যাচ্ছি।
I AM IN TRAUMA. BUT I HOPE FOR JUSTICE BY LEGAL APPROACH. ONLY THEN I WILL TAKE BREATHE IN PEACE. IT&_S NOW A QUESTION OF DHAKA UNIVERSITY&_S SELF RESPECT. NO ONE CAN DENY THAT.
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status